Home / সারাদেশ / এসএসসি’র ফল চ্যালেঞ্জ করেছে ২ লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থী
Comilla Education Board
প্রতীকী ছবি

এসএসসি’র ফল চ্যালেঞ্জ করেছে ২ লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থী

এসএসসিতে ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে ২ লাখ ২১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তারা সবাই প্রাপ্ত ফলাফল পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেছে ।আবেদনকারীরা ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫১৬টি পত্রের ফল চ্যালেঞ্জ করেছে।

সদ্য প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হয়ে ৮টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডের শিক্ষার্থীরা এ আবেদন করেছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগ আবেদন পড়েছে গণিত ও ইংরেজিতে। তারপরও ১ বা ২ নম্বরের জন্য পরবর্তী গ্রেড পায়নি এসব শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।

৬ মে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের ফল চ্যালেঞ্জ করার শীর্ষে বরাবরের মতো এবারও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আর বিষয়ভিত্তিক আবেদনের শীর্ষে গণিত ও ইংরেজি। এ দুটি বিষয়ে বেশি ফেল করায় এবার পাসের হার বিগত বছরের তুলনায় দু’ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমেছে।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বোর্ডে ৬৩ হাজার ৪০০ পরীক্ষার্থী এক লাখ ৪১ হাজার বিষয়ে ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করেছে। এ বোর্ডের আবেদনে শীর্ষে গণিত ও ইংরেজি।

রাজশাহী বোর্ডে ২১ হাজার ১৭৬ শিক্ষার্থী ৪০ হাজার ৯৬৮টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে সাত হাজার ২৬২ জন, ইংরেজি ১ম পত্রে তিন হাজার ২৪১ ও দ্বিতীয় পত্রে দুই হাজার ৮৬৪ জন।

দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৮০৮ জন শিক্ষার্থী ৩৪ হাজার ৮৫৩টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডেও আবেদনের শীর্ষে গণিত। এ বিষয়ে আবেদনের সংখ্যা ছয় হাজার ২০৬টি। ইংরেজি ১ম পত্রে তিন হাজার ১৯৫ ও দ্বিতীয় পত্রে দুই হাজার ৯০৪ জন আবেদন করেছেন।

কুমিল্লা বোর্ডে ১৬ হাজার ৮৩৭ জন পরীক্ষার্থী ৩৬ হাজার ৭৮৪টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে চার হাজার ৯১১ জন। ইংরেজি ১ম পত্রে চার হাজার ৫৫২ জন ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার সাত জন।

বরিশাল বোর্ডে ১৬ হাজার ৬৭৩ শিক্ষার্থী ২২ হাজার ১৫২ বিষয়ে আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে চার হাজার ৯১১জন। ইংরেজি ১ম পত্রে চার হাজার ৫৫২ ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার সাত জন আবেদন করেছে।

চট্টগ্রাম বোর্ডে ২৩ হাজার ৩৮০ জন শিক্ষার্থী ৫৩ হাজার ৫৩০টি বিষয়ে আবেদন করেছে। এ বোর্ডে গণিতে সাত হাজার ৫৫ জন। ইংরেজি ১ম পত্রে পাঁচ হাজার ৭৮২ ও দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার ৬৫৪ জন আবেদন করেছে।

সিলেট বোর্ডে ১০ হাজার ৬৭৮ শিক্ষার্থী ২০ হাজার ৪৫৭টি আবেদন করেছে। এর মধ্যে গণিতে পাঁচ হাজার ৯৫ জন, ইংরেজিতে তিন হাজার ৫০৩ জন আবেদন করেছে। যশোর বোর্ডে মোট আবেদন করেছে ৩৮ হাজার ৫৩ জন, এর মধ্যে গণিতে ৫ হাজার ৫৭৯, ইংরেজি ১ম পত্রে ৪ হাজার ২জন ও দ্বিতীয় পত্রে ৩ হাজার ৬৮০।

মাদরাসা বোর্ডে আবেদন করেছে ৩৫ হাজার ৮৮৯টি পত্রের মধ্যে আবেদনকারী ২১ হাজার ৭৫৬ জন। এ বোর্ডে গণিতে আবেদন ১১ হাজার ৭৯৩ এবং ইংরেজিতে ১৮৪৭।

গত বছর ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে দুই লাখ ৬৬ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছিল। কারিগরি বোর্ডের মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৬৪৪। তারা ২৪ হাজার বেশি পত্রের জন্য আবেদন করছেন।

এ ব্যাপারে আন্তঃবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক বলেন,‘ গত বছরের চেয়ে এবার পাসের হার কমেছে তবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে এজন্য এবার আবেদনের সংখ্যাও বেড়েছে।

তিনি বলেন, এবার গণিত ও ইংরেজিতে পাসের হার কমায় এ দু’বিষয়ে আবেদনকারী সংখ্যা বেড়েছে, একই সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীর ১ বা ২ নম্বরের জন্য পরবর্তীতে গ্রেড পায়নি তারাও প্রচুর আবেদন করেছে। এসব কারণে এবার আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। তবে এটা উদ্বেগের কিছু না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সচেতন হয়েছে। এটা ভুল দিক।’

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা তারা আরো ভালো ফলাফল করতো। এ চিন্তা ভাবনা থেকেই তারা আবেদন করে। ’

বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা জানিয়েছেন, ‘পুনঃনিরীক্ষণে সাধারণত চারটি বিষয় দেখা হয়। এগুলো হলো- উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেয়া হয়েছে কী না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কী না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কী না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটে বৃত্ত ভরাট সঠিক ভাবে করা হয়েছে কিনা।

এসব বিষয় পরীক্ষা করেই পুনঃনিরীক্ষার ফল দেয়া হয়। তার মানে কোনো শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায় মূল্যায়ন হয় না। এরপরও এত শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তনের আবেদন রীতিমত তুঘলকি কাণ্ড আখ্যায়িত করে শিক্ষাবিদরা বলেন, বোর্ডের প্রশ্ন পদ্ধতি ও খাতা দেখার নানা ত্রুটির কারণে দিন দিন ফল চ্যালেঞ্জ করার সংখ্যা বাড়ছে।

একই সঙ্গে এবার নতুন পদ্ধতিতে খাতা মূল্যায়ন এবং নম্বর দেখার সুযোগ পাওয়ায় এ সংখ্যা বেড়েছে। গত ৬ই মে প্রকাশিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গত নয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পাস করেছে।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এবার ১০ টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন। শতকরা পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন।

বার্তা কক্ষ strong>
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৬:১০ পিএম, ১৫ মে ২০১৮,বুধবার
এজি

Leave a Reply