Home / জাতীয় / মাশরাফির অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত শীঘ্রই
Mashrafe

মাশরাফির অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত শীঘ্রই

বিষয়টি আপাতত অনেকটা এ রকমই হয়ে আছে যে, যার বিয়ে তার খোঁজ নেই, ওদিকে ঘুম নেই পাড়া-পড়শিরও! আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে মাশরাফি বিন মর্তুজার অবসর পরিকল্পনা জানা না গেলেও তাঁকে বিদায় দেওয়ার সম্ভাব্য আয়োজনও জানতে বাকি নেই কারো!

সে আয়োজনের জন্য সেপ্টেম্বরে জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশে আসার নিশ্চয়তার দরকার ছিল। আফগানিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হতেই আফ্রিকান দলটির সঙ্গে একটি ওয়ানডে আয়োজনের পরিকল্পনাও হয়ে গেছে। যেটির মাধ্যমে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ককে স্মরণীয় বিদায় দেওয়ার সে রূপরেখায় মাশরাফির সম্মতি আছে কি না, সেটিই এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় কৌতূহল জাগিয়ে রাখছে। তাঁর সঙ্গে যে এখনো এ বিষয়ে বিসিবির কোনো আলাপই হয়নি।

তবে সে আলাপ হবে শিগগিরই। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করতে এসে সাংবাদিকদের কাল সেটিও নিশ্চিত করেছেন বিসিবি সভাপতি। এদিকে আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ও ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ সামনে রেখে ১৮ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া অনুশীলন শিবিরের দলও ঘোষিত হচ্ছে আজ। ৩৬ জন ক্রিকেটারের থাকার কথা এই শিবিরে। যাঁদের একজন হওয়ার কথা মাশরাফিরও। কিন্তু আলাপের আগেই তাঁকে ঘিরে বিসিবির পরিকল্পনাও ধাক্কা খেয়েছে কিছুটা। কারণ অনুশীলন শিবিরের দল ৩৬ থেকে হয়ে গেছে ৩৫ জনের। মাশরাফির অনুরোধেই তাঁকে বাইরে রেখে শুরু হচ্ছে অনুশীলন শিবির।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন গতকাল সন্ধ্যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা প্রথমে মাশরাফিকে রেখেছিলাম। কিন্তু পুরোপুরি ফিট নয় জানিয়ে অনুরোধ করেছিল, ওর নামটি যেন রাখা না হয়। আমরাও তাই ওর নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি।’

সংবাদমাধ্যমে তাঁর অবসর নিয়ে চর্চায় বিসিবির পরিকল্পনা জেনে থাকবেন মাশরাফি নিজেও। আর ২০০৯ সালের পর থেকে আর টেস্ট না খেলা এই পেসার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকেও বিদায় জানিয়েছেন সেই ২০১৭-র এপ্রিলে। খেলার মধ্যে খেলেন শুধু ওয়ানডেই। কাজেই একমাত্র টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির সিরিজের অনুশীলন শিবিরে তাঁকে রাখা যে সম্ভাব্য বিদায়ের আগে নিজেকে তৈরি রাখতেই,

সেটি বুঝতে কারোরই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া ২০২০ সালের মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফরের আগে ওয়ানডে খেলার কোনো সূচি নেই বাংলাদেশের। অথচ বিসিবি সভাপতি বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ডে বসেই বলে এসেছিলেন, দেশের মাটিতে সিরিজ আয়োজন করে বিদায় দেওয়া হবে মাশরাফিকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডে দিয়েই সে আনুষ্ঠানিকতা সারার পরিকল্পনা যখন চলছে, তখন মাশরাফিও অনুশীলন শিবির থেকে নিজের নাম তুলে নিয়ে অবসর বিষয়ে রহস্য আরো বাড়িয়েছেন।

বিসিবির সঙ্গে আলাপেই অবশ্য সেই রহস্যের জট খুলে যাওয়ার কথা। হ্যাঁ অথবা না, কিছু একটা নিশ্চয়ই বলবেন। সেটি জানতেই মাশরাফির সঙ্গে দিন চারেকের মধ্যে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন নাজমুল। টানা দুই বিশ্বকাপে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়কের অবস্থান জানা হয়নি বলেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র ওয়ানডের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণায় যাচ্ছে না বিসিবি। মাশরাফির সম্মতি পেলেই হয়তো আসতে পারে সেই ঘোষণা। তার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা। মাশরাফির সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ সারবেন জানিয়ে কাল নাজমুল বলেছেন, ‘ও নিজে এ বিষয়ে (অবসর ভাবনা) কী ভাবছে, সেটি তো আমরা এখনো জানি না।’ জানার জন্য অচিরেই বসবেন বলেও জানালেন বিসিবি সভাপতি, ‘ও ঈদ করে আসুক (নড়াইল থেকে)।

এলেই আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে ওর সঙ্গে বসতে পারব বলে আশা করছি। তখনই ওর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হবে।’ যদিও সেই বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে থেকেই বিশেষ করে নিজের অবসর পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছে মাশরাফিকে। প্রশ্নটি আরো উচ্চকিত হয়েছে বিশ্বকাপে ফর্মহীন হয়ে পড়ায়।

লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন কি না, তা নিয়ে কত জল্পনা-কল্পনা! তাতে জল ঢেলে দেওয়া মাশরাফি হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগের দিন সন্ধ্যায় ছিটকে পড়ার পর এ বিষয়ে নীরবই থেকেছেন। বিসিবির সঙ্গে আলাপে সেই নীরবতা নিশ্চিতভাবেই ভাঙবেন। এর আগ পর্যন্ত তাঁর খোঁজ না থাকলেও আয়োজনের তোড়জোড় কিন্তু আছেই!

বার্তা কক্ষ, ১৬ আগস্ট ২০১৯