Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে একই ফ্যানে ঝুলছিলো মা ও দুই শিশু কন্যার মরদেহ
ফ্যানে

ফরিদগঞ্জে একই ফ্যানে ঝুলছিলো মা ও দুই শিশু কন্যার মরদেহ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গলায় রশি বেঁধে একই ফ্যানে ঝুলে গৃহবধু ও তার দুইজন শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বর ও কনের পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়ে দেখা যায় মৃতদের তাদের দেহ বিছানায় রাখা ছিলো।

গৃহবধুর স্বামী আরিফ হোসেন তাদের নামিয়েছেন বলে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। খবর শুনে কয়েক হাজার উৎসুক জনতার ঢল নামে ওই বাড়িতে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বেলা সাড়ে চার ঘটিকা পর্যন্ত পৃুলিশের এসপি পঙ্কজ দে, থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করছিলেন ও খোঁজ নিচ্ছিলেন।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল)  সকাল আট থেকে দশটার মধ্যে এ  ঘটনা ঘটেছে উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের পূর্ব লাড়ুয়া রাঢ়ি বাড়িতে।

পুলিশ ও দৃই পরিবারের সংশ্লিষ্টজন জানিয়েছেন, গ্রামের রাঢ়ি বাড়ির আরিফ হোসেন (৩৫)। তিনি মার্চ মাসের দুই তারিখে প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরেন। কিছুদিন পর স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীর বিবাদ শুরু হয়। প্রায়শঃই তাদের মধ্যে উচ্চবাচ্য চলতে থাকে। এর এক পর্যায়ে গৃহবধৃ ফাতেমা ও তার দুই শিশু সন্তান আরিফা (৫) ও আরিয়া (২) এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও সংশ্লিষ্টজনরা জানিয়েছেন, অদ্য মঙ্গলবার সকালে গৃহবধু নিজেই এমন কাজ করতে পারে।

গৃহবধু সীমার স্বামী আরিফ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমি বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখেছি আমার স্ত্রী বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বাজার থেকে চালের বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পাই। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ঘরের পেছন দিকের জানালা দিয়ে স্ত্রী এবং বাচ্চাদের ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত দেখতে পাই। তারপর ঘরের দরজা ভেঙ্গে রশি কেটে তাদের লাশ নিচে নামাই। এ সময় আমার চিৎকারে আমার মা-সহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে।

সীমার বাবা মোস্তফা কোতয়াল জানিয়েছেন, মেয়ে ও নাতনীদের মৃত্যুর কথা শুনে ছুটে এসেছি। ৭ বছর পূর্বে আরিফের সাথে সীমার বিয়ে হয়। আরিফ দুবাই প্রবাসী। গত মার্চ মাসের ২ তারিখে সে বাড়িতে আসে। ঈদের দুই দিন পর তার দুবাই ফিরে যাওয়ার কথা।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাহান জানান, আরিফ বিদেশে থাকত। কি কারণে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, জানাতে চাইলে তিনি বলেন, আমি শুনেছি আরিফ পরকীয়ায় আসক্ত ছিলো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন ধারণা করা করে হচ্ছে, দাম্পত্য চরম কলহের জের ধরে দুই শিশু কন্যাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর গৃহবধু নিজে ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি বলেন, ঘটনার প্রকৃত তথ্য অফিসিয়ালি জানতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গৃহবধুর স্বামী আরিফ হোসেন এখনও আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান,৯ এপ্রিল ২০২৪