Home / ইসলাম / সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পর্দার বিধান
পর্দার বিধান

সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পর্দার বিধান

পর্দা মেনে চলা ফরজ। তা শুধামাত্র মহিলাদের জন্যই নয়, বরং পুরুষের জন্যও পর্দা ফরজ। আর এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পর্দার সম্পর্কে কঠোরভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে নবি! আপনি) মুমিনদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নিচু করে এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করে, এটা তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র। তারা যা কিছু করে আল্লাহ সে বিষয়ে অবগত এবং মুমিন নারীদের বলে দিন তারাও যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। তারা যেন স্বাভাবিকভাবে যা প্রকাশিত তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য মাথার কাপড় দিয়ে আবৃত করে রাখে।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩১)

আল্লাহ তাআলা নারীকে পুরুষের চোখে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে সৃষ্টি করেছেন। আবার পুরুষের আর্কষণও নারীর মধ্যে তৈরী করে দিয়েছেন। সে কারণেই ইসলামি শরিয়তের হুকুম অমান্য করে বেপর্দা হওয়া নারী এবং পুরুষের জন্য কোনো ভাবেই বৈধ নয়।

বিশেষ করে আল্লাহ তাআলা নারীদের নিরাপত্তায় পর্দার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সুষ্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হে নারীগণ, তোমরা তোমাদের ঘরের মধ্যে অবস্থান কর। পূর্ববর্তী অন্ধকার যুগের মতো সাজসজ্জা করে পরপুরুষের সম্মুখে বাহির হবে না। নামাজ আদায় কর, জাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ৩৩)

পর্দা পালনকারী নারীরা আল্লাহর রহমত দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নারী গোপনীয় সত্তা, তারা যদি প্রকাশ্যে (বেপর্দা হয়ে লোকালয়ে) বের হয় তবে শয়তান তাদের দিকে উঁকি দিয়ে তাকায়। আর যে নারী তার ঘরের মধ্যে অবস্থান করে (পর্দা পালন করে) সে আল্লাহর রহমতের অধিক নিকটবর্তী থাকে।’(তিরমিজি)

সতর্কতা…

কুরআন ও হাদিসের আলোকে যাদের সঙ্গে পর্দা করা ফরজ তাদের সামনে বেপর্দা হয়ে খোলামেলা পোশাকে যাতায়াত করা বা অবাধে দেখা-সাক্ষাৎ করা হারাম এবং কবিরা গোনাহ।

কেউ কেউ পর্দার বিধানকে ধর্মীয় মনগড়া মতবাদ বলে আখ্যায়িত করা, মনে পর্দা বড় পর্দা, তাছাড়া পর্দা নিজের কাছে এমন কথা বলে পর্দার গুরুত্ব ও তাৎপর্যকে অস্বীকার করে, যা কুরআন ও হাদিসকে অস্বীকার করা বৈ আর কিছুই নয়। শুধু পর্দার খেলাপ নয় বরং ইসলামে এ সব কথা-বার্তা বলাও মারাত্মক অপরাধ।

বেপর্দার সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো প্রতিটি পদে পদে নারীরা হয়রানি হওয়া। ইভটিজিংয়ের স্বীকার হওয়া। পথে-ঘাটে, স্কুল-কলেজে, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব জায়গায় ঘৃণ্য ও নোংরা আচরণ স্বীকার হওয়া এবং অশ্লীল বাক্যবানে জর্জরিত হওয়া।

ফ্যাশনের নামে নারী ও পুরুষকে বেপর্দা করার যে হিড়িক শুরু হয়েছে, তা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য অশান্তির এক মরণ ব্যাধি। মুসলিম উম্মাহর উচিত অশালীন পোশাক পরিহার করে, শালিন পোশাক পরিধান করা। প্রত্যেককেই নিজের আত্ম-সম্মানবোধ এবং সৌন্দর্যের হিফাজত করা।

পরিশেষে…

নারী ও পুরুষের সংযত জীবন-যাপন ব্যক্তি-পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তাইতো আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে সমগ্র মানবকুলকে হুশিয়ার করে দিয়ে ঘোষণা করেছেন, ‘হে মানবকুল তোমরা এ শান্ত পৃথিবীর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি কর না।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং নারী ও পুরুষদের আত্ম-সম্মানবোধ ও মর্যাদা রক্ষায় পর্দার পরিপূর্ণ বিধান পালন করে তাকওয়া অবলম্বন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ায় সুন্দর জীবন এবং পরকালের চিরস্থায়ী সফলতা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ইসলাম ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৮ :৪৬ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৬, শনিবার
এইউ

Leave a Reply