Home / সারাদেশ / অবশেষে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে লাশ দাফন সম্পন্ন
অবশেষে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে লাশ দাফন সম্পন্ন

অবশেষে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে লাশ দাফন সম্পন্ন

কুমিল্লার মুরাদনগরে এক বৃদ্ধের মরদেহ নিয়ে স্বজনদের ৫ ঘন্টা আহাজারিতেও মন গলেনি এক পাষণ্ড ইউপি সদস্যের। ওই ইউপি সদস্য গংদের বাধাঁর মুখে মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে স্বজনরা ৫ ঘন্টা গ্রামের প্রবেশ পথের মাথায় অবস্থান করে। অবশেষে সেনাবাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে মরদেহ দাফন হয়। পরে গাঁ ঢাকা দেয় বাধা দানকারীরা।

ঘটনাটি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ছিলমপুর গ্রামে।

ভূক্তভোগির পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ছিলমপুর গ্রামের মৃত রোসমত আলীর ছেলে নয়ন মিয়া (৬৪) পাশ্ববর্তী দেবিদ্বার উপজেলা সদরে বসবাস করতেন।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নয়ন মিয়া বার্ধক্যজনীত কারণে তার শারিরিক সমস্যা দেখা দিলে শনিবার সকালে তাকে কুমিল্লা শহরের মুন হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকাল ৭টায় সে মারা যায়।

তাকে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করার জন্য পরিবার লোকজনের কাছে মারা যাওয়ার পূর্বেই অছিয়ত করে যান।

অসিয়ত অনুযায়ী কবরস্থ করতে রোববার দুপুর ১টায় এম্বুলেন্স যোগে তার মরদেহ গ্রামে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন।কিন্তুু ইউপি সদস্য বশির আহম্মেদ দিপুর নেতৃত্বে এলাকার বেশকিছু লোক পথিমধ্যে বাঁধা দেয়।তাদের দাবি তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তাই তাকে এই গ্রামে দাফন করতে দেওয়া হবে না।

স্বজনরা অনেক কাকুতি মিনতি করে হাসপাতালের চিকিৎসা পত্র দেখিয়েও তাদেরকে বুঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।

একপর্যায়ে এম্বুলেন্স চালক মরদেহটি রাস্তায় রেখেই চলে গেলে স্বজনদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বাধাঁদানকারীরা গাঁ ঢাকা দেয়।

পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে গার্ড অফ অনার দিয়ে ছিলমপুর উত্তর পাড়া কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তার লাশ দাফন করেন।

ইউপি সদস্য বশির আহম্মেদ দিপুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছিলমপুর গ্রামে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ও ঘৃণিত কাজ। আমি বিষয়টি পরে শুনেছি। এ ধরণের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে সে বিষয়ে আমি সচেষ্ট আছি।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি কোন পক্ষই আমি জানায়নি। পরে শুনেছি সেনাবাহিনীর লোকজন এসে তাকে দাফন করেছে। আমি জানলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিতাম। বর্তমান করোনা ভাইরাস মহামারিতে আমাদেরকে আরো মানবিক ও সামাজিক হতে হবে।

প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,১১মে ২০২০