Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব দক্ষিণ / মতলবে রিক্সা চালকের প্রতারণার ফাঁদে ব্যাংক ও এনজিও!
rin potarona

মতলবে রিক্সা চালকের প্রতারণার ফাঁদে ব্যাংক ও এনজিও!

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার এক রিক্সা চালকের প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন ব্যাংক, এনজিও, সমিতি এবং এলাকার নিরীহ বেশ কিছু মানুষ।

৩ ছেলে বিদেশ ও এলাকায় জায়গা সম্পত্তি দেখিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করার ফাঁদ দেখিয়ে ব্যাংক, এনজিও, সমিতি এবং স্থানীয় বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেন দিনমজুর এক রিক্সা চালক।

তিনি হলেন উপজেলার ঢাঁকিরগাও গ্রামের মৃত হযরত মল্লিকের ছেলে তাফাজ্জল মল্লিক (৬৫)। পেশায় তিনি একজন রিক্সা চালক ছিলেন। উত্তোলনকৃত ঋণের টাকা পরিশোধ না করে তার স্ত্রী, পুত্র,পুত্রবধূসহ স্বপরিবার নিয়ে পালিয়ে রয়েছেন তাফাজ্জল মল্লিক।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাদের জায়গা সম্পত্তি বিক্রি এবং ঋণ করে ৩ ছেলেকে পর্যায়ক্রমে মালোশিয়া পাঠায়। বর্তমানে তার দু ছেলে বিদেশ এবং একজন বাংলাদেশে রয়েছে।

তার ছেলেদের পরামর্শ নিয়ে ঢাকিরগাঁও মৌজার (কাজলী সিনামা হলের পূর্বে মেইন রাস্তার পার্শ্বে) ২৫ শতাংশ জায়গায় ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের জন্য ইসলামী ব্যাংক মতলব শাখা থেকে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন তাফাজ্জল মল্লিক।

এর পর ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন তিনি। একই ভবণ নির্মাণের জন্য তথ্য গোপন করে তাফাজ্জল মল্লিক এবং তার স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূর নাম ব্যবহার করে মতলব শিক্ষিত বেকার সমিতি থেকে ৩ লাখ এবং ব্র্যাক, আশা, উদ্দীপন, সিসিডিএ, গ্রামীণ ব্যাংক, পেইজ, ব্যুরো বাংলাদেশ এবং বাইশপুর গ্রামের (বর্তমানে ঢাকিরগাঁও বসবাস) মোঃ আকতার হোসেনসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে সর্বমোট প্রায় অর্ধকোটি টাকা ঋণ করেন।

এ ছাড়া ইট, বালু, সিমেন্ট, রড, হার্ডওয়ার সামগ্রীর দোকান মালিকরাও কয়েক লক্ষাধিক টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাংক, এনজিও, সমিতিসহ সকল পাওনাদাররাই তাকে খুঁজতে প্রতিনিয়তই তার বাড়ীতে আসছেন।

ইসলামী ব্যাংক মতলব শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, তাফাজ্জল মল্লিক তার জায়গার দলিল জমা রেখে ২০ লক্ষ টাকা হাউজ ঋণ নিয়েছেন। ঋণের কয়েকটি কিস্তি দেওয়ার পর থেকেই তিনি আত্ম গোপণে চলে যান। রীতিমত কিস্তি পরিশোধ না করায় তাকে নোটিশ করা হয়েছে এবং বাড়ীতে ব্যাংকের সাইবোর্ড ঝুলানো হয়েছে।
মতলব শিক্ষিত বেকরা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির ম্যানেজার বলেন, তিনি ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে মাত্র ১ কিস্তির টাকা জমা দিয়েছে। তারপর অফিসের সাথে কোনো যোগাযোগ করছেনা এবং ফোন ও রিসিব করছেনা। ঋণ খেলাপীর জন্য সমিতির নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব্যবসায়ী মো. আকতার হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে তাফাজ্জল মল্লিক তার কাছ থেকে একাধিকবার টাকা হাওলাত নিয়েছেন। এ ছাড়া অলিখিত (ব্লাঙ্ক) চেক দিয়ে সুদের বিনিময়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা জোগাড় করে তাকে দেয়া হয়েছে। তাফাজ্জল মল্লিকের কাছ থেকে সর্বমোট প্রায় ৮ লাখ টাকা পাবে আকতার হোসেন। এ টাকার বিষয়ে তার ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী ও ছেলের বউসহ এলাকার অনেকেই অবগত রয়েছে এবং এলাকার গণমাণ্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে শালিশ বৈঠকও তিনি এ ঋণের কথা শিকার করেন।

তাফাজ্জল মল্লিক ওই টাকার বিনিময়ে নির্মাণাধীন ভবনের ১টি ইউনিট অথ্যাৎ ৭৫ পয়েন্ট (১ শতাংশ) রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার বিষয়ে ষ্ট্যাম্পের মাধ্যমে অঙ্গীকার করেন। পরে আকতার হোসেনকে উক্ত ভবনের ১টি ইউনিট রেজিস্ট্রি করার জন্য তিনি প্রস্তুতি নিতে বলেন। তার কথামতো দলিল নিয়ে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে যাওয়ার পর হঠাৎ সে (তাফাজ্জল মল্লিক) পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে তাফাজ্জল মল্লিকসহ তার পরিবারের ব্যবহৃত সবকটি মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মতলব দক্ষিণ

Leave a Reply