Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলবের আরেক সেনাসদস্য ছিনতাইকারীদের শিকার
সেনাসদস্য

মতলবের আরেক সেনাসদস্য ছিনতাইকারীদের শিকার

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে শাহিন আলম (২১) নামে এক তরুন সেনা সদস্য নিহত হওয়ার রেস কাটতে না কাটতে দু’দিনের মাথায় সাদ্দাম হোসেন নামে আরেক সেনাসদস্য ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

১৭ জানুয়ারি রাত ৩ টার দিকে সময় কুমিল্লার দাউদকান্দি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বলদাখালের এ্যাপোলো হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় ছিনতাইকারীরা তরুন সেনা সদস্য সাদ্দামকে ছুরি মেরে মারাত্মকভাবে আহত করে তার সাথে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকাসহ মালামাল লুটে নিয়ে যায়। ১০ দিনের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে এ সেনা সদস্য ছিনতাইকারীর শিকার হন।

এদিকে আহত সেনা সদস্য সাদ্দামের বাবা ছাদেকুর রহমান প্রধান ১৭ জানুয়ারি সোমবার সকালে দাউদকান্দি থানায় এ ব্যাপারে একটি জিডি করেছেন।

আহত সেনা সদস্য সাদ্দাম হোসেন (২১) মতলব উত্তর উপজেলার ৫নং দূর্গাপুর ইউনিয়নের আবরুকান্দি গ্রামের মোঃ ছাদেকুর রহমান প্রধানের ছেলে। সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যশোর ক্যান্টরমেন্টর এর অধিনে সৈনিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

আরও পড়ুন…  মতলবের সেনাসদস্য শাহিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন, এলাকায় শোকের মাতম

ছুরিকাঘাতে আহত সেনা সদস্য সাদ্দাম হোসেন (২১) চাঁদপুর টাইমসকে জানান, যশোর ক্যান্টমেন্ট থেকে আমি ১০ দিনের ছুটি নিয়ে ১৬ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার সময় আমি সৌদিয়া বাসে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। রাত ঠিক ৩ টার সময় বাসটি দাউদকান্দি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বলদাখালের এ্যাপোলো হাসপাতালের সামনে নামি। বাস থেকে নামার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আমার সমবয়সী বয়সী দুজন ছিনতাকারী এসে হঠাৎ আমাকে আমার মুখ চেপে হাত-পা ধরে ধরে ফেলে। তারা এসময় আমার ব্যাগ নিতে চাইলে আমি প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করি।

এসময় তারা আমাকে পেটের মধ্যে ছুরি মেরে রক্তাক্ত করে এবং আমার সাথে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। আমাকে টেনে হেছরে একটু দূরে ফেলে রেখে তারা চলে যায়।

একপর্যায় আমি চিৎকার দিলে পাশের এক দোকানদার এসে আমাকে উদ্ধার করে পাশের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দিয়ে আমাকে একটি সিএনজিযোগে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

তিনি আরও জানান, গত ১৫ জানুয়ারি ভোর রাতে ঢাকার চিটাগাং রোডে ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে নিহত সেনা সদস্য শাহিন আলম আমার ব্যাচ মেন্ট। আমরা এক সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করি। আমরা এক সাথে পড়াশুনাও করেছি ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজে। সে রয়েছে বরিশাল ক্যান্টরমেন্ট, আর আমি রয়েছি যশোর ক্যান্টরমেন্টর-এ। তার মতো আমারও হতে পারতো। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমি বেচেঁ এসেছি। আমি কেন আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতিটা সদস্য আমার বন্ধু শাহিন আলমের ছিনতাইকারী কর্তৃক অকালে মৃত্যু মেনে নিতে পারছিনা। আমরা মর্মরা হত।

আহত সেনা সদস্য সাদ্দাম আরও বলেন, বলেন ঢাকার সাইনবোর্ড থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত এই হাইওয় রোডে আমাদের মতলবের মানুষের চলাচল যেন প্রাণ নাশের হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। আমার বন্ধু নিহত শাহিন আলম আর আমার মতো যেন আর এ ঘটনার পনরাবৃিত্ত না ঘটে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান।

উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত মেম্বার মোঃ মানিক চাঁদপুর টাইমসকে   বলেন, ঢাকার সাইনবোর্ড থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত এই হাইওয় রোডে দিন দিন আমাদের মতলবের মানুষের চলাচল যেন আমাদের জীবননাশের হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ছিনতাইকারীর শিকার হয়ে মৃত্যু থেকে শুরু করে অনেকে আহত হয়েছেন। হয়েছেন সর্বশান্তও। অতি দ্রুত এই অপরাধী চক্রকে ধরে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। না হলে এ রোডে কেউ স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবে না। তাই দ্রুত প্রশাসনের কার্যকরি ব্যবস্থা নেওয় প্রয়োজন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি ভোর রাতে চিটাগাং রোডে এ ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে শাহিন আলম (২১) নামে মতলবের এক তরুন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। তার নিহত হওয়ার মাত্র দু’দিন পরেই আবারো আরেক সেনা সদস্য ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনায় এ এলাকার জনসাধারণ খুবই উদ্বিগ্ন।

নিজস্ব প্রতিবেদক