Home / জাতীয় / বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের রেমিট্যান্সে : ৩০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন
এক বিলিয়ন
প্রতীকী ছবি

বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের রেমিট্যান্সে : ৩০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্বে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বন্ধ রয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। কঠিন সময় পার করছেন বিদেশের মাটিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা। যার বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের রেমিট্যান্সে।

গেল এপ্রিলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১০৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ৯ হাজার ১২৩ কোটি টাকা) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা গত ৩০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স আহরণের প্রধান দেশগুলোতে করোনার কারণে গত তিন মাস ধরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কাজ নেই, অনেকে ঘর থেকেও বের হতে পারছেন না। বেশিরভাগ দেশে সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা চাইলেও কামাই করতে পারছেন না এবং দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারছেন না। যার কারণে রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ অবস্থা খুব শিগগিরই উন্নতি হবে বলে মনে করছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা গত ৩০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

এদিকে চলতি বছরের এপ্রিলে পাঠানো রেমিট্যান্স আগের বছরের এপ্রিল মাসের চেয়ে ৩৫ কোটি ডলার বা ২৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম। গত বছর একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।

এছাড়া এক মাসের ব্যবধানে অর্থাৎ চলতি বছরের মার্চের তুলনায় এপ্রিলে রেমিট্যান্স কমেছে ১৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এপ্রিলে রেমিট্যান্স আসে ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

ব্যাংকাররা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে গোটাবিশ্বই এখন অচল। এ সময় রেমিট্যান্স কমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। আমাদের রেমিট্যান্স আহরণের প্রধান দেশ যেমন- সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্য, ইতালি, জার্মানিসহ ইউরোপ, আমেরিকার মতো দেশগুলো কঠিন অবস্থা পার করছে। সেখানে অনেক প্রবাসীর চাকরি চলে যাচ্ছে, ফলে ইনকাম নেই বললেই চলে।

এমন অবস্থায় প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠানো তো দূরের কথা, তাদের খরচ মেটানো এখন দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। তবে এটা খুব শীঘ্রই যে স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না। রেমিট্যান্স আমাদের একটা বড় শক্তি। এটি কমে যাওয়া মানে অর্থনীতির জন্য খুব মারাত্মক ক্ষতি বলে শঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা অর্থবছর হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।

এর ধারা অব্যাহত রাখতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনাসহ প্রবাসীরা যেন অর্থ সহজে পাঠাতে পারেন এ জন্য বেশ কিছু শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রণোদনার অর্থ পরিশোধের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। ফলে বৈধ পথে বাড়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ। কিন্তু করোনাভাইরাসের আঘাতে এটি নেতিবাচক ধারায় চলে গেল। এ অবস্থা কত দিন থাকবে তা এখন অনিশ্চিত।

এদিকে রেমিট্যান্স কমলেও বিভিন্ন সংস্থার ঋণের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। রোববার (৩ মে) পর্যন্ত রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার।

ঢাকা ব্যুরো চীফ,৪ মে ২০২০