Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কে এই ড. সেলিম মাহমুদ?
selim-mahmud

কে এই ড. সেলিম মাহমুদ?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ড. সেলিম মাহমুদকে তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক নির্বাচিত করায় নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ড. সেলিম মাহমুদ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন,বৃহত্তর কুমিল্লা তথা চাঁদপুর জেলার কৃতি সন্তান ড. সেলিম মাহমুদ। ড. সেলিম মাহমুদ ১৯৮৬ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ছাত্রলীগের একজন সংগঠক হিসেবে সমকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নের্তৃত্বের পর্যায়ে চলে আসেন। বঙ্গবন্ধু কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালে তাঁকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম আইন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচন করেন। ছাত্রলীগের একজন সংগঠক হিসেবে ১৯৯১ সাল থেকে খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে গণআন্দোলনে অংশ গ্রহন করেন। ওই সময়ে তিনি জননেত্রী ও আওয়ামী লীগের পক্ষে নানা কর্মকান্ডে যুক্ত হন।

ড. সেলিম মাহমুদ একজন আইনজ্ঞ, রাজনৈতিক সংগঠক ও বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তি। নব্বইয়ের দশক থেকে ড. সেলিম মাহমুদ জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে বিভিন্ন ইস্যুতে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পান। তিনি কুখ্যাত ইনডেননিটি অর্ডিন্যাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে প্রথম গবেষনা ভিত্তিক প্রবন্ধ লিখেছিলেন যা ১৯৯১ সালের এপ্রিলে দৈনিক আজকের কাগজে প্রকাশিত হয়েছিলো। ১৯৯৪ সালে দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির পেক্ষাপটে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট প্রেরীত ‘স্যার নিনিয়ান মিশন’ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা কর্তৃক গঠিত ৪ সদস্যের দলীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি সভাপতিকে প্রয়োজনীয় আইনী ও সাংবিধানিক খসড়া উপস্থাপন করে সহায়তা করেছেন।

ড. মাহমুদের উল্লেখযোগ্য একাডেমিক সাফল্যের মধ্যে রয়েছে- এসএসসিতে কুমিল্লা বোর্ডে মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সন্মান এ প্রথম শ্রেণীতৈ প্রথম স্থান অর্জন এবং যুক্তরাজ্যের ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্বালানী আইন ও পলিসি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন। পিএইচডি গবেষনায় অসাধারন সাফল্যের জন্য ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্পেশাল ডীন’স এওয়ার্ড প্রদান করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে এলএলবি সম্নানে রেকর্ড পরিমান মার্কসহ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়া স্বত্তেও ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার কারনে তাঁকে এলএলএম পরীক্ষায় অন্যায়ভাবে প্রথম শ্রেনী না দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে প্রথম ঘোষনা করা হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন এবং তিনি এই ষড়যন্ত্রমূলক ফলাফল সংশোধন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যকে অনুরোধ করেছিলেন। ওই বছরই (১৯৯৫ সালে) নেত্রীর অনুরোধে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে লেকচারার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

পরবর্তীকালে নেত্রীর নির্দেশে তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারি প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ড. মাহমুদ নেত্রী ও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় সার্বক্ষনিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখতেন এবং সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতেন। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বৃহত্তর কুমিল্লার ৩টি জেলার সকল নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য ড. মাহমুদকে (সাবেক ছাত্র নেতা হিসেবে) নেত্রী তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সে সময়ে সাবেক ছাত্র নেতাদের এই দায়িত্ব দেয়া হয়। এই দায়িত্ব তিনি সুচারুরুপে পালন করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে বিভাগের ছাত্র ছিলেন অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ড. সেলিম মাহমুদের উদ্যোগে ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করা হয়। আইন বিভাগ তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি ছিলো একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। তাঁরই ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আইন বিভাগে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি ছাত্র বৃত্তি চালু করা হয়েছিলো যা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো।

২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগের পক্ষে গণসংযোগ করেন। যুক্তরাজ্যে পিএইচডি গবেষনা কালীন সময়ে জননেত্রীর উপর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর ড. সেলিম মাহমুদ যুক্তরাজ্যে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনসমর্থন সৃষ্টির জন্য কাজ করেন। এছাড়া, ১-১১ সরকারের সময় নেত্রীর মুক্তির লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে জনসমর্থন তৈরিতে কাজ করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে তিনি নেত্রী কর্তৃক মনোনীত হয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মিডিয়া সেন্টারের একজন সমন্বয়কারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. সেলিম মাহমুদ গত ৩ দশক ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে তাঁর মেধা, আন্তরিকতা সততা, সাহস ও কমিটমেন্ট দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ের সমন্বয়কারী হিসেবে দলের পক্ষে অক্লান্ত পরিশ্রমসহ বহুমাত্রিক কাজের (ইশতেহার প্রনয়ন, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়) সাথে যুক্ত ছিলেন।

ড. মাহমুদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতর্ৃৃক মনোনীত হয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশনের সদস্য এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলটরি কমিশন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি সব সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইমেজ রক্ষার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতেন। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও জ্বালানী সরবরাহ বৃদ্ধিসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সেক্টরের সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারি উদ্যাগে রেগুলেটরের পক্ষো ট্যারিফ সমন্বয়সহ অন্যান্য সকল বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতার জন্য তিনি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে দক্ষিন এশিয় আন্তঃরাষ্ট্রীয় টাস্ক ফোর্স সাউথ এশিয়ান রিজিওনাল ইনিশিয়েটিভ-এনার্জি ইন্টিগ্রেশন এর টাস্ক ফোর্স সদস্য (২০১৩-২০১৭) হিসেবে দক্ষিন এশিয়ায় জ্বালানী ভিত্তিক আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় জ্বালানী বাণিজ্য উন্নয়নে ‘এডভোকেসী’ কার্যক্রমে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলটরি কমিশনের সদস্য হিসেবে তিনি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালাণীর যোক্তিক ট্যারিফ নির্ধারনের মাধ্যমে সরকারের উপর ভর্তুকির বোঝা কমানো এবং এ খাতে ভর্তুকি সংস্কারসহ ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষন, ইউটিলিটিগুলোর ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকারি উদ্যোগে বিশেষ সহযোগিতা করেন।

একজন আইনজ্ঞ হিসেবে ড. সেলিম মাহমুদ জ্বালানী আইন ও পলিসি, আরবিট্রেশন, সাংবিধানিক আইন, ইনভেস্টমেন্ট আইন এবং কর্পোরেট ও কমার্শিয়াল আইনে বিশেষ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ড. মাহমুদ ১৯৯৫ সালে তাঁর বাবা কর্র্তৃক তাঁকে দানকৃত ৩ একর জমিতে চাঁদপুরের কচুয়াতে পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। কলেজটি ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এমপিওভুক্ত করা হয়। কচুয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার প্রসারে বিশেষ করে নারী শিক্ষার প্রসারে এই কলেজের বিশেষ অবদান রয়েছে। বর্তমানে এই কলেজে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৫শ’।

প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু