Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / কচুয়ার নোয়াগাঁও গ্রামে মাদক বিরোধী সমাবেশ
কচুয়ার নোয়াগাঁও গ্রামে মাদক বিরোধী সমাবেশ

কচুয়ার নোয়াগাঁও গ্রামে মাদক বিরোধী সমাবেশ

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির উদ্যোগে মাদক, বাল্য বিবাহ, ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ জুলাই সোমবার বিকেলে নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে দল-মত, ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সহ¯্রাধিক নারী-পুুরুষ অংশ গ্রহণ করেন। এসময় তারা মাদক প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার অঙ্গিকার করেন। সমাবেশের শুরুতেই মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে কয়েক শতাধিক গ্রামবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর গণসাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা আফরোজ, এএসপি নাজমুল ইসলাম, কচুয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. শাহজাহান কামাল, ৯নং কড়ইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসাসন হাবিব জুয়েল। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক আবদুল আউয়াল রুবেল।

৯নং কড়ইয়া ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি জিএম খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রশীদ পাঠান, সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল ইসলাম মুন্সি, সাধারণ সম্পাদক প্রাণধন চন্দ্র দেব, অর্থ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন শিকদার, ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারন সম্পাদক আবু বকর মিয়াজী,

কচুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইঞ্জিঃ ইব্রাহিম খলিল বাদল, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তারেক শামস্ মিঠু। গ্রামবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন নোয়াগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জহিরুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নোয়াগাঁও প্রিমিয়ার লীগ (এনপিএল) এর উপদেষ্টা আবুল হোসেন তালুকদার, তৌসিফ বিন ওমর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম নবীর জসিম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির বলেন, মাদকের হাত থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে সমাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এলাকার আলোচিত ৬ মাদক ব্যবসায়ীকে তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, আপনারা যদি ভালো হয়ে থাকেন তবে অন্তত্য ৩ মাস আমার বাড়িতে থাকবেন। এই তিন মাস আপনাদের সকল ভরণ-পোশণের দায়িত্ব আমার। তখনই প্রমান হবে আপনারা মাদকের সাথে জড়িত রয়েছেন কি না।

তিনি আরো বলেন, বাল্য বিয়ের হাত থেকে আমাদের সন্তানদের রক্ষা করতে হবে। এটি সমাজের জন্য একটি মারত্মক অভিশাপ। বর্তমান সরকার নারীদের ক্ষমতায়ন এবং নারীর অগ্রযাত্রায় কাজ করে যাচ্ছে। তাই নারীরা এখন আর আমাদের বোঝা নয়। তারা আমাদের সম্পদ। সরকার মেয়েদের লেখা-পড়ার খরচ বহন করছে। সরকার জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করে যাচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা আফরোজ বলেন, আপনাদের এই আয়োজনকে আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন চলছে। আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি অপরাধ থেকে মানুষকে দূরে রাখার জন্য।

কাউকে অপরাধি করার জন্য নয়। আমরা চাই মাদকের বিরুদ্ধে সমাজিক সচেতনতা এবং সমাজিক আন্দোলন। আপনারা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন। মাদকের সাথে জড়িতদের সঙ্গে কোনো আপোষ থাকতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, বাল্য বিবাহের অভিশাপ ভয়ঙ্কর। আমাদের কাছে ৯০ভাগ বিচার আসে বাল্য বিবাহের কারনে। একটি মেয়েকে বাল্য বিয়ে দেয়ার মানেই হলো তাকে থামিয়ে দেয়া। বর্তমান সরকারের জঙ্গিবাদ দমনে সক্ষম হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে দেশের সর্বস্তরের মানুষ সহযোগিতা করার কারণে।

তবে এখনো আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সরকার আমাদের বেতন দিচ্ছে আপনাদের সেবা করার জন্য। আপনাদের কাছে জবাবদিহীতা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সরকার এবং জনগণের শক্তি দিয়ে মাদক, বাল্য বিয়ে এবং সন্ত্রাসকে প্রতিরোধ করা হবে।

এএসপি নাজমুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, মাদক, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো ট্রলারেন্সের নির্দেশনা রয়েছে। এসব বিষয়ে প্রশাসন সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আপানাদের কাছে আমাদের অনুরোধ তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। এমনকি এই ক্ষেত্রে যদি পুলিশের কোনো সদস্য জড়িত থাকে তার বিষয়েও আমাদের তথ্য দিবেন।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আব্দুল আউয়াল রুবেল বলেন, কচুয়া উপজেলার মধ্যে নোওগাঁও গ্রামটি একটি আর্দশিক গ্রাম। এখাকার মানুষ শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং ক্রিড়াসহ সকল সমাজিক কাজে এগিয়ে রয়েছে। তাই আমাদের এই গ্রামে কোনো অবস্থাতেই মাদক, বাল্যবিয়ে, সন্ত্রাস ও জাঙ্গিবাদ থাকতে পারে না। কিছু সংখক চিহ্নিত মাদক বিক্রেতার জন্য আমাদের এই গ্রামের বদনাম হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, এই এলাকায় যারা মাদক বিক্রির সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে প্রশাসনের কাছে তথ্য রয়েছে। এছাড়াও এলাকাবাসী তাদের বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করেছে। তাই বিষয়টি নজরে এনে প্রশাসনের এই বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানচ্ছি।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

Leave a Reply