Home / চাঁদপুর / নাটকীয়তা শেষে দলীয় মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে শফিক ভূঁইয়া
Natokiyor-shafiq-bhuyan

নাটকীয়তা শেষে দলীয় মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে শফিক ভূঁইয়া

দলীয় কার্যালয়ে হট্টোগলসহ নানা নাটকীয়তা শেষে বিএনপির মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের নির্দেশে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন শেষে পূরণ করে জমা দিয়েছেন চাঁদপুর-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চাঁদপুর পৌর সভার সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ভূঁইয়া।

শনিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চাঁদপুর-৩ (চাঁদপুর সদর-হাইমচর) নির্বাচনী আসনের মনোনয়ন ফরম বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের কাছে জমা দেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ মো. শফিকুর রহমান ভুঁইয়া।

এরপূর্বে গত ১৬ নভেম্বর রাত ৮টায় নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদের কাছ থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।

মনোনয়ন সংগ্রহ করতে গিয়ে পার্টি অফিসের ভেতর হাতাহাতিতে জড়ালো চাঁদপুর জেলা বিএনপির দুই গ্রুপ। শুক্রবার দুপুরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সামনেই দ্বন্দ্বে জড়ান তারা।

জানা গেছে, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ৫ দিন ধরে বিএনপির নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলতে ব্যর্থ হন। কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব তাকে দলীয় ফরম দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেণ। ফলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার সমর্থিত কয়েক হাজার নেতাকর্মীর সামনে শফিকুর রহমান ভূঁইয়া অনেকটাই আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন। মনোনয়ন ফরম না পেয়ে তার কর্মীরা এর কারণ জানতে রুহুল কবির রিজভীর কক্ষে যান ও বিক্ষোভ শুরু করেন।

তিনি দলীয় ফরম তুলতে বেশ কয়েকবার দলীয় মহাসচিব মির্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ রায়সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ নেতাকে জানালে তারা দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজবীকে দলীয় ফরম শফিকুর রহমান ভূঁইয়াকে প্রদান করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু রিজভী তাকে দলীয় ফরম দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন জেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতার ইঙ্গিতে।

পরে শফিকুর রহমান ভূঁইয়া কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে গতকাল বেলা ২টায কান্না জড়িত কণ্ঠে সংবাদ কর্মীদের জানান, আমি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি, চাঁদপুর পৌরসভার বিপুল ভোটে নির্বাচিত সাবেক চেয়াম্যান ও বর্তমান কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। জাতীয়তাবী আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে জেলা বিএনপিকে আমি জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় দলে পরিণত করেছি। যার প্রমান চাঁদপুরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংক্ষক নেতাকর্মী।

তিনি আরো বলেন, আমার দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দেই-দিচ্ছি করেও আমাকে দলীয় মনোনয়ন ফরম দেয়নি। তিনি দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলার নির্ধারিত সময়ক্ষেপন করেন। ফলে আমি শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলতে পারবো কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। অথচ দলের কম গ্রহনযোগ্য নেতারা দলীয় ফরম তুলতে দেখা গেছে।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক এ নেতা আরো দাবি করেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের ইঙ্গিতেই যুগ্ম মহাসচিব আমাকে দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলা থেকে বঞ্চিত করেন।’

এ সময় শফিকুর রহমান ভূঁইয়ার সমর্থিত নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ ও শ্লোগান দিতে থাকেন। এসময় কর্মীদের ‘দালাল দালাল’ শ্লোগান দিতে শোনা যায়। অন্য গ্রুপের টাকা নিয়ে শফিকুল ভূঁইয়াকে মনোনয়ন ফরম দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।

একপর্যায়ে চাঁদপুর থেকে আসা অন্য গ্রুপের মনোনয়ন প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হয়। ইকবাল নামের এক কর্মীকে পেটাতে পেটাতে অন্য রুমে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এসময় উপস্থিত কয়েকজন ছবি তুলতে গেলে তাতে বাধা দেওয়া এবং ফোন কেড়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক কাজী গোলাম মোস্তফা, খলিলুর রহমান গাজী, সাবেক সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন খান বাবুল, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক শাহনেওয়াজ খান, জেলা যুবদলের সভাপতি রাফিউস শাহাদাত ওয়াসীম পাটওয়ারী, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মীর আনোয়ার হোসেন বাচ্চুসহ অঙ্গসহোযোগী সংগঠনের একাংশের কয়েকশতাধিক নেতাকর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মনোনয়ন ফরম জমাদানকারী নেতাদের সাথে অংশ নেন।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর, ২০১৮

Leave a Reply