করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) উপসর্গ নিয়ে দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শহীদুল আনোয়ার। কিন্তু এই একমাসে অনেক চেষ্টা করেও তার করোনা পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত পরপারেই চলে গেলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির এই সন্তান।
বুধবার দিবাগত রাতে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে আব্দুল আহাদ।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘একমাসের বেশি সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন আব্বা। এ একমাস শত চেষ্টা করেও বাবার করোনা টেস্ট করতে পারিনি। চমেকের চিকিৎসকরা বাবার চিকিৎসার বিষয়ে এবং করোনা টেস্টের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। দেশের একজন স্বনামধন্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ হয়েও তিনি যথাযত চিকিৎসা পাননি।’
আহাদ জানান, তাঁর বাবার মরদেহ ফটিকছড়ির গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হবে।
জানা গেছে, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শহীদুল আনোয়ারের পরিবারে অনুরোধে একজন সাংবাদিক এই চিকিৎসকের করোনা টেস্ট এবং সুচিকিৎসার জন্য বিএমএ নেতাদের এবং চমেকের কয়েকজন চিকিৎসকে ফোন করে অনুরোধ করার পরও তার করোনা টেস্ট করাতে ব্যর্থ হন।
আলোচিত এক বিএমএ নেতাকে ফোন করে অনুরোধ করার পর তিনি সাংবাদিককে বলেন, আমি এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। অথচ তিনি কিছুই করেননি। উল্টো একঘণ্টা পর ওই নেতা সাংবাদিককে ফোন করে বলেন, ডা. শহীদুল আনোয়ার স্যার এখন অনেক সুস্থ। উনাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে বাসায় চলে যেতে বলা হলেও তিনি যাচ্ছেন না। অথচ শহীদুল আনোয়ার তখনো আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ তথ্য ওই চিকিৎসক নেতাকে বলার পর তিনি ফোন কেটে দেন বলে জানান ওই সাংবাদিক।
এদিকে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপনসিবিলিটি (এফডিএসআর) রাতে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে চট্টগ্রাম আই ইনফার্মারির সাবেক চিকিৎসক ডা. শহিদুল আনোয়ার মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়,দেশে করোনায় আরও ৩৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ৫৮২ জনে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও তিন হাজার ৪৬২ জন। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ২২ হাজার ৬৬০ জনে।
বার্তা কক্ষ,২৫ জুন ২০২০