চাঁদপুর এবার বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে । চাঁদপুরে আখ সুপরিচিত । লম্বা আখের আবাদই বেশি । খুচরা ও পাইকারি বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,‘অমিতা’ নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিত ঈশ্বরদী-১৪ জাতের আখেরও আবাদ করেছেন চাষিরা । তবে চাঁদপুরে এর ফলনই বেশি।’ সেচ প্রকল্প এলাকার কৃষকরা আখ চাষে বেশি লাভবান হচ্ছেন। কারণ,তাদের জমিগুলোতে পানি না থাকায় বেশি সময় নিয়ে আখ বিক্রি করতে পারছেন।
তাই এ বছর আখের ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। ইতোমধ্যেই গ্রাম-গঞ্জের বাজারে খুচরা-পাইকারি বিক্রি হচ্ছে চাঁদপুর আখ। আকারভেদে প্রতিটি আখ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ৩০ টাকা ।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৮ হেক্টর বেশি জমিতে আখের আবাদ হয়েছে। ৫শ’৭৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৫শ’৮৩ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যেই ২৫ শতাংশ আখ কাটা হয়েছে, আগামী ৩ থেকে ৪ মাস চলবে বাকি আখ কাটা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার সকদী রামপুর গ্রামের কৃষক আমির হোসেন ও মদনের গাঁও গ্রামের কৃষক ইসমাইল জানান,আলু জমিতে থাকা অবস্থায় আখ লাগিয়েছেন তারা। এ বছর ভালো ফলন পেয়েছেন। এর মধ্যে চাঁদপুর আখই বেশি। তবে তাদের অনেক জমিতে এখনো আখ কাটা শুরু হয়নি।
চাঁদপুর সদর উপজেলার ছোবহানপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান,তিনি এ বছর ২ একর জমিতে আখের আবাদ করেছেন। তার চাঁদপুর ইশ্বরদী-১৪ জাতের আখও অনেক লম্বা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের পরে কাটা শুরু করবেন। ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
একই এলাকার কৃষক কালাম গাজী জানান,তিনি এ বছর আলু আবাদ করে অনেক ক্ষয়-ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। এখনো সার ও বীজের দোকানে বকেয়া রয়েছে। ৬০ শতাংশ জমিতে আখের চাষ করেছেন, ফলন ভালো হয়েছে। তার জমিতে চাঁদপুর গেন্ডারি ও অমিতা- দু’ জাতেরই আখ রয়েছে। আখ বিক্রি করে আলুর আবাদে হওয়া ঋণ পরিশোধে আশাবাদী তিনি।
নানুপুর গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম ও জালাল গাজী বলেন,‘চাঁদপুরের আখের অধিকাংশই নোয়খালী,লক্ষ্মীপুর সিলেট,ফেণী, কুমিল্লা ও ঢাকায় বিক্রি হয়। নদী ও সড়কপথে এসব জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় কারণে বহু বছর ধরে ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই আমাদের আখ কিনে নিয়ে যান।’
চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী আহম্মদ জানান,এ জেলায় চাঁদপুর গেন্ডারি’ ও ঈশ্বরদী-১৪ জাতের আখ দু’টির আবাদ হয়। চাঁদপুর গেন্ডারির আবাদ বেশি,ঈশ্বরদী-১৪ এর আবাদও বাড়াতে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
চলতি মাসের তথ্যানুসারে এখনো পুরোপুরি আখ কাটা শুরু হয়নি। জেলার মধ্যে আবার ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বেশি আখের চাষ হয়। এ বছর এ উপজেলায় ২শ’৬০হেক্টর জমিতে আবাদ করেছেন কৃষকরা। এরপর মতলব উত্তর উপজেলা এখানে প্রায় ১শ৭০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে । বাকিগুলো অন্যান্য উপজেলায় আবাদ হয়েছে।
আলী আহম্মদ বলেন,‘আখের ভালো ফলন হওয়ায় আবাদ আরো বাড়বে বলে আশা করছি। আমরা সব সময় কৃষকদেরকে সব ধরনের আবাদে পরামর্শ দিচ্ছি।’
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:১০ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর,২০১৭,বুধবার
এজি