Home / জাতীয় / রক্ত নেয়ার নামে কিডনি পাচার
রক্ত নেয়ার নামে কিডনি পাচার

রক্ত নেয়ার নামে কিডনি পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০৯:০৭ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০১৫, শনিবার

রাজধানীর গাবতলী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনই আন্তর্জাতিক কিডনি চক্রের সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ। তারা দরিদ্র মানুষকে নানা প্রলোভনে ও কৌশলে অজ্ঞান করে কিডনি চুরি করতো।

শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, মাহবুবুর রহমান শান্ত নামে এক ব্যক্তিকে রক্ত দিতে কথিত এক চাচীকে ২০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে আসে আসামিরা। রক্ত দিতে গেলেই অচেতন করে ওই চাচীর কিডনি পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করা হয়। তবে এর আগেই ওই চক্রকে গ্রেফতার করে ডিবি।

গ্রেফতাকৃতরা হচ্ছে- আবদুল জলিল, শেখ জাকির ইবনে আজিজ (শাকির), আশিকুর রহমান (জেবিন), ফজলে রাব্বি ও জিহান রহমান। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি চেতনানাশক ইনজেকশন, সিরিঞ্জ ও একটি ধারালো ছুরি ও একটি তোয়ালে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আবদুল জলিল কিডনি পাচারের মূল হোতা। বাকিরা তার সহযোগী। জলিল ১০ বছর ধরে কিডনি পাচারের কাজ করে। পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টির সদস্যও ছিল। সে তার সহযোগী দালালদের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে কিডনি রোগীদের কিডনি স্থাপনের জন্য রাজি করাতো। ৪ থেকে ৬ লাখ টাকায় সেগুলো তাদের কাছে বিক্রি করতো। জলিল এ পর্যন্ত ৪ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন এবং পাচারের কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

জলিলের কাছ থেকে কিডনি ক্রয় করা দুলাল নামে এক ব্যক্তি জানান, ২০১১ সালে তার দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। তিনি নিয়মিত ডায়ালসিসের জন্য কিডনি ফাউন্ডেশনে যেতেন। সেখানে এক দালাল তাকে কিডনি বিক্রির কথা বলে জলিলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে জলিল কলকাতায় গিয়ে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করেন।

মনিরুল ইসলাম আরো জানান, আসামি শাকির চার লাখ টাকার বিনিময় এক ভিকটিমকে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে কিডনি অপসারনের জন্য আন্তর্জাতিক দালাল চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিডনি অপসারণের পর ভিকটিমকে হত্যা করে বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের।

যুগ্ম কমিশনার জানান, কিডনি বেচা কেনা বেআইনি। তবে কারো যদি কিডনি প্রয়োজন হয়। তাহলে তার রক্তের সম্পর্কের লোকজন স্বেচ্ছায় কিডনি দিতে পারবে। এ বিষয়ে কেউ তাকে জোর করতে পারবে না।

অবৈধভাবে কিডনি বেচা-কেনার কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিবি দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার মাশরেকুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহমুদা আফরোজ লাকী, উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মো. মুনতাসিরুল ইসলাম।

 

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫