Home / ফিচার / মফস্বল লেখকদের অবমূল্যায়ন নিত্যদিনের সঙ্গী
মফস্বলের লেখকদের অবমূল্যায়ন নিত্য দিনের সঙ্গী

মফস্বল লেখকদের অবমূল্যায়ন নিত্যদিনের সঙ্গী

“হাতে কলম আর পেটে বিদ্যা থাকলে লেখা যায় না-মগজ ও প্রতিভা থাকা চাই” “গুন্টার গ্রাস” উক্তিটি করেছিলেন।

মগজ ও প্রতিভা দুটি থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় প্রতিভা বিকশিত হয় না। মফস্বল ‘মানে যারা গ্রামে থেকে লেখা-লেখি করে তারা সর্বদা অবমূল্যয়িত হয়।

‘ওদের লেখাকে অনেকেই প্রাধান্য দেন না। অনেকক্ষেত্রে পছন্দের লোক না হতে পারলে লেখা ছাপা হয় না পত্রিকার পাতায়।

একজন লেখক’ ছোট হোক আর বড় হোক তার স্বার্থকতা হলো যখন তার লেখা ছাপা হয় কাগজের পাতায়। দূর্ভাগ্যবশত যদি লেখাটা না ছাপা হয় তবে বেচারার মলিন, হাস্যজ্জ্বোল মুখটা অমলিন অনেকটা প্যাঁচার মত হয়ে যায়। আমি নিজেও অনেকবার এমন কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছি। অনেকবার চোখে জল চলে এসেছে।

অনেকবার ভেবেছি আজ থেকে আর লিখবো’ই না! আবার ভাবি ধর্ম যাজক এর সাথে রাগ করে ধর্ম পালন না করলে নিজেরই ক্ষতি!

আমাদের মানসিকতাটাও অনেকটা ভিন্ন ধরনের। সে’দিন একজন সরকারি কর্মকর্তা ফেসবুকে স্ট্যাটাসা দিলেন, ‘তিনি তার সন্তানকে স্কুলে হাতেখড়ি দিতে চান। অনেক বলার পর যা ও ভর্তি করাতে প্রিন্সিপাল রাজি হলেন, ততক্ষনে জানিয়ে দিলেন প্রতিযোগিতার বাজারে সেই স্কুলে হাতেখড়ি না হওয়া শিশুকে ‘ভর্তি পরীক্ষা’ দিতে হবে!অথচ শিশুতো এখনো স্কুলে নাম ই লিখালো না!

স্কুলে সন্তানকে পাঠানো হয় শিক্ষার্জনের জন্য,পড়ালেখা শেখার জন্য। শেখানেই কিনা প্রথমে পরীক্ষার পালা। স্কুলে ভর্তি [হাতে খড়ি] হতে যদি পরীক্ষা দেয়া লাগে তবে আর স্কুলে ভর্তি করিয়ে লাভ কি? তার চেয়ে বরং ঘরে বসে বই পড়ে শিখাই উত্তম।

ঠিক তেমন একটি উদাহরণঃ- লেখক যখন কোন লেখা মিডিয়ায় পাঠান’ ঠিক তখন কম্পিউটারের সামনে বসা কর্মকর্তারা প্রথমেই বিচার করেন, দূর মিয়া এগুলা কি লেখা? আরে ভাই এগুলা ছাপা যাইবো না!, এটা কি লেখা হইলো নাকি?

এখন কথা হলো এভাবে যদি লেখাকে অবমাননা করেন তবে একদিন মামা-খালুর লেখকরাই উঠে যাবে উপরে,আমাদের মত নিপিড়িত লেখকরা লিখে, লিখে সেটা না ছাপানোর বেদনায় জ্বলে, পুড়ে মরবে। হয়তো প্রতিভাও থেমে যাবে!

“একজন লেখক যখন লিখেন, তখন তিনি অনেক কষ্ট করে লেখাটাকে ফুঁটিয়ে তোলেন।অনেক চিন্তা-চেতনা করে লেখাটাকে ফুটিয়ে তুলে সে লেখাটা যখন আপনার ঠোঁটের কিছু বিদ্রুপ কথার কাছে পদদলিত হয়, তখন লেখকের জীবনের সবচেয়ে বড় পরাজয় ঘটে।”

আপনি যদি লেখাটাকে ভুল মনে করেন তবে সে লেখাটাকে কিভাবে শুধরে দেয়া যায় সেই কথাটা জানান লেখককে।

কোন গ্রন্থে যেনো পড়েছিলাম,”তুমি যা জানো তা অন্যের মাঝে বিলিয়ে দাও নিজে জানার মাঝে যা আনন্দ, অন্যের মাঝে তা বিলিয়ে দেয়া আরো বেশি আনন্দের।

আসলে প্রবাদে আছে ‘শিক্ষিত’ হওয়া আর ‘শিক্ষক’ হওয়া এক জিনিস নয়। শিক্ষকের কাজ হলো নিজে শিখে তা শিক্ষার্থীদেরকে শিখানো ।আপনারা যারা এসব গুরু বাক্য বলেন তারা তো শিক্ষকের আসনে।

অনুরোধ থাকবে নতুন লেখকদের মূল্যায়ন করুন। অনেক সময় গোবরেও পদ্ম ফুল ফোটে।

লেখক- রিফাত কান্তি সেন,সাংবাদিক।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯: ১০ পিএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply