Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে কৃষকের ঘরে আলু তোলা শুরু
potato
ফাইল ছবি

চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে কৃষকের ঘরে আলু তোলা শুরু

চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে কৃষকের ঘরে আলু তোলা শুরু হয়েছে । বস্তায় বস্তায় আলু হিমাগারে যাওয়াও শুরু হয়েছে । উৎপাদনের জন্যে এবার অনেকটাই কৃষকদের অনুকূলে রয়েছে ।আলুর রং ও আকারও ভালা বলে কৃষকগণ জানান।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে ,চাঁদপুরে চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৩৬ মে.টন এবং চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৫৭ হেক্টর।

চাঁদপুরে আলু চাষীগণ বার বার অর্থনেতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও এবার ঘূর্ণিজড় বুলবুলের কারণে ক’দিন পিছিয়ে গেছে । ফলে চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক আলু চাষাবাদ করা হলেও ৪-৫ দিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে চাষাবাদকৃত আলু রোপণের সময় কিছুটা নষ্ট হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রাপ্ত তথ্য মতে,চাঁদপুর সদরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল এবার ১,৫২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৭,৭৪১ মে.টন। মতলব উত্তরে ৬০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১১,৩৮০ মে.টন । মতলব দক্ষিণে ২, ৯২২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭২,৫৩৫ মে.টন । হাজীগঞ্জে ৭৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৯,৩৬৭ মে.টন ।শাহারাস্তিতে ২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬২১ মে.টন। কচুয়ায় ২,০১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪৯,৯০৮ মে.টন। ফরিদগঞ্জে ৮০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১,৯৮৬ মে.টন। হাইমচরে ১২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২,৯৮০মে.টন।

কৃষকদের সাথে কাথা বলে জানা যায়,বর্তমানে কৃষকরা লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো সেচ ব্যবস্থায়,গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত বীজ,পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার,নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে জানান।

চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী। জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। এ দিকে চাঁদপুরের সাথে নৌ,সড়ক ও রেলপথের উত্তম যোগাযোগ থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহন অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই সহজ ও নিরাপদ ইত্যাদি সুযোগ থাকা সত্বেও চাষিরা মার খাচ্ছে।

চাঁদপুররে ৮ উপজলোয় ৪ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ২০১৯-২০ র্অথবছরে ২৪৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে সোনালী,অগ্রণী,জনতা ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংকের এক তথ্যে জানা গেছে ।

এ ছাড়াও সরকার এবছর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় কম-বেশি হারে ৯৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার সার,বীজ ও নগদ অর্থ প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে বীজ বাবৎ ৩৮ লাখ ৮০ হাজার, সার বাবৎ ৪৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং নগদ অর্থ বরাদ্দ ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ খাতে ভর্তূকি রয়েছে সেচ চাষীদের জন্যে ২০ % ।

প্রসঙ্গত, আলু বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি সবজি। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন জেলা। মুন্সীগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। ফলে চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে।এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৫৪ হাজার মে.টন। মতলবের করিম কোল্ডস্টোরেজের সংরক্ষণাগারটির ধারণ বাড়ালেও বাকি প্রায় দেড় লাখ মে.টন আলু কৃষকদের নিজ দায়িত্বে মাচায় বা কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করার ফলে জেলার কৃষকগণ প্রতি বছরই অর্থনৈতিকভাবে মার খাচ্ছে।

৮ উপজেলায় আলুর চাষাবাদ ও উৎপাদনে বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে। বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী,রালদিয়া,মুন্সীরহাট, মতলব দক্ষিণ,নারায়ণপুর,কুমারডুগি,শাহাতলী,কেতুয়া এলাকা। বর্তমানে আলুর খুচরা মূল্য ২০ টাকা কেজি ।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন কৃষিবিদ চাঁদপুর টাইমসকে ১৬ মার্চ জানান এবার আলু চাষাবাদের পরিবেশ অনুকূলে রয়েছে এবং ফলনও ভালো হয়েছে। চাঁদপুরের সাথে দেশের সকল জেলায় চমৎকার যোগাযোগ রয়েছে ।