বিশেষ সংবাদ

দু’তরুণের আবিষ্কার : ফিঙ্গার প্রিন্ট বলে দিবে বিবাহিত না অবিবাহিত

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী আবিষ্কার করেছেন ‘Biometric Registration System for Preventing Illegal Marriage’ নামে অভিনব এক ইলেকট্রনিক ডিভাইস।

এই ডিভাইসের উপর আঙ্গুলের ছাপ পড়া মাত্র বোঝা যাবে আপনি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত। তাছাড়াও এই ডিভাইসের মাধ্যমে বাল্যববিাহ ও বহু ববিাহ প্রতিরোধ সম্ভব।

ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো: আলমাস হোসাইন শাজা এবং মো: ইউসুফ জামিল রনি।

আলমাস হোসাইন সাজা জানান, প্রজেক্টটির তৈরির কাজ ২০১৮ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের শেষের দিকে শেষ হয়।

ডিভাইসটি তৈরি করার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যান করতে ZKTeco ডিভাইস ব্যবহার করি। ইথারনেট ও ম্যানুয়াল IP Address এর মাধ্যমে উপরোক্ত যন্ত্রটি কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ট্যাব-এর সাথে সংযোগ দিয়ে ব্যবহার করা যাবে।

আপনি কি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত বা আপনার বয়স কত তা যাচাই করতে তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে।

প্রথমত, নতুন বিয়ের ক্ষেত্রে জেড.কেটি.ইকো (z.kt.eco) যন্ত্রটির উপর আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার সাথে সাথে একটি ফর্ম আসবে। তারপর ফর্ম পুরণ করে দিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, পুনরায় যাচাই বাচাই প্রক্রিয়া। (varification system)।

তৃতীয়ত, আপনি কি বিবাহিত নাকি অবিবাহিত বা বিয়ের বয়স হয়েছে কিনা, তা যাচাই করার জন্য জন্মনিবন্ধন কার্ডের নাম্বারের বিপরীতে বের হয়ে আসবে আপনার বিস্তারিত তথ্য। যেমন, বিয়ে করেছেন কিনা, আপনার বয়স কত, কোন কাজী বিয়ে পড়িয়েছিল, বিয়ের সাক্ষী কে কে, বিয়ের দেনমোহর কত, কবে বিয়ে হয়েছিল তার বিস্তারিত তথ্য বের হয়ে আসবে। যার ফলে তথ্য গোপন করে বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের বিষয়টি গোপন থাকবে না।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানের জন্য যে ZKTeco ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয়। তার মূল্য ১০ হাজার ২০০ টাকা। এর বাইরে ব্যক্তিগত ল্যাপটপ ব্যবহারের বাইরে তেমন কোন খরচ নেই। এ ছাড়াও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশনের ন্যায় নির্ধারিত ট্যাবে এই সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, এই প্রজেক্টটি আপাতত অফলাইনে তৈরি। বলা যেতে পারে ডেমো সিস্টেম। সাংবিধানিক অনুমতি পেলে ASP.net এর মাধ্যমে সেন্ট্রাল সার্ভারে সংযুক্তি করণের মাধ্যমে সারাদেশে একযোগে সেবা দেওয়া সম্ভব।

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কাজীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সিস্টেমের বিষয়ে অবগত করে নিতে হবে। বিয়ের নিবন্ধন ফি সরাসরি কাজীর হাতে না দিয়ে ভার্সিটি এডমিশন বা চাকরি আবেদনের সিস্টেম অনুযায়ী নির্ধারিত নিবন্ধন ফি রাষ্ট্রীয় মোবাইল অপারেটর/মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমের মাধ্যমে পরিশোধ করে বিবাহ নিবন্ধনের কাজ সম্পন্ন করা যেতে পারে।

রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের অভিশাপমুক্ত সুশৃঙ্খল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পাবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো: মাইন উদ্দিন জানান, এই আবিষ্কারের মাধ্যমে বাল্যববিাহ ও বহুবিবাহ নামক অভিশাপ থেকে আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্র মুক্তি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।

রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে প্রত্যেকেই এই ডিভাসটির সুফল ভোগ করতে পারবে।

বার্তা কক্ষ
১০ জানুয়ারি, ২০১৯

Share