Home / জাতীয় / রাজনীতি / ‘কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া’
khaleda
ফাইল ছবি

‘কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া’

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গত ৫ জুন কারাগারে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার আত্মীয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৮ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।

এই অবস্থায় বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে আগামি ১০ জুন রোববার রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিন সপ্তাহ ধরে জ্বরে ভুগছেন ও গত মঙ্গলবার জেলখানায় মাথাঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন । সেইসাথে খালেদা জিয়ারর শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছে দলটি। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিতসক দিয়ে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা নিয়ে সরকারকে আহ্বান জানানো হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিকটাত্মীয়রা তার সঙ্গে ঢাকা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাতের জন্য গিয়েছিলেন। সাক্ষাত শেষে তারা দেশনেত্রী সম্পর্কে যে বর্ণনা দেন তা শুধু মর্মস্পর্শীই নয়, হৃদয়বিদারক। সরকারের জিঘাংসার কষাঘাতের তীব্রতা যে কত ভয়াবহ সেটি বোঝা যাবে শুধু বেগম জিয়ার প্রতি অমানবিক আচরণের মাত্রা দেখলেই।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর নিকটাত্মীয়রা বলেছেন গত ৫ জুন বেগম খালেদা জিয়া দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি তিন সপ্তাহ ধরে ভীষণ জ¦রে ভুগছেন যা কোনোক্রমেই থামছে না। চিকিৎসা বিদ্যায় যেটিকে বলা হয় টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট স্কীমিক এ্যাটাক)। দেশনেত্রীর দুটো পা- ই এখনো ফুলে আছে এবং তিনি তার শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছেন না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে আমি যে কথাগুলি বললাম তা সম্পূর্ণরুপে সত্য। তার অসুস্থতা নিয়ে ইতোপূর্বেও যে কথাগুলো বলা হয়েছে তা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ হলে তার স্বাস্থ্যের এতটা অবনতি হতো না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের ইচ্ছাকৃত অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তার প্রয়োজনীয় যে চিকিৎসাগুলোর জন্য বারবার দাবি করা হয়েছিল যেমন বিশেষায়িত এমআরআই, সিটি স্ক্যান, ইকো কার্ডিওগ্রাফি, ইসিজি, বিএমডিসহ জরুরী পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং একটি চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে জরুরি চিকিৎসার বন্দোবস্থা করা। কিন্তু দলের নেতৃবৃন্দের দাবি এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ ক্রমাগত উপেক্ষাই করে চলেছে সরকার।

রিজভী বলেন, গত ২১ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে আবেদন করেছিলেন দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চার জন চিকিৎসককে কারাগারে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য। কিন্তু এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো সাড়া দেয়নি। এতে মনে হয় সরকার এবং সরকার প্রভাবিত প্রশাসনযন্ত্র দেশনেত্রীকে নিয়ে কোনো গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তিনিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকারের প্রতিহিংসার পাখা সবসময় যেন ঝটপট করছে। বারবার দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে সুচিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত চিকিৎসকবৃন্দ, দলের নেতৃবৃন্দ, দেশের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ সোচ্চার থাকলেও সরকার এক অশুভ উদ্দেশ্যে তা অগ্রাহ্য করছে। নির্মম সত্য যে, সরকার এক অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই দেশনেত্রীর সুচিকিৎসায় বাধা প্রদান করছে। সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রবল সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে যে, আসলে দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকার কী করতে চায়? এই সরকার মর্যাদা, সহানুভূতি, অন্যের প্রতি সম্মান ও অনুশোচনা হারিয়ে ফেলেছে। চরম মিথ্যাচার যাদের রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতির এজেন্ডা তারা একজন সম্মানীত জনপ্রিয় নেত্রীকে তো কষ্ট দেয়া ছাড়া ভাল কিছু করার শিক্ষা ওদের নেই।

তিনি আরো বলেন, নির্বিচারে শক্তি প্রয়োগ করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনে সব ব্যবস্থাই তারা করতে পারে। বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা না দিয়ে নিপীড়ণের যে নতুন অস্ত্র ব্যবহার করে মানবাধিকারের ব্যাপক লঙ্ঘনের ধিক্কার জানাই। অবিলম্বে দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা এবং তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করানোর জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সরকারের সকল অমানবিক অবিচারের জন্য দায়ী থাকতে হবে।

কর্মসূচি, এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে ১ দিনের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। সে অনুযায়ী রোববার সারাদেশে জেলা ও মহানগরে এবং ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের জন্য আহ্বা জানানো হয়েছে।

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ড্যাব নেতা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমদে, আব্দুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, তাইফুল ইসলাম টিপু, আসাদুল করিম শাহিন প্রমুখ।

নিউজ ডেস্ক

Leave a Reply