Home / চাঁদপুর / এসপি শামসুন্নাহারের বডিগার্ড শামিমের সাহসিকতা ও ছিনতাইকারীর গল্প
এসপি শামসুন্নাহারের বডিগার্ড শামিমের সাহসিকতা ও ছিনতাইকারীর গল্প

এসপি শামসুন্নাহারের বডিগার্ড শামিমের সাহসিকতা ও ছিনতাইকারীর গল্প

রাতের অন্ধকারে চলন্ত বাসের জানালার পাশে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন এক নারী যাত্রী। আর সেই সুযোগে মোবাইল ফোন হাতিয়ে দৌঁড়ে পালাল এক ছিনতাইকারী। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।

প্রায় এক কিলোমিটার ধাওয়া দিয়ে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করলেন পুলিশের এক কনস্টেবল। তবে মোবাইল ফোন উদ্ধার হলেও তার মালিক বাসযাত্রী ওই নারী ততক্ষণে অনেক দূর চলে গেছেন।

তারপরও তাকেই বুঝিয়ে দেওয়া হলো ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন। সোমবার (১২ মার্চ) মধ্য রাতে আলোচিত এই ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায়।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, সরকারি কাজ শেষে মধ্যরাতে নিজ কর্মস্থল চাঁদপুরে ফিরছিলেন। এ সময় তার পাজেরো জীপের সামনের সিটে বসা ছিলেন, বডিগার্ড (দেহরক্ষী) পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। তাদের গাড়িটি কাঁচপুর সেতু পেরিয়ে একটু সামনে যাওয়া মাত্র লক্ষ্য করলেন, সামনে তিশা পরিবহনের একটি বাস। চলন্তু সেই বাসের গতি কিছুটা কমে আসলে জানালার পাশে বসা এক নারী যাত্রীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এক যুবক। এমন ঘটনা দেখে জীপ চালককে গাড়ি থামাতে বলেন, তিনি।

এ সময় দেহরক্ষী শামীম হোসেনকে বলেন, তুমি দৌঁড়ে ছিনতাইকারীকে ধর। যেই কথা সেই কাজ। রাতের অন্ধকারে গাড়ি থেকে নেমে শামীম হোসেন ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিলেন। ততোক্ষণে প্রায় এক কিলোমিটার পার। এ সময় ছিনতাইকারীকে ধরতে না পেরে শামীম চিৎকার করে গুলি করার হুমকি দেন। শেষ পর্যন্ত উপায়ন্ত না পেয়ে মোবাইল ফোন রেখে গা]ঢাকা দেয় ওই ছিনতাইকারী।

কিন্তু ততক্ষণে মোবাইল ফোনের মালিক যে বাসে ছিলেন তা অদৃশ্য। অবশেষে পুলিশ সুপারের চালক দ্রম্নত তার গাড়ি চালিয়ে মুন্সিগঞ্জের ভবেরচর এলাকায় খোঁজ পান তিশা পরিবহনের সেই বাস। এ সময় বাসটি থামিয়ে প্রকৃত মালিকের হাতে দামি মোবাইল ফোন তুলে দেন শামীম হোসেন।

৩৫ বছরের ওই নারী বাসযাত্রী রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে তিশা পরিবহনের বাসে করে দাউদকান্দি যাচ্ছিলেন। রোখসানা বেগম নামে ওই নারী জানান, মাত্র কয়েক মাস আগে তার প্রবাসী স্বামী ৫০ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন সেট পাঠান। তিনি জানতেন না, জানালার পাশে বসে থাকার কারণে মোবাইল ফোন সেট ছিনতাই হবে। তিনি আরো জানান, ছিনতাই হওয়ার পর আশা করিনি আর ফেরত পাবো। এটি ফিরে পেয়ে বেজায় খুশি তিনি।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন বলেন, ঝুঁকি আছে জেনেও পুলিশে চাকরি করছি। তাই দায়িত্ব ভেবেই নির্দেশনা পেয়ে এই কাজটি করেছি।

মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, শামীম হোসেন বেশ সাহসী ছেলে। তাই ঘটনাটি দেখে তাকে মোবাইল ফোন ছিনতাইকারীকে ধরার নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ সুপার আরো বলেন, এমন সাহসী কাজের জন্য পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে শামীম হোসেনকে পুরস্কৃত করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার বাগাম্বড় গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শামীম হোসেন। তার মায়ের নাম শাহনাজ বেগম। মাত্র পাঁচবছর আগে শামীম হোসেন পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। এর মধ্যে গত আড়াই বছর ধরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের বডিগার্ড হিসেবে কাজ করছেন। (উৎস- কালেরকণ্ঠ)

আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:২৫ পিএম, ১৩ মার্চ ২০১৮, মঙ্গলবার
ডিএইচ