Home / বিনোদন / অভিনেত্রী আশার স্বপ্ন নিভল সড়কে
টেলিভিশন নাটকে, টেলিভিশন নাটকে

অভিনেত্রী আশার স্বপ্ন নিভল সড়কে

টেলিভিশন নাটকে প্রায় চার বছর আগে অভিনয় শুরু করেছিলেন আশা চৌধুরী (২২)। অভিনয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছিলেন। হয়েছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত অভিনেত্রীও। স্বপ্ন ছিল প্রধান চরিত্রে (নায়িকা) অভিনয় করে নিজেকে মেলে ধরার। সেই স্বপ্ন ধরাও দিয়েছিল।

প্রধান চরিত্রের নায়িকা হিসেবে নাটকের শুটিংও করেছেন তিনি। তবে সেই নাটক আর দেখে যেতে পারলেন না। গত সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়ে মোটরসাইকেল আরোহী আশার জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দিল বেপরোয়া ট্রাক।

পুলিশ কর্মকর্তা ও স্বজনরা বলছেন, এক আত্মীয়র সঙ্গে মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে সেখানে চাপা পড়েন আশা। এরপর পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে কোন ট্রাক, কিভাবে আশাকে ধাক্কা দিয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল আশার লাশ দাফন করা হয়েছে।

দারুস সালাম থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘এক আত্মীয়র মোটরসাইকেলে রূপনগরের বাসায় ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় আশা পড়ে গিয়ে চাপা পড়েন। মোটরসাইকেল যিনি চালাচ্ছিলেন তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। আশার পরিবারের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়নি। লাশ দাফন শেষে তারা এসে মামলা করলে খতিয়ে দেখা হবে।’

জানা গেছে, আশা পাবনার আবুল কালামের মেয়ে। চার বোনের মধ্যে আশা সবার বড়। রাজধানীতে থাকতেন রূপনগর আবাসিক এলাকার ২০ নম্বর রোডের ৩৭ নম্বর বাসায়। আশা ইডেন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) আইন বিষয়ে লেখাপড়া করছিলেন (সপ্তম সেমিস্টার)। সর্বশেষ তিনি রুমান রুনি পরিচালিত ‘দ্য রিভেঞ্জ’ নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

স্বজনরা জানান, রাতে বোর্ডবাজার এলাকা থেকে নিজেদের নির্মাণাধীন বাসার কাজ দেখভাল শেষে রূপনগরের বাসায় ফিরছিলেন আশা। তরুণ এই অভিনেত্রী মারা যাওয়ার দুই দিন আগে গত শুক্রবার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। নাটকে তাঁর সহশিল্পী ছিলেন সালাহউদ্দিন লাভলু ও আনিসুর রহমান মিলন। নাটকটির নির্মাতা রোমান রুনি আশার মৃত্যুর খবর পেয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ছুটে যান।

তিনি বলেন, ‘নায়িকার চরিত্রটি ঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আশা টানা এক সপ্তাহ পরিশ্রম করেছে। নাটকের প্রতিটি শর্ট শেষে সবাইকে জিজ্ঞাসা করেছে কেমন হয়েছে, ভালো না হলে সে আবার শর্ট দিতে চাইত। কাজের প্রতি সে খুব সিরিয়াস ছিল। তার স্বপ্ন ছিল চলচ্চিত্র নিয়ে। সেই পথে এগোনোর আগেই মারা গেল আশা।’

এদিকে আশার মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন ফেসবুকে লেখেন, ‘আমার ২০২১ সালের শুরুর কাজটি ছিল ১ ও ২ তারিখ। যেখানে আশা চৌধুরী নামের এই মেয়েটি অভিনয় করেছেন, তার মানে দুই দিন আগেই কাজ করেছি একসঙ্গে। এক সড়ক দুর্ঘটনায় আশা চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আশার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

বিনোদন ডেস্ক,৫ জানুয়ারি ২০২১