হাজীগঞ্জ

মা-ছেলের টিউশিনিতে বেঁচে থাকা হাজীগঞ্জের বেনজীর বিসিএসে উত্তীর্ণ

২০০৭ সালে এইচএসসি পাশ করেন বেনজীর আহমেদ। তখন টেলিফোন শিল্প সংস্থায় কর্মরত বাবা মো. মোসাদ্দক আলী চাকরি হারান। তারপর মধ্যবিত্ত সুখের সংসারে টানাপোড়ন দেখা দেয়।

বেনজিরেও বুয়েট ইঞ্জিনিয়ারং পড়ার স্বপ্ন ক্ষীণ হয়ে পড়ে। মায়ের প্রবোল উৎসাহে মনোবল ফিরে আসে বেনজীর আহমেদের। শুরু করেন টিউশনি। সাথে মা তাহমিনা আক্তারও টিউশনী করেন। মা-ছেলের টিউশিনি মুচড়ে পড়া সংসারে হাল ধরলেও বেনজি তার মেধাশক্তি হারাননি ও অধ্যয়নও বন্ধ করেননি। জয়ী হয়েছেন বেনজীর আহমেদ। জয়ী হলেন তাঁর মা তাহমিনা আক্তার।

বেনজীর আহমেদ চাঁদপুরের জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ৯ নং গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা রাইত বাড়ির কৃতী সন্তান। চলতি বছরে ৩৯ তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন বেনজীর আহমেদ। বর্তমানে তিনি বাত ব্যথা, ডায়বেটিস, চর্ম ও যৌন, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুরোগের চিকিৎসা দিয়েন আসছেন।

আজোপাড়া গ্রামের এই কৃতি সন্তান মা- বাবা ও বোন ইশরাত জাহানকে নিয়ে গাজীপুর জেলার টঙ্গী শহরে বসবাস করছেন। তার বোন ইশরাত জাহান বুধবার প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন ফুলেল শুভেচ্ছায় হাজীগঞ্জের এ কৃতী সন্তানকে বরণ করে নেন। ওই সময় উপস্থিত ছিলেন মা তাহমিনা আক্তার ও মামা আরিফ হোসেন।

অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে চট্টগ্রাম ফৌজদারহাট ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ডা. বেনজীর আহমেদ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করতে চাই। কর্ম জীবনের শুরু থেকে দারিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সকলের দোয়া চাই।

বেনজীরের গর্বিত মা তাহমিনা আক্তার বলেন, আমি পরিবার নিয়ে এখন সুখী। একটা সময় আমিও সন্তানের লেখাপড়া খরচ চালাতে হিমশিম খেতাম। তখন টিউশনি করেছি। আমার ছেলেও টিউশমি করে খরচা যোগান দিয়েছিল। বেনজির কোথাও কোচিং করতে পারেনি। নিজের অধম্য প্রচেষ্টায় ছোট বেনজীর আহমেদের এতোটুকু আসা।

প্রতিবেদক- মনিরুজ্জামান বাবলু, ১৮ জুলাই ২০১৯

Share