Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / ‘দস্যুতা মোকাবেলায় গুলি-বুলেটের প্রয়োজন হয় না, সৎ সাহসই যথেষ্ট’
দস্যুতা মোকাবেলায় গুলি-বুলেটের প্রয়োজন হয় না, সৎ সাহসই যথেষ্ট

‘দস্যুতা মোকাবেলায় গুলি-বুলেটের প্রয়োজন হয় না, সৎ সাহসই যথেষ্ট’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, ‘দস্যুতা মোকাবেলার জন্য গুলি-বুলেটের প্রয়োজন হয় না। শুধু সৎ সাহসই যথেষ্ট। কারো নির্ভরতা দুর্বলতা নয়। দুষ্টের দমন করতে যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রোববার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে শহরের ওয়্যালেস এলাকায় উপজেলা সমবায় মিলনায়তনে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চাঁদপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও স্থানীয় গণমাধ্যম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চাঁদপুর হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দূর্গ। এখানে আমাদের মাঝে কোনো বিবেদ বা বেধাভেদ নেই। আমরা চাই এখানকার আওয়ামী লীগের প্রতিটা নেতাকর্মীর মাঝে সু-সম্পর্ক থাকুক। দলের সাংগঠনিক শান্তি বিনষ্ট হোক এমন কিছু আমরা চাই না। চাঁদপুরের রাজনীতির খারাপ কোনো বিষয় নিয়ে পত্রিকার শিরোনাম হোক, এটা আমরা চাই না। আমরা চাই সমাজের নীতিবাচক বিষয়ে চাঁদপুর পত্রিকাগুলোতে সংবাদ শিরোনাম হোক।’

২৯ এপ্রিল শনিবার চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিনের ঘটনা যা হলো তা সত্যিই দুঃখজনক। সেদিন বিকেলে আমাদের দলের একজন নেতা বহিরাগত মানুষ এনে বর্ধিত সভার পরিস্থিতি এমন সৃষ্টি করেছে যে দেখে মনে হলো, এটি কোনো কাউন্সিল ছিলো। আমি সেখানে গিয়ে যা দেখলাম তাতে মনে হলো, বহিরাগত লোক দিয়ে কেউ চর দখল করতে এসেছে। অনুষ্ঠানটি ছিলো পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অথচ সেখানে একজন নেতার নামে শ্লোগান দেয়া হলো। মনে হলো যেনো তারা জোর করে কমিটির পদ-পদবি নিয়ে যাবে।’

ডা. দীপু মনি এমপি আরো বলেন, ‘ওইদিন আমি চন্দ্রা ইউনিয়ন থেকে কিছু অনুষ্ঠান শেষে পৌর পাঠাগারের বর্ধিত সভায় আসি। সেখানে বহিরাগতদের তুমুল হট্টগোল দেখে আমি সেখান থেকে চলে আসি। তাছাড়া সেদিন চাঁদপুর স্টেড়িয়ামে আমার একটি অনুষ্ঠান ছিলো। কোন অদৃশ্য শক্তির ইন্দনে সেদিন সংগঠনের শান্তি বিনষ্ট করে কেনো এমনটি করা হলো তা আমি বুজতে পারছি না। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের কাছে আমার অনুরোধ যারা এই পরিস্থিতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়াও সভাস্থলে আমি নিজেও যুবদল ও ছাত্র দলের ছেলে-পেলে দেখেছি। এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি শত হাজার মাইল হেঁটেছি। মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের মনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে মন জয় করেছি। একটি মহল লুটপাটের রাজনীতির মাধ্যমে জনগনের সাথে আমার বিরোধ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এবং সাধারণ জনগণ ও নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়েছে। তারা স্বাধীনতা বিরোধী, ব্যক্তি, গোষ্টি, ও ব্যবসায়িক স্বার্থ নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। আমি যখন তাদের অপকর্ম বুঝতে পেরেছি। তখন তাদের কাছ থেকে সরে এসেছি। আমি তাদেরকে বিশ্বাস করেছিলাম। আমার এ বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তারা নানা অপকর্ম করতে চেয়েছিল। তাহলে কাউকে বিশ্বাস করা কি আমার অপরাধ ছিলো? দীপু মনি সব সময় জনগণের পাশে ছিল। আগামীতেও থাকবে।’

জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলানো প্রসঙ্গে ডা. দীপু মনে বলেন, ‘যারা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছেন তারা কেউ আওয়ামী পরিবারের নয়। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারা করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তাদেরকে সনাক্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

চাঁদপুর ৩ আসনের সাংসদ আরো বলেন, ‘রাজনীতি করতে গিয়ে ৭৩ এর পর থেকে অনেক হুমকি-ধমকি শুনেছি। এখন আর নতুন করে শুনার কিছু নেই। আমার নির্বাচনী এলাকায় কোনো কাজে একটুও ব্যত্যয় হতে দেবো না।’

আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণের মাধ্যমে করে থাকেন। এ বিষয়ে কোন ধরনের অপপ্রচার করার সুযোগ নেই। প্রতিটি আসনের প্রার্থিতা তিনি পরিবর্তন ও যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমেই করেন। তাই নির্বাচনের পূর্বে কোন ধরনের ভুল অপপ্রচারে কান না দেওয়ার জন্য তিনি নেতৃবৃন্দকে আহবান জানান।’

সদর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানের সভাপতিত্বে সাধারন সস্পাদক আলী আরশাদ মিয়াজীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সস্পাদক সামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী, তাফাজ্জল হোসেন (এসডু) পাটওয়ারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ খান, যুগ্ম-সস্পাদক আ. আজিজ খান বাদল, প্রচার সস্পাদক আঃ সামাদ টুনু, মহিলা সস্পাদিকা আনোয়ারা বেগম, সদস্য বাবুল মিজি, ইউপি আ’লীগ নেতা আলী আরশাদ বেপারী, বালিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান, তরপুরচন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রাসেল গাজী, শাহমাহমুদপুরে সভাপতি আবুল কাশেম দুলু, মৈশাদীর সভাপতি নুরুল ইসলাম নুরু পাটওয়ারী, বিষ্ণপুর ইউনিয়ন সভাপতি নাছির উদ্দিন খান শামিম, আশিকাটির সাধারন সস্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজরাজেশ্বরের সাধারন সস্পাদক শাহাজাহান মোল্লা, হানারচরের ভারপ্রপ্ত সভাপতি আঃ ছাত্তার ঢ়াড়ী, ১২নং চান্দ্রার সাধারণ সস্পাদক খানজাহান আলী কালু পাটওয়ারী, ইব্রাহীমপুরের সভাপতি আবুল কাশেম, বাগাদীর যুগ্ম-আহবায়ক লিটন খান, সদর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হুমায়ুন কবির সুমন, ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম রেজওয়ান, সাধারণ সস্পাদক নাছির হোসেন গাজী প্রমুখ।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম ও মাজহারুল ইসলাম অনিক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ৫০ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০১৭, রোববার
ডিএইচ

Leave a Reply