Home / সারাদেশ / লাখ টাকা নয়, ১শ’ টাকায় ৩৪ জনকে পুলিশে চাকরি দিলেন এসপি
লাখ টাকা নয়, ১শ’ টাকায় ৩৪ জনকে পুলিশে চাকরি দিলেন এসপি

লাখ টাকা নয়, ১শ’ টাকায় ৩৪ জনকে পুলিশে চাকরি দিলেন এসপি

‘পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল (সিপাহী) পদে নিয়োগ চলছে। আপনার সন্তানকে স্থানীয় থানায় পাঠান। টাকা ছাড়া নাকি পুলিশে চাকরি হয় না। আমি দেখাতে চাই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দুর্নীতি মুক্ত। লাখ টাকা নয়, একশত টাকা হলেই চাকরি হবে পুলিশের। অতিরিক্ত অর্থ নয়, যোগ্যদের চাকরি হবে। চাপ প্রয়োগ বা অর্থ লেনদেনকারীর নিয়োগ বাতিল করা হবে।’

সম্প্রতি নবাবগঞ্জের পিকেবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে এভাবেই কথা দিয়েছিলেন ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ মিজান শাফিউর রহমান।

অবশেষে তিনি কথা রাখলেন। জনপ্রতি মাত্র এক’শ টাকার বিনিময়ে পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পেলেন ঢাকার নবাবগঞ্জের ৩৪ জন নারী-পুরুষ। এরমধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। কনস্টেবল পদে সম্প্রতি তাদের চাকরি হয়। এদের অধিকাংশই সাধারণ পরিবারের সন্তান বলে জানা যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিয়োগ পাওয়ার পর কয়েকজন যুবক নবাবগঞ্জ থানার ওসি মোস্তফা কামালের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন। এসময় তারা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশের স্বার্থে জীবন বাজি রাখার শপথ করেন।

সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নবাবগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল শোল্লা ইউনিয়নের দত্তখণ্ড গ্রামের কৃষক মো. ফরহাদ হোসেন ছেলে মো. শামীম হোসেন জানান, লোক মুখে প্রচলন ছিল লাখ টাকা ছাড়া নাকি পুলিশে নিয়োগ হয় না। আমার ধারণা বদলে গেছে। আমি টাকা উপার্জন নয়; দেশের সেবা করতে চাই।

একই ইউনিয়নের সিংড়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি জয়দেব মণ্ডলের ছেলে কৃষ্ণগোপাল মণ্ডল জানান, আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান। উচ্চ পর্যায়ে কোন স্বজন নেই। নাম মাত্র অর্থে সরকারি চাকরি পাব বিশ্বাস ছিল না। তা সম্ভব হয়েছে এসপি (পুলিশ সুপার) স্যারের জন্য। তিনি দেখিয়ে দিয়েছে পুলিশ বাহিনীর সুনাম কিভাবে অর্জন করতে হয়।

প্রায় একই ভাবে পুলিশ বাহিনীর প্রতি সম্মান জানান সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নয়নশ্রী ইউনিয়নের বিপ্রতাশুল্যা গ্রামের কৃষক ভোলানাথ দাসের ছেলে তুষার দাসসহ মো. ইমরান হোসেন, মো. আরিফুল ইসলাম, মো. ফয়সাল আহমেদ, ইমরান খান।

এসময় থানার ওসি মোস্তফা কামাল, সেকেন্ড অফিসার (উপপরিদর্শক) সফিকুল ইসলাম সুমন তাদের দিক প্রয়োজনীয় নির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন।

পুলিশের ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা শাহ মিজান শাফিউর রহমানের। ২০০১ সালে পুলিশে যোগদান করে দিনাজপুর জেলা, সিএমপি, র‌্যাব, এসবি ও যশোর জেলায় দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে রয়েছে দু’বার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে ‘জাতিসংঘ শান্তি পদক’ প্রাপ্তি।

পুলিশ সুপার হিসেবে লক্ষ্মীপুর জেলায় সন্ত্রাস ও গডফাদার দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার স্বাক্ষর রাখেন শাহ মিজান শাফিউর রহমান। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগে উপ পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পালন করে বর্তমানে দেশের এক নম্বর জেলা ঢাকার এসপি হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। (আমাদের সময়)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:০০ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ

Leave a Reply