Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / হাজীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মালিক ও ভাড়াটিয়াদের বিক্ষোভ
আইন

হাজীগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মালিক ও ভাড়াটিয়াদের বিক্ষোভ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের সেন্দ্রা বাজারে জোরপূর্বক মার্কেট দখল, ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ ও মালামাল লুটপাটের অভিযোগ এনে এবং এর প্রতিবাদ জানিয়ে ন্যায় বিচার পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূমি ও মার্কেটের মালিকসহ ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীরা। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সেন্দ্রা দক্ষিণ বাজারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মামলা-হামলা, হুমকি-ধমকি ও হয়রানির অভিযোগও আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ভূমি ও মার্কেটের মালিক পক্ষে সাইফুল ইসলাম রনি ও সেলিম ভুঁইয়া এবং ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীদের পক্ষে সবুজ ফার্মেসীর সত্ত্বাধীকারী ডাঃ নাছিরুল্লাহ পাটওয়ারী রিপন ও টাচ ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম এন্ড ডেকোরেটরের সত্ত্বাধীকারী মোক্তার হোসেন। এসময় ভুক্তভোগীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে ভুঁইয়া মো. আলাউদ্দিন।

সেন্দ্রা দক্ষিণ বাজারের ভুক্তভোগী জমি ও মার্কেটের মালিক ও পূর্বের ভাড়াটিয়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন ফরিদগঞ্জ উপজেলার দিগধার গ্রামের আলহাজ¦ আ. মমিন ভুইয়ার বিরুদ্ধে করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে যারা বক্তব্য দিয়েছেন, তারা সবাই মার্কেট দখল ও ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদের জন্য মমিন ভুইয়ার পক্ষে প্রত্যক্ষ কাজ ও শেল্টার দেওয়ার জন্য হাজীগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান চৌধুরীকে দোষারোপ করেন।

ভূমি ও মার্কেটের মালিক সাইফুল ইসলাম রনি ও সেলিম ভুঁইয়া বলেন, আমরা ২৪.২৫ শতাংশ ভূমি ও মার্কেটের মালিক (রনি গং ২১.২৫ ও সেলিম ভুইয়া ৩ শতাংশ)। আলহাজ¦ আ. মমিন ভুঁইয়া ২০২২ সালে এক রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ভাড়াটিয়াদের মালামাল লুটপাট করে এবং মার্কেট ভাংচুর করে দখলে নেয়। এরপর আমরা বাধা দিলে আমাদের (মালিক ও ভাড়াটিয়া) বিরুদ্ধে ১৪৫, সিআর ও নন জিআরসহ একে একে ৯টি মামলা দেয়।

রনি বলেন, আমাদের মামলা হাইকোর্টে চলমান এবং ভূমি ও মার্কেটের উপর জজকোর্ট ও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অথচ মমিন ভুইয়া সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্ত্রাসী ভাড়া করে তিনি নতুন করে মার্কেট নির্মাণ ও ভাড়া দিয়েছেন। আমরা স্থানীয় শালিসি, থানা ও আদালতে গিয়েছি। কিন্তু তাদের ক্ষমতার কাছে আমরা জিম্মি। যেহেতু দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। তা আমরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ন্যায়-বিচার প্রত্যাশা করি।

ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী ডাঃ নাছিরুল্লাহ পাটওয়ারী রিপন ও মোক্তার হোসেন বলেন, একদিন সকালে দোকানে এসে দেখি, আমাদের দোকান নেই। বেশিরভাগ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে। দোকানের আসবাবপত্র ভাংচুর করে কিছু আসবাবপত্র ও মালামাল খোলামেলা, কিছু বস্তায় ভরে বাহিরে ফেলে রাখা হয়েছে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয়েছি। আবার মমিন ভুইয়া মামলা দিয়েও আমাদের হয়রানি করছেন। তাই, আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।

একই সময়ে ভুঁইয়া মো. আলাউদ্দিন বলেন, রনি, সেলিম ভুইয়া, রিপন ও মোক্তার হোসেনসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে বিচারপ্রার্থী হলে এলাকার গণ্যমান্য হিসেবে আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মমিন ভুইয়া বার বার সময় নিয়েও তিনি কালক্ষেপন করেছেন। এরপর তিনি একদিন রাতে সন্ত্রাসী ভাড়া করে জোরপূর্বক মার্কেট দখল করেন এবং ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করেন।

ইউপি সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রনি, সেলিম ভুইয়া, রিপন ও মোক্তার হোসেনসহ ক্ষতিগ্রস্তরা মেম্বার (ইউপি সদস্য) হিসেবে আমার কাছে এসেছেন। আমি মমিন ভুইয়াসহ আব্দুর রহমান চৌধুরীর সাথে কয়েকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা সহযোগিতা না করার কারণে আমরা বিষয়টির সমাধান করতে পারিনি। পরে দেখলাম তারা পুরো জায়গা ও মার্কেট দখল করে নতুন করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন।

তিনি বলেন, আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে চাই, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তপূর্বক ন্যায় বিচার করেন। যেন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন উপকৃত হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৮ আগস্ট ২০২৪