কোরবানির ঈদে যেসব মসলার চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি—তাদের মধ্যে ওপরের দিকে থাকে পেঁয়াজ ও রসুন। অথচ ঈদের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে পণ্য দুটির দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৫ থেকে ২০ টাকা ও রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া ডিমের দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরো বেড়েছে। বেড়েছে সবজির দামও।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগর, কাওরান বাজার ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তীব্র গরম ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। তবে পেঁয়াজ, রসুনের দাম কেন বেড়েছে—এর কোনো যৌক্তিক কারণ জানাতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর খুচরাবাজারে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ গত সপ্তাহে তা যথাক্রমে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা ও ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া, গতকাল বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২০০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২২০ টাকায়। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে পণ্য দুটির দাম বাড়ার তথ্য জানিয়েছে।
তবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম কোনোভাবেই ৬৫ টাকা ৪০ পয়সার বেশি হতে পারে না। আর দেশি রসুনের দাম হবে প্রতি কেজি ১২০ টাকা ৮১ পয়সা। সরকারের এ দপ্তরটি পেঁয়াজ ও রসুনের উৎপাদন খরচের ওপর ভিত্তি করে চলতি বছরের ১৫ মার্চ এর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু রাজধানীর কোনো খুচরা বাজারেই এ দরে পেঁয়াজ, রসুন বিক্রি হচ্ছে না।
পেঁয়াজ, রসুনের পাশাপাশি বাজারে সবজির দামও বেড়েছে। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে আলু ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, করল্লা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ থেকে ১১০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, টম্যাটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম আরো বেড়েছে। গতকাল খুচরাবাজারে প্রতি হালি ডিম ৫৩ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে আরো বেশি দামে ডিম বিক্রি হতে দেখা গেছে। অথচ মাত্র এক মাস আগে প্রতি হালি ডিম ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরও জানিয়েছে, কোনোভাবেই এক পিচ ডিমের দাম ১০ টাকা ৪৯ পয়সার বেশি হতে পারবে না।
ডিমের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, একটি সিন্ডিকেট কোল্ডস্টোরেজে ডিম রেখে এখন তা বেশি দামে বিক্রি করছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ, এসব ডিম কম দামে কিনে আগেই কোল্ডস্টোরেজে রাখা হয়েছিল। এদিকে ডিমের দাম বাড়লেও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগী ১৮৫ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ১ জুন ২০২৪