কৃষি শ্রমিক সংকট ও দিন মজুরি বৃদ্ধির প্রভাবে বেকায়দায় পড়েছেন প্রান্তিক পর্যয়ের চাষিরা। অনেকেই অর্থাভাবে ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এমন হতাশায় থাকা মনির হোসেন নামের এক কৃষকের ধান কেটে ও মাড়াই করে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) মতলব উত্তর উপজেলার ৫ নং দূর্গাপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মনির হোসেন নামের এক প্রান্তিক কৃষকের ১৩ শতক জমির ধান কেটে দিয়েছেন উপজেলার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
জানাযায়,বৈশাখের অসহনীয় গরমের মধ্যেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি আসফাক চৌধুরী মাহি এবং চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের যৌথ নির্দেশনায় কৃষকের পাশে এগিয়ে এসেছে তৃণমূলের ছাত্রলীগ। মানবিক সহায়তামূলক এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির ১ নাম্বার সদস্য ছদরুল আমিন প্রধান ও মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য জুবায়ের হোসেন জনিসহ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চলতি বোরো মৌসুমে ক্ষেত থেকে ধান কেটে কৃষকের ঘরে নিরাপদে পৌঁছে দিতে নির্দেশনা দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় কৃষকের ধান কাটায় অংশ নেন মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির ১ নং সদস্য ছদরুল আমিন প্রধান, মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য জুবায়ের হোসেন জনি, ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বি, জহিরাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা নাঈম হোসেন হৃদয়, বাগানবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা, মহিবুল্লাহ, কাজী শরিফ, মোহনপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা সাকিব, দূর্গাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা নাদিম, সাইমন, লিমনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা কৃষকের এ ধান কাটা কাজে অংশ নেন।
কৃষক মনির হোসেন মিয়া বলেন, ক্ষেতের ধান পাকার পরও তা কাটতে না পারায় দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির কারণে ক্ষতির শঙ্কাও করেছিলাম।
তিনি আরো বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ছাত্রলীগ অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিচ্ছে। তা দেখে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অন্তত ৫০ জন আমার ক্ষেতের ধান কেটে দিয়েছে। এজন্য আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে কৃতজ্ঞ।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মনির হোসেন মিয়া বলেন, ছেলেগুলো গরমে ঘেমে একাকার হলেও ধান কাটা বন্ধ রাখেনি। আমার ১৩ শতক জমির সব ধান কেটেছে। শুধু তাই নয়, ধান কাটা শেষে নিমিষেই তা মাড়াই করে বাড়ির গোলা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। আমার কোনো খরচ হয়নি। তাদের আন্তরিকতায় আমি প্রধানমন্ত্রীসহ ছাত্রলীগের সকলের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
এ সময় মতলব উত্তর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির ১ নং সদস্য ছদরুল আমিন প্রধান বলেন, দেশরত্ন-জননেত্রী শেখ হাসিনা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আসফাক চৌধুরী মাহি এবং চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের যৌথ নির্দেশনায় আমরা ছাত্রলীগ কৃষকের পাশে আছি। কৃষক মনির হোসেন মিয়ার সংকট ও সমস্যার কথা জানতে পেরে তার ১৩ শতক জমির ধান কাটা শেষ করে মাড়াই করে দেওয়া হয়েছে।
ছদরুল আমিন আরো বলেন, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করে গেছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং আগামীতেও থাকবে। আমরা করোনা মহামারির মধ্যেও কৃষকের জমির ধান কাটা ও মাড়াই করে দিয়েছি। শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে অসহায় রোগীদের আর্থিক ও ওষুধসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখনো আমরা বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, ভবিষ্যতেও যেকোনো দুর্যোগে অসহায় কৃষক ও অসহায় মানুষের পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।
প্রতবেদক: খান মোহাম্মদ কামাল, ১ মে ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur