গত তিন-চার দিন আগে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫-৫০ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার তা বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকায়। আর প্রতিকেজি খোলা সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৪৩-১৪৫ টাকা। গতকাল তা ১৪৮-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। একইভাবে ১৩৪ টাকার পাম তেল ১৩৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এর পাশাপাশি চিনি বিক্রি হয়েছে ৮০-৯০ টাকায়। নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। দামের বাড়ার রাশ টানতে আগামী সোমবার নিত্যপণ্যের ব্যবসায়ীদের ডেকেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে গতকাল প্রতিমণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) সয়াবিন তেল পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫ হাজার ২০০ টাকা। একইভাবে ৪ হাজার ৮০০ টাকার সুপার পাম ৪ হাজার ৯৬০ টাকা এবং ৪ হাজার ৭০০ টাকার পাম তেল ৪ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে প্রতিকেজির দাম পড়ছে যথাক্রমে ১৪৪ টাকা ৬৯ পয়সা, ১৩২ টাকা ৯০ পয়সা ও ১২৯ টাকা ৯৬ পয়সা। আর চিনি বিক্রি হয়েছে প্রতিমণ ২ হাজার ৮৫০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২ হাজার ৭৫০ টাকা।
গতকাল পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে সকালে পেঁয়াজের দাম চড়া থাকলেও বিকেলের দিকে কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা কমে আসে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তবে খুচরা বাজারে উল্টো দাম বেড়েছে। শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল সকালের দিকে পেঁয়াজের দাম বাড়তি থাকলেও বিকেলে ক্রেতা কম থাকায় কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬২-৬৩ টাকায়। বিকেলে তা কমে ৫৭-৫৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫৩-৫৪ টাকায়। বিকেলে তা ৪৮-৪৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৫-৫০ টাকা। গতকাল তা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চিনির দাম ছিল ৭৫-৮০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ৭৮-৮০ টাকায় এবং পাম তেল বিক্রি হয়েছিল ১২৮-১৩০ টাকা। যা গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২৮-১৩৫ টাকা।
চিনির অস্বাভাবিক বাড়ার জন্য আমদানিকারকেরা আন্তর্জাতিক বাজারকে দায়ী করছেন। সরকার চিনি-তেলের দাম বেঁধে দিলেও তা কেউ মানছে না। এই প্রশ্নের জবাবে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, সরকার যখন যে দাম বেঁধে দিয়েছে তারা সেভাবেই পণ্য বিক্রি করছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজের গাড়ি নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য ফেরিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানিতে উৎসাহ না দিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমাতে বাধ্য করছে। এভাবে বাধ্য করে পণ্যের দাম কমানো সম্ভব না। ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানিতে উৎসাহ দেওয়া হলে বাজারে সংকট হবে না বলে জানান তিনি
।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, সরকার বাজারে দাম বেঁধে দেওয়ার পরও ব্যবসায়ীরা সেটি অনুসরণের চেষ্টা করেন না। বেঁধে দেওয়া না হলে দাম আরও বেড়ে যেতে বলে মনে করেন তিনি।