Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলব উত্তরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
স্বাস্থ্যবিধি

মতলব উত্তরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ইমামপুর পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান চলছে। করোনা প্রতিরোধে গেটে ও প্রতিটি ক্লাসরুমে যথাযথ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সকলে মাস্ক পরিধান করে স্কুলে আসেন।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইমামপুর পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, গেটেই সবাইকে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, হ্যান্ড স্যানেটাইজার দেওয়া হচ্ছে প্রত্যেকের হাতে হাতে এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক সবাই মাস্ক পড়ে ক্লাসে এসেছেন। এবং দুরত্ব বজায় রেখে বেঞ্চ সাজানো হয়েছে। বিদ্যালয়ে এ দিন শতকরা ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ১০ম দিনের স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে প্রতিষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে প্রবেশ করছে। পথে পথে মেয়েরা স্কুলের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাচ্ছে। কেউ সহপাঠীদের সাথে দল বেঁধে। কেউবা একাকী। তাদের পরনে স্কুলপোশাক ও পিঠে ব্যাগ। এসময় তাদের চেহারায় ছিল খুশির ঝিলিক। তাদের মাঝে প্যাণচাঞ্চণ্য দেখা গেছে। শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বেঞ্চে দুইজন করে বসতে দেখা গেছে।

দীর্ঘ দেড় বছর পর ক্লাসে ফিরতে পেরে শিক্ষার্থীরা উচ্ছসিত বলে জানান কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা জানিয়েছে সুখকর অনুভূতির কথা। স্কুলে আসতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। সবার সাথে সবার দেখা হচ্ছে। করোনা কালীন সময় বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে হাপিয়ে উঠেছিলাম। আগের মত স্কুলে আসতে পেরে খুবই উৎফুল্ল লাগছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়াতে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমরা সর্বদা স্বাস্থ্য বিধি মেনে ক্লাশ করছি। পাশাপাশি লেখাপড়া পিছিয়ে পড়ার যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গেল। এভাবে নিয়ম মেনে ক্লাস না হলে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে মন্তব্য করে কয়েকজন শিক্ষার্থী।

তবে ক্লাসে ফেরার আনন্দ কেবল শিক্ষার্থীদেরই নয়, সমানভাবে উচ্ছ্বসিত শিক্ষকরাও। দীর্ঘ সময়ের করোনা মহামারিতে নিম্নমুখী হওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আবারও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরতে পারার ভিন্ন অনুভূতির কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরাও। শিক্ষকরা বলছেন, মহামারি পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরছেন তারা। ক্লাসে ফেরার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের একঘেয়েমিতা, হতাশা আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে। সরকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন তারা।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী (ক্লাশ রোল-৪) পুস্প রাণী জানায়, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাসায় থেকে হাপিয়ে উঠেছিলাম। স্কুল চালু হওয়ায় খুব ভালো লাগছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদেরকে মাস্ক পড়ে, হাত ধুয়ে এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে শ্রেণিকক্ষে বসতে হচ্ছে। এরপরও স্কুলে ফিরতে পারায় তারা খুব খুশি। পাশাপাশি লেখাপড়া পিছিয়ে পড়ার যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকে এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গেল। এভাবে নিয়ম মেনে ক্লাস না হলে তাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে মন্তব্য করে এই শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমাদের বিদ্যালয়ে সরকারি সকল সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান করনো হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকল ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি। মাস্ক বাধ্যতামুলক ও দুরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যাতে আমাদের সকলকে সুস্থ ও করোনা থেকে মুক্ত রাখেন। চলতি মাসের ১২ সেপ্টেম্র থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুশৃংখলভাবে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করানো হচ্ছে। প্রথম দিন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ফিরে আসার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন করা হয়েছে। তারপরের দিন সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) থেকেই পুরোদমে চালু হয়েছে ক্লাশ। তবে তিনি অভিভাবকদেরকে তাদের সন্তানরা কেউ অসুস্থ হলে স্কুল কতর্ৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ জানান। তাছাড় করোনার কারনে যাতে শিক্ষার্থীদের স্কুল আবার বন্ধ না যায় সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকার অনুরোধ জানান।

উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই ইমামপুর পল্লীমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সহস্রাধিক। তারমধ্যে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ২শ’১৭ জন। এদিন (মঙ্গলবার) ২১ সেপ্টেম্বর ক্লাশ হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১২ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। সকাল ১১ টা ১৫ মিনিট থেকে ১২ টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চলে দশম শ্রেণির ক্লাশ। আর ১২টা ৪৫ থেকে ২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক্লাশ।

নিজস্ব প্রতিবেদক