দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় আঘাত করেছে চলতি বছর।প্রতিদিন অর্ধশতাধিক মৃত্যু হচ্ছে।গত বছর করোনার প্রথম আঘাতেও এত মৃত্যু দেখেনি মানুষ।এবার একদিনে সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এপ্রিলে টানা চারদিন দৈনিক শতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। সংক্রমণও ছিল রেকর্ড সংখ্যক। সবর্শেষ আজ শনিবারও ৬০ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনার এই পরিস্থিতি ঠেকাতে গত ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লকডাউন দেয় সরকার। কিন্তু পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে আরও এক সপ্তাহের জন্য সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।পরে সেটি দুই দফায় বর্ধিত করা হয় ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত।তাতে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এই কঠোর লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানো হয়, যা চলবে আগামী ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত।এরমধ্যে গণপরিবহনও অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার শর্তে চালু করলেও তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
এদিকে কঠোর লকডাউন চলাকালীন ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে দেশের সব শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেওয়া হয় গত ২৫ এপ্রিল থেকে।সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল কিংবা দোকানপাটে যাতায়াত করতে হবে।কিন্তু কিছুই মানছেন না বিক্রেতা ও ক্রেতারা।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের সব শপিংমল, মার্কেটে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা।স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ক্রেতাদের মার্কেট ও বিপণিবিতানে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনের জন্য পছন্দের জামা-কাপড় কিনতে প্রখর রোদ ও করোনা ভীতিকে উপেক্ষা করে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে রাজধানীসহ দেশের মার্কেটগুলোতে।মানুষের ভিড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই।
শুধু মার্কেটই নয়, ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজও রাজধানীর সব সড়কে মানুষের ভিড়।ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকসায় যানজট লেগে যাচ্ছে প্রতিটি সড়ক।বিশেষ করে নিউমার্কেট, ধানমণ্ডি ও গাউছিয়া মার্কেট এলাকাগুলো মানুষের প্রচণ্ড ভিড়।
শনিবার (১ মে) রাজধানীর গাউছিয়া সুপার মার্কেট, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, এলিফ্যান্ট রোড, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, নূর ম্যানশন, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নুরজাহান মার্কেট ও আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটজুড়েই ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
ঈদের শপিং করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি।রয়েছে ছোট্ট শিশু-কিশোররাও।এতে ওইসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও অনেক খুশি। কারণ করোনার কারণে এতদিন বিক্রি কম হলেও এখন বেড়েছে। ধম ফেলার সময় পাচ্ছেন না তারা। দীর্ঘদিন ব্যবসার মন্দা থাকার পর ক্রেতাদের এমন উপস্থিতি এবারের ঈদে রেকর্ডসংখ্যক বিক্রি হবে বলে আশা করছেন এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের শাড়ি-কাপড় ব্যবসায়ী হাসিনুর রফিক বলেন, দীর্ঘদিন ব্যবসার মন্দা থাকার পর ক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। আশা করছি, আগের পুরনো অবস্থা কেটে যাবে এবং । গতবার রোজার ঈদের আগে দোকান খুলে দিলেও এত বিক্রি হয়নি। কিন্তু এবার ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশ ভালো। আশা করছি, ঈদের আগে বিক্রি আরও জমজমাট হবে।
তবে গণপরিবহন চালু না থাকায় বেশ ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সিএনজি কিংবা রিকশায় বেশি ভাড়া দিয়ে শপিংয়ে যেতে হচ্ছে ক্রেতাদের।এ অবস্থায় সরকার গণপরিবহন চালু করার চিন্তাভাবনা করছে বলে শনিবার জানালেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঢাকা ব্যুরো চীফ