পিলখানা ট্র্যাজেডির সেই বিভীষিকাময় দিন আজ। ১১ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিজিবি কর্মকর্তাদের রক্তে ভেসে গিয়েছিল পিলখানা। পিলখানায় সাবেক বিডিআর ও বর্তমান বিজিবি সদর দপ্তরে ঘটে মর্মান্তিক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে একদল বিদ্রোহী তৎকালীন বিডিআর’র সৈনিক দরবার হলে চলমান বার্ষিক দরবারে ঢুকে যায়। অস্ত্র তাক করা হয় মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের বুকে।
এভাবেই শুরু হয় ইতিহাসের সেই নৃশংস ঘটনার। বিডিআরের বিদ্রোহী সৈনিকরা সেনা কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করে তাদের পরিবারকে জিম্মি করে রাখে। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর বীভৎস ঘটনার সৃষ্টি করে তারা।
এ সময় তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সিপাহি সেলিম রেজা, কাজল আলী, আবদুল বাছেত, শামীম আল মামুন জুয়েল ও ল্যান্স নায়েক ইকরামসহ ঘাতকদের হিংস্র তাণ্ডবে সেনা পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজার হাজার সাধারণ বিডিআর সদস্যের পরিবার। বিদ্রোহীদের বিচার, সংশ্লিষ্টদের সাহায্য-সহযোগিতার পরও স্বজনহারাদের কান্না থামেনি আজও। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্ত ১৫২ জনকে ফাঁসির রায় দেয়া হলেও সেটি এখনো কার্যকর হয়নি।
আজ এবং আগামীকাল তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
গতকাল সোমবার বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর, পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদদের স্মরণে ২৫ ফেব্রুয়ারি (আজ) শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হবে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরসহ সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটে খতমে কোরআন, বিজিবির সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) যেসব স্থানে রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন হয় সেসব স্থানে বিজিবি পতাকা অর্ধনিমিত থাকবে এবং বিজিবির সব সদস্য কালো ব্যাজ ধারণ করবেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি বাদ আসর পিলখানার কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, শহীদদের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরত সব অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন।
নিউজ ডেস্ক: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০