Home / সারাদেশ / ১০ হাজার জামাইকে বরণ অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস
Jami-Boron
অপু বিশ্বাসের জামাই বরণ

১০ হাজার জামাইকে বরণ অনুষ্ঠানে অপু বিশ্বাস

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নে ১০ হাজার জামাইকে বরণের মধ্য দিয়ে জামাই মেলা ও বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন শনিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে ১০ হাজার গামছা দিয়ে জামাইদের বরণ করেন মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জামাইদের প্রতীকী শ্বশুর আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিক।

বিকেলে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হন চিত্র নায়িকা অপু বিশ্বাস। তিনি অনুষ্ঠানে আগত ১০ হাজার জামাইকে অভিবাদন জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জয়পুরহাট মাত্রাই মডেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহবুব হাসান, মাত্রাই সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ ফরিদ উদ্দিন আখতার, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের মুকুল, স্থানীয় সমাজ কর্মী ও ব্যবসায়ী নেতা আনোয়ার হোসেন, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সহস্রাধিক মানুষ।

পরে দিনব্যাপি পুঁথি পাঠ, বাউল গান, সারি গান, মুর্শিদী গান, বেঁদে-বেদেনীর সাপ খেলা, বদন খেলা, বউচি খেলা, লাঠি খেলা, নাগরদোলাসহ গ্রামীণ ঐতিহ্য প্রদর্শিত হয়।

মাত্রাই ইউনিয়নের নিমন্ত্রিত ১০ হাজার মেয়ে ও জামাই বৈশাখের দাওয়াত পেয়ে বেশ নেচে গেয়ে প্রাণের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অনেকেই ব্যক্ত করলেন প্রাণের অনুভূতি। একই ইউনিয়নের গাড়ইল গ্রামের স্থানীয় জামাতা ফরিদ আহম্মেদ, পাশের আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বোরাই গ্রামের বাসিন্দা ও মাত্রাই ইউনিয়নের শালগুন গ্রামের আব্দুল গনির জামাতা সুজাউল ইসলাম, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার বাসিন্দা ও একই ইউনিয়নের শিশ সমুদ্দুর গ্রামের জামাতা আব্দুস সালাম, একই গ্রামের অপর জামাতা কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা এলাকার বাসিন্দা ফারুখ হোসেনসহ অনেক জামাতা জানান, দেশের মধ্যে এমন আয়োজন রয়েছে বলে তাদের জানা নেই। প্রীতিভোজ ছাড়াও জামাইদের বিনোদন দিতে হালের অন্যতম শীর্ষ চলচ্চিত্র নায়িকা অপু বিশ্বাসের অভিবাদন দেয়ায় তাদের বেশ মুগ্ধ করেছে বলেও জানান নিমন্ত্রিত জামাইরা।

অাবার অনেক জামাই অভিযোগে জানান, বিয়ের পর অনেকেই শ্বশুরবাড়িতে তেমন আদর পাননি। আজ তাদের প্রতিকী শ্বশুর ইউপি চেয়ারম্যান যেভাবে তাদের আপ্যায়িত করছেন, তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এই ইউপির অনেক মেয়ে যাদের দীর্ঘদিন বিয়ের পর আসা হয়নি বাপের বাড়িতে তাদের মধ্যে মাত্রাই গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের মেয়ে বিধবা আনোয়ারা পারভীন কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, আব্বা মারা যাওয়ার পর কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। প্রতিকী বাবা এই ইউপি চেয়ারম্যান গত বছর থেকে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যে আদর-যত্ন করছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন- তা ভুলার মত নয়।

বগুড়া সদরের আবু জাফর, সৌদী প্রবাসী আব্দুল হাকিমসহ অনেক জামাই বলেন, নিজের শ্বশুর এভাবে দাওয়াত না দিতে পারলেও মাত্রায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমাদের দাওয়াত কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানান। আমরা ১০ হাজার জামাই একত্রিত হতে পেরে আনন্দিত। মনে হচ্ছে আমরা অনেকগুলো ভায়রা ভাই একত্রিত হলাম।

মাত্রাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিক বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষ বড় স্বার্থপর হচ্ছে। তাই মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি আর শেকড়ের টানেই এই সামগ্রিক আয়োজন। এমন আয়োজনের মাধ্যমে একদিকে পারিবারিক সম্পর্ক উন্নয়ন হয়, অন্যদিকে সামাজিকভাবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাও সম্ভব বলেও জানান চেয়ারম্যান লজিক।

বার্তা কক্ষ