Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জে অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রীকে তিনদিন থানায়
হাজীগঞ্জে অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রীকে তিনদিন থানায়

হাজীগঞ্জে অপহরণের শিকার স্কুলছাত্রীকে তিনদিন থানায়

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক | আপডেট: ০৭:৫৬ অপরাহ্ণ, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫, রোববার

চাঁদপুরের অন্তঃসত্ত্বা এক স্কুলছাত্রীকে (১৩) কাছের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে (সেফ হোমে) রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা যুগ্ম দায়রা জজ মামুনুর রশিদ।

জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এ স্কুলছাত্রীকে তিন দিন ধরে থানা হেফাজতে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার থানা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারিক হাকিম তাছলিমা শারমিন।

রবিবার দুপুরে পুলিশ দায়রা জজের আদালতে ওই স্কুলছাত্রীকে হাজির করা হলে এ নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মোতাবেক মেয়েটিকে আমার হেফাজতে রেখেছি। দেশে তিনটি সেফ হোম সেন্টার রয়েছে। নিকটবর্তী সেফ হোম সেন্টারে মেয়েটিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করব।’

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় চাঁদপুরের বিচারিক হাকিম তাছলিমা শারমিনের আদালতে ওই ছাত্রীকে হাজির করা হয়। সেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় মেয়েটির জবানবন্দী রেকর্ড করেন বিচারক।’

পুলিশ জানায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা মেয়েটিকে গত ১০ মার্চ অপহরণ করেন আল আমিন নামের দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়। এ ঘটনায় মেয়ের মা ১ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। এতে আল আমিন, তার বাবা মো. সফিক, মা লুৎফা বেগম ও বোন রুনা আক্তারকে আসামি করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ বাজারে এ বিষয়ে দু’পক্ষের সালিশ চলাকালে পুলিশ সেখান থেকে সফিককে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যমতে গাজীপুর থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। তবে আল আমিন পলাতক রয়েছেন।

মেয়েটি আদালতকে জানায়, সে স্বেচ্ছায় আল আমিনের সঙ্গে চলে গিয়েছিল। পরে তারা বিয়ে করে গাজীপুরে আল আমিনের বোনের বাসায় থাকতে শুরু করে। এখন সে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চায় না।

তিনদিন থানায় রাখার পর ভিকটিমকে কোর্টে হাজির করা এটি আইনের পরিপন্থি বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান।

রোববার হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ্জাহান ভূঁইয়ার রুমেই মেয়ে ও তাঁর মায়ের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট মেয়েটিকে এখানে রাখার জন্য বলেছেন।’

এ নিয়ে অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘ভিকটিমকে কোনোভাবেই খানায় রাখা ঠিক হয়নি।এটি আইনের পরিপন্থি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত নীতিমালায় কোনো ভিকটিমকে সংশোধনের জন্য সেফ হোমে রাখার জন্য বলা হয়েছে।’

ওসি শাহ আলম জানান, মেয়েটি তাঁর মায়ের সাথে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তার জবানবন্দি নেওয়ার পর আদালত তাকে থানায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তার হেফাজতে রেখে রোববার (আজ) আবার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ বিষয়ে এলিনা খান বলেন, ‘দ্রুত মেয়েটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের শেল্টার হোম কিংবা যেসব এনজিও শেল্টার হোমের ব্যবস্থা রাখেন তাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া উচিৎ ছিল। যেহেতু মেয়েটি তার মায়ের সাথে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, তাই তার মায়ের সাথে রাখাও ঠিক হয়নি। কারণ মা তার মেয়েকে বুঝিয়ে সাথে নিয়ে যেতে রাজি করাতে পারে।’

তবে ওসি শাহ আলম বলেন, ‘সাধারণত এ ধরনের ভিকটিমকে মহিলা হাজতখানায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তবে এখানে তার সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করা হয়েছে। মেযেটির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখন (রোববার) তাকে আদালতে নেওয়া হয়েছে।’

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫