স্বামীর ৩ বিয়ে : নির্যাতন সইতে না পেরে খুন করে মুণ্ডু গর্তে

স্বামীর তিন বিয়ে, তার ওপর প্রতিদিন মারধর। নির্যাতন ভারে-ভারন্ত হয়ে ওঠলে স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরেই ভাবছিলেন এর একটা বিহিত করেই ছাড়বেন। মাসখানেক ধরে পরিকল্পনাও করেন স্ত্রী। অবশেষে গত ৪ নভেম্বর ভোররাতে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তিনি। প্রথমে স্বামীর দেহ দু’খণ্ড করেন। এরপর মুণ্ডু পুঁতে রাখেন বাড়ির পাশে একটি টিলার গর্তে। পরে মুণ্ডুবিহীন দেহ ফেলে আসেন জঙ্গলে। ‘নির্যাতন’ সইতে না পেরে এমন লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড ঘটান পারভীন আক্তার (৩৬)।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সিলেট শহরতলীর খাদিমপাড়ার মোকামেরগুল এলাকায়। তবে স্বামীকে খুন করার অপরাধে পারভীন আক্তারকে আটক করেছে শাহপরান থানা পুলিশ।

জানা যায়, নিহত আলী হোসেন গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে। তিনি মোকামেরগুল এলাকায় স্ত্রী পারভীন আক্তারকে নিয়ে বসবাস করছিলেন।

অপরদিকে আটক পারভীন আক্তার সিলেট সদর উপজেলার শাহপরান থানার দাশপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর মেয়ে। সে আলীর তৃতীয় স্ত্রী। তিন বছর আগে পাথর ব্যবসায়ী আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল।

শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, গত রোববার বিকেলে নিহতের স্বজনরা জাফলং থেকে এসে শাহপরান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেলে পারভীন বেগমকে আটক করা হয়। আটকের পর পুলিশের কাছে স্বামী হত্যার বর্ণনা দেন তিনি। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীর শিরশ্ছেদ করার পর মরদেহ গুমের কথা স্বীকার করেন পারভীন।

পারভীনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার রাতে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি টিলায় জঙ্গল থেকে আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

পারভীন পুলিশকে জানিয়েছেন, তার স্বামী আলী হোসেন তিন বিয়ে করেছেন। স্বামী প্রায় তাকে নির্যাতন করতেন। স্বামীর নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই তিনি স্বামীকে খুন করেন।

গত ৪ নভেম্বর বুধবার ভোররাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই কোপে স্বামীর মুণ্ডু বিচ্ছিন্ন করেন পারভীন। বিচ্ছিন্ন মুণ্ডুটি পার্শ্ববর্তী একটি টিলার গর্তে পুঁতে রাখেন। আর মরদেহ প্রথমে ঘরের মেঝের গর্তে পুঁতে রাখেন। এরপর ৫ নভেম্বর রাতে মরদেহ রশি দিয়ে টেনে নিয়ে জঙ্গলে ফেলে রাখেন।

ওসি নিজাম আরো জানান, পারভীনকে আটক করার সময় তার ঘর থেকে একটি রক্তমাখা রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গতরাতেই লাশটি সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

তবে নিহতের স্বজনরা বলছেন, পারভীন একাই তার স্বামীকে হত্যা করেছেন এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো লোকজন জড়িত থাকতে পারে। বিষয়টি পুলিশকে খতিয়ে দেখতে হবে।

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক: ।। আপডেট: ০৮:৩০ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার

ডিএইচ

Share