Home / ইসলাম / সৌদি আরবের বর্তমান গৃহযুদ্ধ ও কেয়ামতের আলামত নিয়ে রাসূলের ভবিষ্যতবাণী
সৌদি আরবের বর্তমান গৃহযুদ্ধ

সৌদি আরবের বর্তমান গৃহযুদ্ধ ও কেয়ামতের আলামত নিয়ে রাসূলের ভবিষ্যতবাণী

ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যরা তিনভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। আর এই তিনটি গ্রুপ তিনজন প্রিন্সকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়েছে। তারা হলেন- মুকরিন বিন আব্দুল আজিজ, মুহাম্মদ বিন নায়েফ, মুহাম্মদ বিন সালমান। এ গৃহযুদ্ধের পর ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমন ঘটবে একাধিক আলেম মন্তব্য করেছেন।

হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের ধনভাণ্ডারের (রাজত্বের জন্য) নিকট তিনজন বাদশাহ এর সন্তান যুদ্ধ করতে থাকবে। কিন্তু ধনভাণ্ডার (রাজত্ব) তাদের একজনেরও হস্তগত হবে না। তারপর পূর্ব দিক খোরাসান(আফগানিস্তান) থেকে কতগুলো কালো পতাকাবাকী দল আত্মপ্রকাশ করবে। তারা তোমাদের সাথে এমন ঘোরতর লড়াই লড়বে, যেমনটি কোন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে লড়েনি।”

বর্ণনাকারী বলেন, তারপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন, “তারপর আল্লাহর খলীফা মাহদির আবির্ভাব ঘটবে। তোমরা যখনই তাঁকে দেখবে, তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদি এজন্য তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয়, তবুও যাবে। সে হবে আল্লাহর খলীফা মাহদি।” [সুনানে ইবনে মাজাহ; খণ্ডঃ- ২, পৃষ্ঠাঃ- ১৩৬৭। মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ডঃ- ৪, পৃষ্ঠা ৫১০]

এ বিষয়ে ইসলামী গবেষক পীরজাদা মাও. মাহফুজ উল্যাহ খান ইউসুফী জানান, রাসুল সা: মদীনাৱ মসজিদে দাঁড়িয়ে পূর্ব দিকে ইশারা করে যে ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন, মা’ৱেফাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সংক্রান্ত হাদিস গুলোর আলোকে এটা সুস্পষ্ট যে, কিয়ামত অতি সন্নিকটে। এ বিষয়ে মোমিনদের প্রস্তুতি মূলক কর্মকাণ্ড ও ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজন রয়েছে। সর্বোপরি ইসলামের সুমহান বাণী গুলোকে হৃদয়ঙ্গম করার সময় চলে এসেছে বলে মনে করছি।’

এদিকে শুক্রবার ৬ মার্চ নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে বাদশা সালমানের ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুলাজিজ আল-সৌদ এবং তার দুই ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও তার ছোটভাই প্রিন্স নওয়াফ বিন নায়ফকে তাদের প্রাসাদ থেকে আটক করা হয়েছে। মোহাম্মদ বিন নায়েফ সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তবে ২০১৭ সালে মোহাম্মদ বিল সালমানের নির্দেশে তাকে সেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং গৃহবন্দী করা হয়।

তবে, সৌদি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। এ ঘটনা ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করেছেন বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ পরিবারে যুবরাজ সালমানের প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা কমলো।

এর আগে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল কনস্যুলেটের ভেতরে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় যুবরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনার পরে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়তে হয় তাকে। এই গ্রেপ্তারের সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে সৌদি রাজপরিবারের অনেক সদস্য, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীকে রিয়াদের দেশটির রিৎস-কার্লটন হোটেলে আটকে রাখা হয়, কারণ সৌদি যুবরাজ তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

২০১৬ সালে যুবরাজ ঘোষণার পর থেকে এই রাজতন্ত্রের দেশটিতে মোহাম্মদ বিন সালমানকে অঘোষিত শাসক বলে মনে করা হয়। ওয়াল স্ট্রির্ট জার্নাল জানিয়েছে, নিরাপত্তা রক্ষীরা মুখোশ ও কালো পোশাক পড়ে রাজপরিবারের এই সদস্যদের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালায়।

২০১৮ সাল নাগাদ ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগজি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ আরো বেশ কিছু কেলেঙ্কারির ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সৌদি আরব। দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জন্য ওমরাহ হজ্জ পালন বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। গভীরভাবে পরিষ্কার করার জন্য গত বৃহস্পতিবার ইসলামের পবিত্রতম শহর মক্কা খালি করে ফেলা হয়েছিল।

প্রতিবেদন : দেলোয়ার হোসাইন, ১১ মার্চ ২০২০