সাকা-মুজাহিদের ফাঁসি নিয়ে যা বললেন তসলিমা

সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর নিয়ে দেশজুড়ে যখন চলছে আলোচনা, তখন মুখ বন্ধ করে রাখতে পারলেন না বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।

নিজের ফেসবুকে পেজে ২১ নভেম্বর এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত তসলিমা।

তিনি বলেন, ‘দুটো লোককে ফাঁসি দেবে বলে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ আজ উত্তেজিত। ভায়োলেন্স (সহিংসতা) খারাপ লোকেরা  ইল্যিগ্যালি  (অবৈধভাবে) করে। এখন রাষ্ট্র করছে ভায়োলেন্স (সহিংসতা),  লিগ্যালি (বৈধভাবে)। চোখের বদলে চোখ নিচ্ছে, দাঁতের বদলে দাঁত। রাষ্ট্র বোধহয় ভায়োলেন্স (সহিংসতা) শেখায় মানুষকে, এভাবেই।’

ব্লগার হত্যার বিচারে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘খুনি আর রাষ্ট্রের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য দেখতে পাই না। কাউকে ফাঁসি দিলেই যে পার্থক্যটা দেখি না তা নয়, ব্লগার-লেখকদের যারা খুন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যখন রাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নেয় না, বরং খুনির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিলে কিন্তু সইব না, তখনো পার্থক্যটা দেখি না।’

বিতর্কিত এ লেখিকা লেখেন, ‘ইসলামের জন্য যারা একাত্তরে মানুষ খুন করেছিল, তাদের ফাঁসি হচ্ছে আজ। ইসলামের জন্য যারা ২০১৪/২০১৫ সালে মানুষ খুন করেছে, তাদের বিচার পর্যন্ত হচ্ছে না। এই ইনজাস্টিসটাও (অবিচার) কি রাষ্ট্র শেখাচ্ছে না?মানুষকে সভ্য শিক্ষিত সচেতন সংবেদনশীল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য রাষ্ট্রের কি কোনো ভূমিকা আছে? মানবাধিকার সম্পর্কে কিছু শিক্ষা কি রাষ্ট্র কখনো দিয়েছে কাউকে?’

তিনি আরো বলেন, ‘মানুষকে খুনি বানাবার সব রকম রসদ-মন্ত্র, পুঁথিপত্র, ওয়াজ-খুৎবা দেশে বৈধ। কিন্তু খুন বৈধ নয়। নিতান্তই অক্সিমরন (বিরোধাভাব)। তার চেয়ে এটা ভালো নয়, খুনি বানিয়ো না কাউকে, খুনও করো না কাউকে? অবশ্য আজকাল জঙ্গিবাদ যেভাবে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ছে, একে রোধ করা কী করে সম্ভব, তা হয়তো অনেকেই আমরা জানি না। তবে এটা ভালো বুঝি, ফাঁসি দিয়ে, মেরে, কোনো সমস্যার সত্যিকার সমাধান হয় না।

সুশিক্ষাটা ছড়িয়ে পড়া দরকার। বিশ্বময়। ফাঁসি হলো সহজ সমাধান, সুশিক্ষা ছড়ানোটা কঠিন। কঠিনকেই ভালোবাসতে হবে।’ নিরাপত্তা হুমকির কারণে কয়েক মাস আগে ভারত ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তসলিমা নাসরিন।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট: ০৩:৩৫ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

ডিএইচ

Share