Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মোহনপুরে পাঁচবারের ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া
ইউপি

মোহনপুরে পাঁচবারের ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়া

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, দানবীর এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা, মরহুম শামসুল হক চৌধুরী বাবুল এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিনম্্র ্র শ্রদ্ধা জানিয়ে মিলাদ,দোয়া ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মোহনপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, মোহনপুর লঞ্চঘাট জামে মসজিদ, মুদাফর বাজার জামে মসজিদ,ফতুয়াকান্দি জামে মসজিদ, তার নিজ বাসভবন মোহনপুর কালু ভিলায় মরহুমের পরিবারবর্গের উদ্যোগে প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ,দোয়া ও স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।
উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মোহনপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জুম্মা নামাজ এর পর মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠানে মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান মরহুম শামসুল হক চৌধুরী বাবুল এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বড় ভাইয়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন, মরহুম শামসুল হক চৌধুরী বাবুলের ছোট ভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ ফারুক চৌধুরী।
মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠানে মোনাজাত পরিচালনা করেন, মোহনপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর পেশ ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম। শেষে সকলের মধ্যে তাবারুক বিতরণ করা হয়।
মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,বিশিষ্ট শিল্পপতি হাসান ইমাম চিনু চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্পপতি লায়ন ইকবাল হোসেন জুয়েল চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মোঃ বোরহান চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মেজবা উদ্দিন চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক মোঃ আব্দুল লতিফ ঢালী, আঃ রশিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আসাদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ হারুন-অর-রশিদ, সমাজ সেবক জামাল চৌধুরী, মোঃ জসিম উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগ নেতা মোঃ খোরশেদ আলম, মোহনপুর বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজ্বী মোঃ বাশেদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক হাজ্বী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ,ছেংগারচর পৌর আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ চাঁন মিয়া সরকারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও এলাকার মুসুল্লিরা এতে অংশ গ্রহণ করেন।
এই দোয়া ছাড়াও মরহুম শামসুল হক চৌধুরী বাবুলের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের ঢাকার নিকুঞ্জ এতিমখানায় ও ঢাকা বনানী কেন্দ্রীয় কবরস্থান সংলগ্ন জামে মসজিদ ও এতিমখানায় বিশেষ দোয়া ও দরিদ্রদের মাঝে তৈরি খবার বিতরণ করা হয়েছে।
মরহুমের ঢাকার নিকুঞ্জ এতিমখানায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল হক চৌধুরী বাবুল এর সুযোগ্য দুই সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মাজেদুল হক শুভে চৌধুরী ও মুহিবুল হক চৌধুরী সুমিত এবং ঢাকা বনানী কেন্দ্রীয় কবরস্থানের জামে মসজিদে মরহুম শামসুল হক চৌধুরীর দুই ভাই বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোঃ জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও মোঃ নাসির চৌধুরী বিশেষ দোয়া ও দরিদ্রদের মাঝে তৈরি খবার বিতরণ করেন।
মিলাদ ও দোয়ার অনুষ্ঠানে প্রয়াত সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান শামসুল হক চৌধুরী বাবুলের ছোট ভাই ফারকু চৌধুরী বলেন, আমার বড় ভাই সব সময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করতেন। তাই তিনি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।
তিনি মোহনপুর ইউনিয়নের ৫ বারের নির্বাচিত সফল চেয়ারম্যান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আমার বড় ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আধুনিক মতলবের উন্নয়নের রুপকার মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এর নেতৃত্বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে এই মতলবে জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি দীর্ঘকাল আওয়ামীলীগ রাজনীতি করে গেছেন। তিনি সর্বদা মানুষকে ভালোবাসতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মানুষের সেবা করে গেছেন। আমি আজকে আমার বড় ভাইয়ের জন্য সকলের কাছে তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া চাই। মহান আল্লাহপাক যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।
উল্লেখ্য মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক চৌধুরী বাবুল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের আপন চাচাতো ভাই। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ঢাকা ক্র্যাক প্লাটুনের কমান্ডার স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।
গত বছর ১০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক বাবুল চৌধুরী (৬৮) ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ২ মেয়েসহ বহু আত্মীয়স্বজন ও গুনগ্রাহী আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন।
তার পরদিন ১১ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দশানী মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক সহস্রাধিক মানুষের অংশ গ্রহণে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এরপর ওই দিনই মুক্তিযুদ্ধকালীন ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক চৌধুরী বাবুলকে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে ১০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ঢাকার নিকুঞ্জে মরহুমের প্রথমম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার মৃত্যুর সংবাদে উপজেলার মোহনপুরসহ বৃহত্তর মতলবে শোকের ছায়া নেমে এসেছিলো।
শামসুল হক চৌধুরী বাবুল সুদীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবুল চৌধুরী ৫ বার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্ব পালনের সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি স্বর্ণপদক লাভ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি একজন দেশের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও জনবান্ধব ব্যক্তি হিসেবে সকলের কাছে মনের মনি কোটায় স্থান করে নিয়েছিলেন। তিনি সুদীর্ঘকাল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রতিবেদক: খান মোহাম্মদ কামাল, ১০ নভেম্বর ২০২৩