Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে মেঘনা পাড়ের মানুষের
মেঘনা পাড়ের

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে মেঘনা পাড়ের মানুষের

চোখের সামনে একমাত্র সম্বল ঘর-জমি নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেও নিরুপায় গ্রামের সহজ সরল মানুষ। ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বহু আগে। এখন শেষ চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারছেন না শেষ আশ্রয়স্থল ভিটেমাটি।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামে মেঘনা ধনাগোদা নদীর তীরবর্তী এলাকায় এমন দৃশ্য এখন নিয়মিত ঘটনা।

তীব্র নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে এক কিলোমিটার বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া আরো ২ কিলোমিটার এলাকার এক হাজার মানুষ ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙনে বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ার পর চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ফেলা হয়েছে জিও ব্যাগ। যদিও কিছু সংখ্যক জিও ব্যাগে ভাঙন ঠেকানো সম্ভন নয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

বর্তমানে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামে মেঘনা ধনাগোদা নদীর ভাঙনের মুখে শত শত বাড়িঘর, মসজিদ, বিদ্যালয়, হাটবাজারসহ বিস্তীর্ণ জনপদ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দামোদরদী গ্রামে মেঘনা ধনাগোদা নদীর অব্যাহত ভাঙনে নদী পারের শত শত ঘরবাড়ী বিলীন হয়ে গেছে। মাথা গুজার ঠাই হারিয়ে এসব লোকজন অনত্র বসবাস করছেন। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলেও ভাঙন রোধে কোন জরালো উদ্যোগ নেই পাউবোর।

বাধ্য হয়েই এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

স্থানীয় মোশারফ হোসেন (৭০) বলেন, আমার ৩ বার নদী ভাঙনে ঘর বিলীন হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে কত মানুষের ঘর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। একের পর নদীর ভঙনে শত শত ঘরবাড়ী এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় বসবাস করছে। আরো বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি স্থাপনা এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দু’একদিনের মধ্যে সেগুলোও চলে যাবে। জনপ্রতিনিধিদের বারবার অবগত করলেও কোন কাজ হচ্ছে না। আমরা সরকারের স্থানীয় বাঁধ চাই।

মেঘনা পাড়ের

মুক্তিযোদ্ধা মৃত শাহ মো. আরিফ বিল্লাহ পরিবারের সদস্যরা জানান, আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল এই ভিটেমাটি। নদীগর্ভে অর্ধেক চলে গেছে, বাকি আছে অর্ধেক। ভাঙনের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে। এই প্রথম জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে। কিন্তু ভাঙন বন্ধ হচ্ছে না। এখানে টেকসই বাঁধ করা জরুরী।

এ বিষয়ে চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, ভাঙন স্থানটিতে জিও ব্যাগ ফেলানো হয়েছে। আমরা বরাদ্দ পেলে আরো কিছু জিও ব্যাগ ফেলানো হবে, যাতে ঘরবাড়ি, মসজিদ, স্কুলসহ বাজারটি রক্ষা করা যায়। এলাকাটি যাতে দীর্ঘ মেয়াদী রক্ষা করা যায়, তার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হবে।

প্রতিবেদকঃ শরীফুল ইসলাম, ৩ জুন ২০২১