Home / খেলাধুলা / মাশরাফিদের টানা ৫টি সিরিজ জয়
মাশরাফিদের টানা ৫টি সিরিজ জয়

মাশরাফিদের টানা ৫টি সিরিজ জয়

দেশের মাটিতে এর আগে টানা কয়টি সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল বাংলাদেশের? পরিসংখ্যান ঘেঁটে-ঘুঁটে কোন লাভ নেই। কারণ, একটি কিংবা দুটির বেশি সিরিজ জয়ের রেকর্ড স্বপ্নেও চিন্তা করার সুযোগ ছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট সমর্থকদের। কিন্তু সময়টা পাল্টে গেছে। এখন বলে কয়েও প্রতিপক্ষকে হারানোর ক্ষমতা রাখে বাংলাদেশ। এই যেমন বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানকে বলে-কয়ে হারিয়েছিল মাশরাফিরা!

তাই বলে টানা ৫টি সিরিজ জয়! যেন রূপকথার গল্প বলেই এমনটা মনো হতো ঠিক এক বছর আগে। কিন্তু সেটাই এখন বাস্তব। ঘরের মাঠে টানা পাঁচটি সিরিজ জয়ের বিরল কৃতিত্ব দেখালো বাংলাদেশের অদম্য ক্রিকেটাররা। মাশরাফির অসাধারণ নেতৃত্বে গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে জয়ের মধ্য দিয়ে শুরু। এরপরের নামগুলো শুনলে যে কারও ফিলে চমকাবে- পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।

ক্রিকেটে সত্যিই অসাধারণ, রূপকথারমতই সুন্দর একটি বছর পার করলো বাংলাদেশ। গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে এই জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে ঘরের মাঠে অপরাজেয় যাত্রা শুরু মাশরাফি বাহিনীর। সে থেকে এ পর্যন্ত ঘরের মাঠে টানা ৫টি সিরিজ জয় করলো বাংলাদেশ।

গত বছর শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয় দিয়ে শুরু। ৫ ম্যাচের সব কটিতেই জয়। এরপর ছিল মার্চ-এপ্রিলে বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও স্বপ্নের একটি বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ উঠে গিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। ওই ম্যাচে আম্পায়ারদের বাজে সিদ্ধান্তেও মুখোমুখি না হলে, হয়তো সেমিফাইনালও খেলতে পারতো মাশরাফি বাহিনী।

যাই হোক বিশ্বকাপের তরতাজা স্মৃতি নিয়ে দেশে ফেরার পর সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, আমরা এখন পাকিস্তানকেও হারানোর ক্ষমতা রাখি। কয়েকদিন পরই ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজ। সাকিবের এই কথা শুনে অনেকেই আড়ালে হেসেছিল। পাগলের প্রলাপ বলেও মন্তব্য করেছিল অনেকে।

কিন্তু বাংলাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছিল, পরিবর্তণ তাদের কতটা হয়েছিল। প্রস্তুতিম্যাচসহ পাকিস্তানকে টানা ৫ ম্যাচে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শুধু জয়ই নয়, হোয়াইট ওয়াশ করেছিল আজহার আলি বাহিনীকে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সেই জয়ের পর ১৬ বছর পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশেষে সেটা হোয়াইট ওয়াশের মধ্য দিয়েই পূর্ণতা পেলো বাংলাদেশের।

এরপর এলো ভারত। বিশ্বকাপের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে যেন তেতে আগুণ হয়েছিল পুরো বাংলাদেশ। এর প্রভাব পড়লো সিরিজেও। টানা প্রথম দুই ম্যাচ জিতে প্রথমবারেরমত ভারতকে সিরিজে হারাল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে গিয়ে স্বান্তনার জয় পেয়েছিল ভারত।

টানা তিনটি সিরিজ জয়ের পর এলো দক্ষিণ আফ্রিকা। টি২০ দিয়ে শুরু। সংক্ষিপ্ত ভার্সনে প্রোটিয়াদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। মাশরাফিরাও বলে আসছিলেন, এতদিন যা সাফল্য তার আসল পরীক্ষা দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ। কিন্তু প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজও শুরু হলো হার দিয়ে। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘূওে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ভারত সিরিজে অভিষিক্ত মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং আর তামিম-সৌম্যর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের ওপর ভর কওে পরের দুই ম্যাচে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে উদ্বেল তখন পুরো বাংলাদেশ। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এটাকে সবচেয়ে স্মরনীয় ঘটনা হিসেবেও উল্লেখ করলো সবাই। সে সঙ্গে হয়ে গেলো ঘরের মাঠে টানা চারটি সিরিজ জয়ের রেকর্ডও।

এবার এলো জিম্বাবুয়ে। সিরিজটি হওয়ার কথা আগামী জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারিতে। কিন্তু নিরাপত্তা ইস্যু তুলে অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করায়, বিসিবিও সিদ্ধান্ত নেয়, অসিদের অভিযোগ যে ভূয়া তা প্রমান করার। এ কারণে জিম্বাবুয়েকে আমন্ত্রণ জানায় সিরিজের ওয়ানডে এবং টি২০গুলো আগাম খেলতে আসার জন্য। জিম্বাবুয়েও রাজি হয়ে যায়।

সেই সিরিজটাই শুরু হলো মিরপুরে ৭ নভেম্বও থেকে। প্রথম ম্যাচে মুশফিকের সেঞ্চুরি আর সাকিবের ৫ উইকেটের দারুন পারফরম্যান্সে ১৪৫ রানের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে বাংলাদেশকে ২৪১ রানে বেধে ফেলে জিম্বাবুয়ে জয়ের কিছুটা সম্ভাবনা তৈরী করেছিল। কিন্তু মুস্তাফিজ, আল আমিন, মাশরাফি, নাসির, আরাফাত সানিদের সামনে উড়ে গেল সফরকারীরা। ৫৮ রানের দারুন এক জয়ই নয় শুধু ঘরের মাঠে টানা ৫টি সিরিজ জয়ের অসাধারণ কৃতিত্ব দেখালো মাশরাফি অ্যান্ড কোং।

স্পোর্টস  নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০৯:০৮ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৫, সোমবার

এমআরআর