Home / সারাদেশ / মাতবরের যৌনলালসা : কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূ রক্তাক্ত
মাতবরের যৌনলালসা : কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূ রক্তাক্ত

মাতবরের যৌনলালসা : কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূ রক্তাক্ত

সুন্দরী এক গৃহবধূকে কৌশলে অপহরণ করে দেয়া হয় কুপ্রস্তাব। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এক মাতবরের কাছে। মাতবর তাকে ‘খারাপ মহিলা’ হিসেবে অপবাদ দিয়ে তার ও তার দুই বন্ধুর সঙ্গে ‘খারাপ’ (যৌন সম্পর্ক) কাজ করার প্রস্তাব দেন। তাতেও রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত মাতবর লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন ওই গৃহবধূকে। পরে জখম অবস্থায় ঘরে আটকে রাখেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা গ্রামে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ রক্তাক্ত গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এদিকে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়েই মাতবর দুলাল মুন্সী (৪৫) পালিয়ে যান।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম হ্যাপী আকতার। তিনি তার স্বামী সজীবকে নিয়ে বানিয়ারচালা গ্রামের মাতবর দুলাল মুন্সীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গৃহবধূর বাবার নাম হেলাল উদ্দিন।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন হ্যাপী আকতার জানান, সকাল ৯টার দিকে একই বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. শাহজাহানের মেয়ে নাদিয়া তাকে আচার খেতে দেয়। আচার খাওয়ার পর পরই সে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। ১৭ অক্টোবর সকালে সংজ্ঞা ফিরে এলে একটি ঘরে নাদিয়াসহ বেশ কয়েকজন নারীকে দেখতে পায়। সে সময় তাদের কাছে সে তার অবস্থানের কথা জানতে চাইলে তারা জামালপুর জেলার কথা বলেন। ওই অবস্থায় সেখানে উপস্থিত নারীরা তাকে যৌন কাজে জড়িত হওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে।

ওই সময় হ্যাপী তার বাবাকে ফোন করতে চাইলে বাড়ির লোকজন তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে। তবে অনেক চেষ্টায় ওইদিন বিকেলে কৌশলে মোবাইল ফোনে তার বাবাকে তার বন্দি থাকার কথা জানায়।

হ্যাপীর বাবা হেলাল উদ্দিন জানান, গত শিশু সন্তান হিমেলসহ (৩) তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়। অনেকে খোঁজাখুঁজির পরে তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি।  শিশু হিমেলকে পাশের কাপাসিয়া উপজেলার হাইলজোরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। বিকেলে হঠাৎ মেয়ের ফোন আসে। জামালপুরে নাদিয়ার বাড়িতে অবস্থানের কথা সে ফোনে জানায়। ওই রাতেই বানিয়ারচালা থেকে নাদিয়ার বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরে মেয়েকে উদ্ধার করতে রওনা দেন হ্যাপীর বাবা।  ভোর চারটার দিকে মেয়ে হ্যাপীকে উদ্ধার করে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এসময় নাদিয়া, তার ভাই আল আমীন ও তাদের মা-বাবা মেয়ে হ্যাপীকে তার কাছে না রেখে জোর করে বাঘেরবাজার গ্রামের দুলাল মুন্সীর বাড়িতে নিয়ে যায়।

দুলাল মুন্সীর বাড়িতে নির্যাতনের ঘটনা বর্ণনা করে হ্যাপী জানান, দুলাল মুন্সী তার বিরুদ্ধে খারাপ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগ আনেন। পরে তিনি ও তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি না হলে দুলাল মুন্সী ভয়ানক ক্ষেপে যান। এরপর তিনি লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ঘরে আটকে রাখে।

গাজীপুর সদরের হোতপাড়া ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজহারুল ইসলাম জানান, গৃহবধূর বাবা হেলাল উদ্দিন তার মেয়ে আটকের খবর জানান। এরই প্রেক্ষিতে রোববার সকাল আটটার দিকে দুলাল মুন্সীর বাড়ি থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। এসময় দুলাল মুন্সী ও তার পরিবারের পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে যায়। গৃহবধূকে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাঈদা সুলতানা জানান, হ্যাপীর ডান পা, বাম উরু, ডান ও বাম বাহু রক্তাক্ত জখম হয়েছে। শরীরের অন্য অঙ্গেও রয়েছে নীল ফোলা জখম।

গাজীপুরের ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের সদস্য আতাব উদ্দিন জানান, দুলাল মুন্সী তার গ্রামে মাঝে মধ্যে বিচার সালিশ করে থাকেন। তবে এ ঘটনা আমার জানা নেই।

 

চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:৩৮ পিএম,২৯ অক্টোবর ২০১৫, বৃহস্পতিবার

এমআরআর