Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / মতলবে মাল্টাচাষে আল আমিনের ভাগ্যবদল
চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় মাল্টাচাষ, চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় মাল্টাচাষ

মতলবে মাল্টাচাষে আল আমিনের ভাগ্যবদল

চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় মাল্টাচাষ করে সফল হয়েছেন আলআমিন প্রধান। সেখানে গেলে দেখা মিলবে সারিবদ্ধ গাছে গাছে ঝুলছে মাল্টা। প্রতিটি গাছে এতোবেশি মাল্টা ধরেছে যে ফলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটির দিকে নুয়ে পড়েছে। চাঁদপুরের কৃষি নির্ভর উপজেলা মতলব উত্তর এমন চিত্রই চোখে পড়ে। এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষি কাজের ওপর নিভর্রশীল। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, বর্ষায়ও জমিতে পানি উঠে না, তাই সারা বছরই ফসল করা যায়।

অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বছর চার ধরে এখানে চাষ হচ্ছে মাল্টা। অল্প টাকা আর শ্রমে বেশি লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকায় এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য আলআমিন প্রধান। তিনি সখের বসে রাস্তার পাশের ২০ শতক জমিতে মাটি ফেলে উঁচু করে মাল্টার চাষ শুরু করে চার বছরে পূর্বে। বছর যেতে না যেতেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রথম বছরই তিনি অর্ধলক্ষ টাকা বিক্রি করে মাল্টা। এ বছর তিনি এক লক্ষ টাকা বিক্রির আশা করছেন। তার ফলের বাগানে মাল্টা, ড্রাগন, চায়না কমলা, জামবুড়া, বড়ই, আমসহ বিভিন্ন ফলের চাষ করেছেন।

মাল্টা চাষি আলআমিন বলেন, টিভিতে মালটা চাষ দেখে প্রথমে মাল্টা চাষ শুরু করি। মালটা চাষে আমি লাভবান হওয়ায় এলাকার অন্যান্য যুবকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছে মালটা চাষে। মাল্টা গাছের চারপাশের আগাছা পরিষ্কার করলে এবং পোকার আক্রমণ দেখলে কীটনাশক স্প্রে করলেই গাছ সতেজ থাকে। আর শুষ্ক মৌসুমে গাছে সেচ দিতে হয়।

আলআমিন প্রধান আরো জানান, প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ১৫০টি মাল্টা ধরে। আশা রাখি, একেকটি গাছ থেকে ১৫ হাজার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো। মাল্টা বাগানে সপ্তাহে তিন থেকে চার ঘণ্টা শ্রম দিলেই চলে। মাঝে মধ্যে লাল সার, গুটি সার এবং কিছু কীটনাশক দিতে হয়। আমার মাল্টা বাগানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামানসহ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এসসেছেন।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশ বলেন, আলআমিন প্রধান লক্ষ ঠিক রেখেছেন বলেই মাল্টাচাষে সফল হয়েছে। তার মাল্টাচাষ দেখে অনেকেই এখন মাল্টাচাষ করছেন। ভালো কাজগুলোতে সকলের উৎসাহ রাখা প্রয়োজন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্তকর্তা নরেশ দাস বলেন, চাঁদপুরে ফলচাষে আগ্রহীদের আমরা সব সময় উৎসাহ দিয়ে থাকি। চাঁদপুরে মাল্টাচাষ করে অনেকেই সফল হয়েছে। এছাড়া নতুন যারা আগ্রহ নিয়ে মাল্টাচাষ করতে চাচ্ছেন, তারজন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সর্বদাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।

চাঁদপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, মতলবের কলাকান্দায় এসে জানতে পারি আলআমিন প্রধান নামের একজন ইউপি সদস্য মাল্টার বাগান করেছে, তাই উৎসাহ নিয়েই তার মাল্টার বাগান দেখতে গিয়েছি। তার দেখা মাল্টাচাষ দেখে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে মাল্টাচাষে। মালটার বাগানটি দেখে আমার ভালো লেগেছে। এরজন্যে সরকারি ভাবে ফল চাষীদের সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন এ কর্মকর্তা।

প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম,২৪ সেপেটম্বর ২০২০