Home / জাতীয় / বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার দাবি সংসদে
বিদ্যুতের

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার দাবি সংসদে

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ মুজিবুল হক বলেন, মানুষ একটা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছে। দ্রব্যমূল্যের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সুপারভিশনও নেই। মানুষ খুব অসহনীয় জীবনযাপন করছে। এই অবস্থার মধ্যে মাত্র নির্বাচনটা গেল, আজকেই সরকার বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে ৩৪ থেকে ৭০ পয়সা বাড়িয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। কারণ বলা হয়েছে- ডলারের ডিভ্যালুয়েশন এবং ভর্তুকি কমানো।

মুজিবুল হক বলেন, আমরা জানি না বিদ্যুতের পার ইউনিট উৎপাদনে বা কিনতে সরকারের গড়ে কত খরচ হয়। সব সময় বলে আসছেন হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। ভর্তুকি কমাতে হবে। আগামী তিন বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি কমাবেন। কমাবেন কমান। কিন্তু কিভাবে কমাবেন? জনগণ নিষ্পেষিত, বাজারে যেতে পারছে না। বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুতের দাম বাড়া মানে এর সঙ্গে অনেক জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাবে। কারণ বিদ্যুতের মাধ্যমে অনেককিছু উৎপাদন করা হয়। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ অনেক ফ্যাক্টরি যেগুলো গ্যাস নির্ভর সেখানে গ্যাস দিতে পারছেন না সার্বক্ষণিক। সেখানে আবারও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছেন।

তিনি বলেন, জনগণ অনেক আশা করে মাত্র এক মাস আগে একটি সরকার নির্বাচিত করল আর সে সরকার জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো রমজান মাসের সামনে বিদ্যুতের দাম, গ্যাসের দাম কিভাবে বাড়ায়? এটা অসহনীয়। আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করব অন্ততপক্ষে গ্যাসের দাম এবং বিদ্যুতের দামটা এ মুহূর্তে বৃদ্ধি করবেন না। সরকার একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আসুক, মানুষ একটা স্থিতিশীল অবস্থায় আসুক ইকোনমি একটা নরমাল অবস্থায় আসুক তখন আপনারা চিন্তা করেন। এখন অন্তত চিন্তাটা বাদ দেন। মূল্যবৃদ্ধিটা প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

সরকারের চেয়ে সিন্ডিকেট শক্তিশালী কেন?

বাজার সিন্ডিকেট সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কেন তা জানতে চেয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে সরবরাহের অভাব নেই। যেটা হচ্ছে সেটা সিন্ডিকেট, এটা চিহ্নিত, এটার ওপর প্রতিবেদন আছে। ভোক্তা অধিদপ্তরের বৈঠকে মাংসের দাম কমানোর বৈঠকে তারা মারপিট করেছিল। কোনো দোকানদার কম দামে বিক্রি করলে সরবরাহকারী সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এত শক্তিশালী সিন্ডিকেট। প্রশ্ন হচ্ছে কি করে তারা সরকারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। সরকারের সংস্থা জানে কারা করছে এসব। যদি সরকার শক্ত হাতে তাদের দমন না করে রোজার সময় সিন্ডিকেট দাম বাড়াবেই।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, সিন্ডিকেট এখন এত শক্তিশালী হয়ে গেছে তারা প্রত্যেকদিন সকালে মোবাইলের মাধ্যমে দাম চূড়ান্ত করে দেয়। চিনি, ডিম, তেল, মাংস এবং শাকসবজির দামও বৃদ্ধি করে দেয় তারা। এটার ওপর গোয়েন্দা ও অন্যান্য সংস্থার প্রতিবেদনও আছে। তারা জানে কারা করছে। কিন্তু কোন অ্যাকশন হয়েছে তা আমরা এখনো দেখিনি। কোথাও দেখা যায়নি কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এনবিআর থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে আমদানি ট্যাক্স কমানোর জন্য। আশা ছিল জিনিসপত্রের দাম কমবে। দাম কমেনি। বরং, কিছুদিন আগে হঠাৎ করে চিনির দাম বাড়িয়ে দিল। অবশ্য সন্ধ্যায় তারা বাতিল করা হয়। কিন্তু সেটার সুযোগ নিয়ে চিনির সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে ১৬০ টাকা প্রতি কেজিতে নিল। অথচ পাশের দেশ ভারতে চিনির দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা করে। সেখানে ডলারের মূল্য ধরলে এটা ৭০ টাকার বেশি উঠে না। পাশের দেশে যেখানে ৭০ টাকা এখানে ১৬০ টাকা হওয়ার কোনো কারণ নেই।

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪