Home / বিশেষ সংবাদ / ‘ফাঁসি না হলে আমাকে মেরে ফেলা হতো’ : কামারুজ্জামানের ফাঁসির ভিডিও

‘ফাঁসি না হলে আমাকে মেরে ফেলা হতো’ : কামারুজ্জামানের ফাঁসির ভিডিও

‎Sunday, ‎April ‎12, ‎2015  09:20:35 PM

শেরপুর প্রতিনিধি

‘কামারুজ্জামানের ফাঁসি না হলে আমাকে এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলা হতো। আমাকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ লাখ টাকা পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে বলা হয়েছিল, সাক্ষ্য দিলে লাশ হয়ে যাবে। এমনকি ট্রাইব্যুনালে কামারুজ্জামানের নিযুক্ত আইনজীবীরা পর্যন্ত আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।’ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানের ফাঁসির পর এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মজিবর রহমান পানু।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বলেন, ‘শেরপুরে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেই পতাকা আমার হাতে তৈরি হয়েছিল। ওই অপরাধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কামারুজ্জামান ও তার সহযোগীরা আমাকে ধরে নিয়ে যায়। চরম নির্যাতনের পর আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ঝিনাইগাতীর আহমদনগর ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কামারুজ্জামানের নির্দেশে আমাদের সাত সহযোগীকে গুলি করা হলে আমি ও লিয়াকত অলৌকিকভাবে বেঁচে যাই। যুদ্ধ চলাকালে আমি দেখেছি, কামারুজ্জামান কী নৃশংসভাবে মোস্তফা এবং ফুটবলার কাজলকে মেরেছে! নারীদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে এনে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হয়ে লিয়াকত টাকার কাছে বিক্রি হয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে; কিন্তু আমি বিক্রি হইনি। কামারুজ্জামানের ফাঁসি হয়ে গেছে শোনার পর শান্তি পাচ্ছি। আগামী প্রজন্ম আমার মতো অখ্যাত লোককে ভবিষ্যতে স্মরণ করবে। কেননা, আমি একজন ঘাতকের বিচারে রাষ্ট্রকে সহায়তা করেছি।’

কামারুজ্জামানের নির্যাতনের শিকার শেরপুরের প্রবীণ শিক্ষক ভাষাসংগ্রামী সৈয়দ আবদুুল হান্নানের মেয়ে সৈয়দা শাহনেওয়াজ লতিকা বলেন, ‘একাত্তরের দিনগুলোর কথা মনে হলে এখনও শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে। আব্বার ওপর সেদিন যে নিষ্ঠুর নির্যাতন করা হয়েছে, তা মনে হলে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। তাকে ফায়ারিং স্কোয়াডে পর্যন্ত নেওয়া হয়েছিল। এ সবকিছু করেছে কামারুজ্জামান। ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় আজ যে শান্তি পাচ্ছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’

এদিকে শেরপুর বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘কামারুজ্জামানের মতো নরপিশাচের ফাঁসি দেখে যেতে পারলাম। এখন মরেও শান্তি পাব।’ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা তালাপতুফ হোসেন মঞ্জু রিভিউ খারিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘ও একটা বিষধর সাপ। আমার ভাই বুলবুল ও মোস্তফার হন্তারক সে। ফাঁসি দ্রুত কার্যকর হলে আমার ভাইদের আত্মা শান্তি পাবে।’

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015

নিয়মিত আপনার ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : https://www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes