Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জে সম্মেলন ছাড়াই শ্রমিকলীগের পকেট কমিটি!

ফরিদগঞ্জে সম্মেলন ছাড়াই শ্রমিকলীগের পকেট কমিটি!

সানাউল হক, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) :   আপডেট: ০২:৩১ অপরাহ্ণ, ২৬ জুলাই ২০১৫, রোববার

দেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন হচ্ছে জাতীয় শ্রমিক লীগ। খেটে খাওয়া মানুষের এই সংগঠনটির দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওর্য়াডে রয়েছে কমিটি। দেশের ঐতিহ্যবাহী এই শ্রমিক সংগঠনটি পরিচালনায় রয়েছে নির্দিষ্ট গঠনতন্ত্র। গঠনতন্ত্র অনুসারে পরিচালিত হয়ে আসছে সংগঠনটি। শ্রমিক লীগের যে কোনও ইউনিটের কমিটি গঠন করতে হলে সম্মেলন আহ্বান করতে হবে এবং সেখানে কাউন্সিলর ও ডেলিরগেটরদের পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে ওই ইউনিটের নেতা নির্বাচিত হবে যা গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট উল্লেখ আছে।

কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটলো চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জে। সম্মেলন কিংবা বর্ধিত সভা ছাড়াই অগঠনতান্ত্রিকভাবে জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদগঞ্জে শ্যামল চন্দ্র দাসকে সভাপতি, আব্বাস উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক এবং সন্ত্রাসী লিটন হাজারীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শ্রমিক লীগের উপজেলা কমিটি ঘোষণা করে। যার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফরিদগঞ্জের শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা।

ক্ষুব্ধ নেতারা জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণামতে, মূল দলের কোনও নেতা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে থাকতে পারবে না। কিন্তু শ্যামল চন্দ্র ও আব্বাস উদ্দিন উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও ওই পকেট কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

২০১৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সাংসদ ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, শ্রমিকলীগের চাঁদপুর জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি শাহআলম মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নান্নু মিঝি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হান্নান খান, বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকারসহ শ্রমিক লীগের বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের উপস্থিতে ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শ্রমিক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হানিফ কাজী সভাপতি ও মোঃ শাহআলম মিয়াজি সাধারণ সম্পাদক ও জাকির হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয় এবং পরবর্তীতে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।

শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, হানিফ কাজী সভাপতি ও মোঃ শাহআলম মিজি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়। যার ফলে উপজেলা শ্রমিক লীগ হয় বেশ শক্তিশালী। এছাড়া বিগত দিনে মূল দল আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ডে সহযোগী সংগঠন হিসেবে শ্রমিকলীগ অংশগ্রহণ করে। জাতীয় সকল দিবসগুলোও উপজেলা শ্রমিক লীগ উদযাপন করে। বিশেষ করে মে দিবসের কর্মসূচি জাঁকজমকপূর্ণভাবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জেলা শ্রমিকলীগ নেতাদের উপস্থিতিতে উদযাপন করা হয়।

উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ কাজী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহআলম এ প্রতিনিধিকে বলেন, ২০১৩ সালে গঠনতান্ত্রিকভাবে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা এখনো বহাল আছে। আগামীতে কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ১টি পৌরসভা ১৫ টি ইউনিয়নের কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।

তারা আরো বলেন, অদ্যাবধি জেলা কমিটি ফরিদগঞ্জে নতুন কমিটি গঠনকল্পে আমাদের সাংগঠনিকভাবে কোনও চিঠি দেয় নাই।

জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান এই কমিটি গঠনের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এ ধরনের পকেট কমিটি গঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হান্নান খান এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত ক’দিন পূর্বে সভাপতি নুরুল ইসলাম মিঝি আমাকে ডেকে নিয়ে বলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদগঞ্জের স্থানীয় এমপির সুপারিশ সম্বলিত একটি কমিটি আমাদের কাছে রয়েছে। আমি ওই কমিটি অনুমোদন করেছি, আপনিও করে দিন। যার প্রেক্ষিতে আমি ওই কমিটি অনুমোদন করি। গঠনতন্ত্র সর্ম্পকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি