ফরিদগঞ্জ

ফরিদগঞ্জে চুরির ঘটনায় নিখোঁজের দু’দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিখোঁজের দুই দিন পর মাকসুদুল আলম মকু (২১) নামে এক যুবকের লাশ পুকুরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার(২ মে) সকালে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের আঠিয়া বাড়ির পুকুর থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এ নিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত এ যুবকের মৃত্যু রহস্যময়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, আঠিয়া বাড়িতে প্রবেশ মুখের পুকুরটির পাড় ঘেসে পানিতে যুবকের লাশ ভাসছিলো। এসময় তার শরীরে গেঞ্জি, জিন্সের প্যান্ট, পায়ে জুতা, হাতে একটি রাবারের ব্যাসলেট ছিলো। পুলিশ পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহতের বাবা আব্দুল মান্নান চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘গত শনিবার রাতে একই বাড়ির মৃত. সিরাজের বসতঘরে একটি চুরির ঘটনা ঘটে। পরে রোববার সকালে চুরি হওয়া ঘরের লোকজন আমাকে জানায় আমার ছেলে মাকসুদুল আলম ওই চুরির ঘটনার সাথে জড়িত। আমি যখন মাকসুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম মৃত. সিরাজের পরিবারের লোকজন তখন মাকসুদকে ধাওয়া দেয়। এসময় সে আমার মেয়ে পারভীনের বসত ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে আমার মেয়ের জামাই শরীফ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়,“ চুরি হওয়া মালামাল ওই বাড়ির গাফফারসহ কয়েক জনের কাছে রয়েছে। এর পর সে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে রবি ও সোমবার তাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।’

অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) সকালে বাড়ির লোকজন জানায় আমার ছেলের লাশ পুকুরে ভেসে ওঠেছে। বাবা হয়ে আমার এই যুবক ছেলের লাশ কিভাবে কাঁধে বইবো।’

পুকুরের ভাসমান লাশ উত্তোলনের সময় ঘটনাস্থলে গ্রামের নারী পুরুষ নির্বিশেষে শত শত মানুষ ভিড় জমায়।

এসময় স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের জানায়, মাকসুদুল আলম সবার কাছে মকু নামেই পরিচিত ছিলো। সে পল্লী বিদ্যুতের লাইনের গাছের ডালপালা কাটতো।

শনিবার রাতে মৃত. সিরাজের বসত ঘরে চুরির ঘটনা ঘটে। ওই ঘর থেকে মোবাইল, সোনার চেইন ও নগদ টাকা নিয়ে যায় চোর। এলাকায় এক প্রচার হয় মাকসুদ চুরির ঘটনায় জড়িত। চুরির ঘটনার সাথে জড়িত অন্যরা তাকে পরিকল্পিতুভাবে হত্যা করে থাকতে পারে। কেউ কেউ বলেন, সে নেশা আসক্ত ছিলো।
কেউ কেউ আবার ভিন্ন মত প্রকাশ করে বলেন, তবে নিহতের বোন পারভীন জানায়, ‘মাকসুদ সিগারেট পর্যন্ত খেতো না। আর নেশা করারতো প্রশ্নই আসে না।’

চুরিতে অভিযুক্ত গাফফারের ডাব ব্যবসায়ী। রোববার সকালে সে তার বোনের ঘর থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলো।

এদিকে লাশ উদ্ধার করার সময় নিহত মাকসুদুল আলম মকুলের মা পারুল বেগম ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুর্চা যেতে দেখা যায়। তার চিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।

এদিকে গাফফার পলাতক থাকায় তার বক্তব্য থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি ।

ঘটনাস্থলে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই সালাউদ্দিন শামীমের কাছে জানতে চাইলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। নিহতের পরিবারের লোকজনকে থানায় আসতে বলা হয়েছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মাহাবুবুর রহমান মোল্লা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এ নিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।’

প্রসসঙ্গত, মাকসুদুল আলম ওরফে মকু ৩ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে ২য় ছিলো। তার বাবা আব্দুল মান্নান ঢাকায় ফলের আড়েৎ কাজ করে।

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১: ০০ পিএম, ২ মে ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share