Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে ১৪ বছরের কিশোরীর সন্তান প্রসব
ফরিদগঞ্জে ১৪ বছরের কিশোরীর সন্তান প্রসব

ফরিদগঞ্জে ১৪ বছরের কিশোরীর সন্তান প্রসব

৭ বোন, ছোট দুই ভাইয়ের টানাপোড়নের সংসারের মধ্যে সে ৩য় মেয়ে। বাবা রিক্সাচালক, মা অনেকটা বাকপ্রতিবন্ধী। অভাব অনাটনের সংসারে মাধ্যমিক বিদ্যালয় শুরু করে শেষ করতে পারেনি। বুঝ-জ্ঞান হওয়ার পর থেকে সংসারের কিছুটা হাল ধরার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে কাজ করে আসতো সে। একদিন বাড়ির পাশে খোলা বাগানের পাতা কুড়াতে গিয়ে মানুষরূপী এক নরপশুর হাতে ধর্ষণের শিকার হয় মেয়েটি।

এলাকার ক্ষমতাসীন নেতার ছেলে বলে সেই দাপটের ভয়ে চুপ ছিলো কিশোরী মেয়েটি। ওই সময় লম্পট ছেলের মিথ্যা স্বপ্ননের জালে পড়ে ধীরে ধীরে নিজের সর্বনাশ যে ডেকে এনেছে তা হয়তো এখন বুঝতে পারছে কুমারী মেয়েটি। তাইতো লম্পট ছেলেটির লালসার শিকার হয়ে দীর্ঘ ৯ মাস কি যে কষ্টের পর জন্ম নিলো ফুটফুটে পুত্র সন্তান, যা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সবার টনক নড়ে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার জন্ম দিল ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন লক্ষ্মীপুর গাজী বাড়িতে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর গাজী বাড়ির রিক্সাচালক নুরু গাজীর ৩য় মেয়ে (১৪) গত ১৯ ফেব্রয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় সবার অগোচরে অবৈধ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এ নিয়ে কুমারী মেয়েটির বাবা মাসহ ওই বাড়ি ও এলাকার লোকজনের মধ্যে কৌতূহল জেগে উঠে। কারও নজরে এর আগে বিষয়টি চোখে পড়েনি বলে জানা যায়।

ওই দিন রাতেই স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি মেয়েটির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উঠে আসে মানুষরূপী এক নরপশুর নাম। কুমারী মেয়েটির জবানবন্দী অনুযায়ী একই গ্রামের পাশের দক্ষিণ মোল্লা বাড়ির ব্যবসায়ী হান্নান মিয়ার ছোট ছেলে আরিফ হোসেন (২৪) গত বছরের ১৯ মে দুপুরবেলায় বাড়ির পাশের বাগানে পাতা কুড়াতে যায়। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আরিফ সুযোগ বুঝে একপর্যায়ে জোরপূর্বক মেয়েটিকে ধষণ করে।

এ প্রসঙ্গে ধর্ষিতা মেয়েটি জানায়, ঘটনার দিন আমি বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাগানে পাতা কুড়াতে যাই। সেখানে পূর্ব থেকে নরপশু আরিফ ওঁৎ পেতে থাকে। তখন সে আমার মুখ চেপে ধরে আমার সম্ভ্রমহানী করে। সে তখন আমাকে বলে, তোর কোনো সমস্যা হলে আমাকে ফোনে জানাবি। এমনকি সে হুমকি দিয়ে বলে, এ ঘটনা কাউকে জানালে আমার ভাই ও বাবাকে মেরে ফেলবে। এ ভয়ে আমার পরিবার এবং এলাকার কাউকে জানাইনি। এখন আমি নিরূপায় হয়ে পড়েছি। আমি গরিব ঘরের সন্তান বিধায় অর্থ বা প্রভাব না থাকায় আরিফের পরিবারের ভয়ে মামলা করতে পারেনি। এখন আমি যেনো সুষ্ঠু বিচার পেয়ে থাকি সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

এ বিষয়ে ধর্ষকের পিতা হান্নান ভূঁইয়া বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ওই বাড়ির চরিত্রই এমন। মেয়েটির মা-ও ছোটবেলায় এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন এ মেয়ের সর্বনাশ কে করেছে কে জানে!

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছেলে কোথায় গেছে কোনো খোঁজ নেই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লাা বলেন, ছেলেটি এলাকায় না থাকায় কোনো সমাধান দেওয়া যাচ্ছে না।

জহিরুল ইসলাম জয়, হাজীগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর টাইমস

|| আপডেট: ০৮:২৭ অপরাহ্ন, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সোমবার

এমআরআর