Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / ফরিদগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক লীগ নেতা কারাগারে
ফরিদগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক লীগ নেতা কারাগারে

ফরিদগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক লীগ নেতা কারাগারে

ফরিদগঞ্জে গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক লীগ নেতা কারাগারে, প্রতিবন্ধী ছেলেকে ভাতার আশ্বাসে লঞ্চে-হোটেলে ধর্ষণ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এক ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে গৃহবধূকে কৌশলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে গেছে। প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য সরকারি ভাতার কার্ড দেয়ার মিথ্যা আশ্বাসে এ ঘটনা ঘটানো হয় বলে দাবি করেছেন ওই গৃহবধূ।
এর আগে কার্ড মঞ্জুরের খরচ বাবদ গৃহবধুর কাছ থেকে ৪১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।

শনিবার (১০ মার্চ) সকালে ঘটনার বিবরণ দিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন গৃহবধু। অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত নাছির মীরকে থানা পুলিশ কৌশলে আটক করে। এরপর মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে চাঁদপুর কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা যায়, নাছির মীর ১০ নং গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাঁসা গ্রামের মৃত বসু মীরের ছেলে নাছির মীর (৫৮)। তিনি বিডবিøউটি থেকে গত কিছুদিন পূর্বে অবসরে যান। গত ২৪-এ জানুয়ারি গৃহবধু পাশ্ববর্তী ধানুয়া বাজার থেকে অটোরিক্সাযোগে নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে দু’জনের পরিচয় ও আলাপ হয়। শাখাওয়াত হোসেন (১৫) নামে গৃহবধুর একজন প্রতিবন্ধী ছেলের কথা জানতে পারে নাছির মীর। এ সুযোগে তিনি সরকারিভাবে ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দেন গৃহবধুকে। তিনি গৃহবধুর মোবাইল ফোন নম্বরও নিয়ে নেন।
এরপর তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময ফোনালাপ হয়। কয়েকদিন পরে নাছির মীর গৃহবধুকে জানান শাখাওয়াতের জন্য আজীবন ভাতা মঞ্জুর করতে সব মিলিয়ে ৪১ হাজার টাকা লাগবে। গৃহবধু জানান, “প্রতিবন্ধী ছেলের ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে আমি রাজি হই”। উক্ত টাকা নিয়ে গত ২৯-এ জানুয়ারি ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে যেতে বললে গৃহবধু সেখানে গিয়ে একটি ট্রাক শ্রমিক অফিসে বসে টাকা হস্তান্তর করেন।
এরপর নাছির বলেন কার্ড তোলার জন্য ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে যেতে হবে, অন্যথায় কার্ড তোলা যাবে না। তার কথা বিশ্বাস করে গৃহবধু নাছির মীরের সঙ্গে ঢাকা রওয়ানা দেন। তাকে চাঁদপুর ঘাট থেকে লঞ্চের একটি কেবিনে উঠানো হয়।
ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে দেয়ার কিছুক্ষণ পর নাছির মীর গৃহবধুর হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় ধস্তাধস্তি ও চিৎকার করলে গৃহবধুকে জীবনে মেরে ফেলা হবে বলে নাছির মীর হুমকি দেয়। এতে জীবনের ভয়ে গৃহবধু নিরব থাকে।
পরে ঢাকার সদরঘাট থেকে তাকে নিয়ে কমলাপুরে একটি আবাসিক হোটেলে উঠানো হয়। সেখানে নাছির মীর তাকে আবারও ধর্ষণ করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এ সময় তাকে মেরে আহত করা হয়।

মীর নাছির হুমকি দিয়ে বলেন, ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেতে চাইলে যেনো কোনো প্রকার উচ্চবাচ্য না করা হয়। করলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলে আবারও হুমকি দেয়া হয়। এতে তিনি নিরবতা অবলম্বন করেন।

এ সুযোগে ২ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করা হয়। পরে এদিন বিকালে হোটেল থেকে বের করে লঞ্চযোগে চাঁদপুর হয়ে নিজ গ্রামের বাড়ির সামনে হুমকি দিয়ে তাকে নামিয়ে দেয়া হয়।
বাড়ি পৌঁছে ওইদিন রাতেই তিনি নিকটাত্মীয়দের ঘটনা জানান। কিন্তু উল্টো নানা কটুক্তি ও কানাঘুষা শুরু হয় চতুর্দিকে। এরপর স্বামীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তিনি থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম মিজি নাছির মীরের শ্রমিক লীগের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, এই ঘটনা সর্ম্পকে আমি কিছু জানি না।

এ ব্যপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নুরুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে জানান, দু’জনের সঙ্গে আলাদা কথা বলে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অধিকতর তদন্তক্রমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ