Home / বিশেষ সংবাদ / পয়লা বৈশাখের দিন টিএসসিতে যা ঘটেছিলো

পয়লা বৈশাখের দিন টিএসসিতে যা ঘটেছিলো

‎Friday, ‎April ‎17, ‎2015  12:53:20 AM

চাঁদপুর টাইমস ডটকম :

বাংলা নববর্ষ উদযাপণ করে বাসায় ফেরার সময় ঢাবি ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে বিবস্ত্রসহ একাধিক নারীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারীদের ওপর এই হামলা ঠেকাতে গিয়ে একদল যুবকের হামলায় হাত ভেঙেছেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।

বাংলা নতুন বছর উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় ছিল বিভিন্ন অনুষ্ঠান, তাতে সারা ঢাকা থেকে অনেকে যোগ দিয়েছিলেন। এর মধ্যেই সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সংঘবদ্ধ একদল যুবক নারীদের যৌন হয়রানি করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

তারা বলেন, টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইটে কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় ৩০-৩৫ জনের ওই যুবকের দল। তারা কারও কারও শাড়ি ধরেও টান দিয়েছিল। তখন পুলিশ কয়েক দফা লাঠিপেটা করলেও ভিড়ের মধ্যে ওই যুবকদের নিবৃত্ত করতে পারেনি।

ছাত্র ইউনিয়ন নেতা লিটন নন্দী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে যখন সবাই বের হচ্ছিল, তখন গেইটে থাকা বহিরাগত ওই যুবকরা নারীদের যৌন হয়রানি করে। ২০-২৫ জন যুবক এক নারীর শ্লীলতাহানি ঘটানোর সময় বাঁচতে গিয়ে তিনি পড়ে যান। তাকে উদ্ধার করতে গেলে ওই যুবকরা আমার ওপর চড়াও হয়। তাদের ধাক্কাধাক্কিতে আমিও পড়ে যাই। পড়ে গিয়ে ডান হাত ভেঙে গেছে লিটন নন্দীর। তবে ওই নারীকে উদ্ধার করে নিজের পাঞ্জাবি জড়িয়ে দিয়েছেন লিটন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন তিনি।

সন্ধ্যা নামতে শুরু করলে যখন সবাই উদ্যান থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন প্রতিটি গেটেই ব্যাপক ভিড় লেগে যায়। এসময় সংঘবদ্ধ ওইসব চক্র গেটে অবস্থান নেয়। হঠাৎ করে তারা গেট দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করে একটা হট্টগোল পাকায়। এসময় আশাপাশে থাকা নারীদের শ্লীলতাহানি করে তারা। অনেক সময় সঙ্গে থাকা পুরুষসঙ্গী ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাদেরও হেনস্থার শিকার হতে হয়।

নির্যাতিতাদের উদ্ধার করতে গিয়ে গুরুতর আহত অমিত দে জানান, শুধু তরুণী না। তারা কাউকেই রেহায় দেয়নি। কিশোরী থেকে শুরু করে সব বয়সের নারীই তাদের হয়রানির শিকার হয়েছেন। ওই তরুণীকে উদ্ধার করার পরপরই আরও একাধিক নারীর চিৎকার শুনতে পান তারা। কাছে গিয়ে দেখতে পান এক নারী দুই হাত জোর করে বখাটেদের অনুনয় করছেন, আমার বাচ্চাকে ফেরত দাও। বাবা, আমাকে কিছু করো না। আমার বাচ্চা ফেরত দাও। ছয় বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন ওই নারী। উদ্যানের ওই ফটক দিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বখাটেরা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার শিশুসন্তানকে। শিশুটি তখন ফুটপাথে পড়ে কান্নাকাটি করছিল। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হয় ওই নারীর ভাইকে। এর মধ্যেই লিটন, অমিত, সুজনসহ কয়েকজন তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। বখাটেদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে তাদের। ততক্ষণে বখাটেরা টেনে খুলে নেয় ওই নারীর শাড়ি। পরে ওই নারী ও তার ভাই এবং সন্তানকে উদ্ধার করেন তারা। বখাটেদের আক্রমনের শিকার এক কিশোরী আর্তনাদ করছিল। ওই কিশোরীকে উদ্ধার করতে গেলে বখাটেরা মারধর করে তাদের। বখাটেদের নির্যাতনে ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারায় ওই কিশোরী।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/2015

নিয়মিত আপনার ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : https://www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes