Home / উপজেলা সংবাদ / হাজীগঞ্জ / দৃষ্টিনন্দন পৌরসভায় কাজ করতে গিয়ে দিন রাত বলে কোন কথা নেই: মেয়র লিপন
পৌরসভায়

দৃষ্টিনন্দন পৌরসভায় কাজ করতে গিয়ে দিন রাত বলে কোন কথা নেই: মেয়র লিপন

হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা দ্বিতীয় বারের মেয়র আ. স. ম মাহবুব-উল আলম লিপন বলেন, দৃষ্টিনন্দন পৌরসভায় কাজ করতে গিয়ে দিন রাত বলে কোন কথা নেই। শেখ হাসিনা সরকার দিনের মত রাতকেও আলোকসজ্জ্বা সাজিয়ে রেখেছে।

১১ জুলাই রোববার হাজীগঞ্জ পৌরসভার হল রুমে আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় পৌর মেয়র এমন মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি দুঃখের সাথে বলেন, ইতিমধ্যে কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় পৌরসভার সম্পত্তি নিয়ে আমাকে ও আমার পরিষদকে হেয় করে সংবাদ প্রকাশ করেছে। যা আমার দৃষ্টি গোচর হয়। না জেনে কোন পক্ষের বক্তব্য ছাড়া সংবাদ প্রকাশ উদ্দেশ্য প্রনোদিত ছাড়া কিছু নয়।

প্রকৃত ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার কারণে ওই স্থানে বিপুল পরিমাণ ময়লা-আবর্জনার স্তূপ হয়েছে। যা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ানোর কারণে ওখানের ব্যবসায়ীরা পৌরসভাকে দোকান ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয়। তাই পৌরসভা ওই আবর্জনা অপসারণ করেছে। তাহলে এখানে আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় “রাতের আঁধারে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ আসবে কেন? পৌরসভা তো ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারসহ অনেক কাজ (উন্নয়নমূলক) দিন ও রাতে করে থাকে।

এছাড়াও শেখ হাসিনার উন্নয়ন, রাতের আঁধারকেও আলোকিত করেছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের মহাসড়কে।

দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে আবর্জনা অপসারণের কাজ শুরু করা হয়। যা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। আমরা সেই স্থান থেকে ৪২ ট্রাক্টর আবর্জনা অপসরারণ করি। ওই দিন আবার আমি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে চিকিৎসার কাজে ঢাকায় যাই। তখন আমার মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। পরে জানতে পারি, এই আবর্জনা অপসারণ করার সময় মসজিদের (হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ) নামে একটি পক্ষ ঝামেলা সৃষ্টি করে। এই খবর পেয়ে তাদের নিবৃত্ত (শান্ত) করার জন্য আমি রাতেই ঢাকা থেকে ফিরে আসি।

তিনি আরো বলেন, বলা হয়েছে ওনার (ড. আলমগীর কবির পাটওয়ারী) সাথে সমন্বয় করার জন্য। আমি ওনার সাথে কিসের সমন্বয় করবো। ওনার তো এখানে জায়গা নেই।

এটা পৌরসভার জায়গা, পৌরসভা পরিস্কার করেছে। অথচ আমাকে হেয় করা হয়েছে। কিন্তু এই সম্পত্তি-তো আমার ব্যক্তিগত নয়, পৌরসভার ১ লাখ ৩৬ হাজার মানুষের সম্পত্তি। তারা (জনগণ) আমাদের (পৌর পরিষদ) ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। তাই আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করি। জনগণের জন্য যা করার প্রয়োজন, তা করার চেষ্টা করি।

সম্পত্তির বিষয়ে তিনি বলেন, তারা (মসজিদ কর্তৃপক্ষ) বলছেন, ২০০৪ সালে এই সম্পত্তি ক্রয় করা হয়েছে। অথচ কাগজপত্রের মাধ্যমে পৌরসভার জন্মলগ্ন থেকেই এই সম্পত্তি ব্যবহার করে আসছে। ওখানে বসে একসময় ট্যাক্স আদায় হতো। সুতরাং আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ না। যার কাছ থেকে জায়গা কিনছেন, তার কাছ থেকে সম্পত্তি বুঝে নেন। শুধু শুধু মসজিদের নাম ভাঙ্গিয়ে পাবলিক সেন্টিমেন্ট্র গ্রো করার চেষ্টা করবেন না। আমরা আমাদের সম্পত্তিতে রয়েছি। আমরা আমাদের সম্পত্তির মধ্যে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করেছি।

এ সময় মেয়র আরো বলেন, আমার নানী মরহুম খান বাহাদুর আমিন মিয়ার সহধর্মিণী মরহুম এয়াকতের নেছা বিবি ৯৯ শতাংশ জায়গা তৎকালিন ইউনিয়ন পরিষদকে দিয়েছিলেন।

বলা হয়েছে, যদি ইউনিয়ন পরিষদে ব্যবহার না হয়, তাহলে ওনার ওয়ারিশরা তা ভোগ করবে।
পরবর্তীতে ওখানে ইউনিয়ন পরিষদ না থাকায় এবং হাজার হাজার শিক্ষার্থীর স্বার্থে আমরা ড. আলমগীর কবির পাটওয়ারীর সাথে সমঝোতা করে ওই সম্পত্তি ব্যবহার করতে দিয়েছি। তখন বলা হয়েছিল, ওখানে পৌরসভার নামের একটি পাঠাগার করা হবে এবং পৌরসভার একটি নামফলক থাকবে। সময় চেয়ে তারা দীর্ঘদিন কালক্ষেপণ করেছে। যা আজ পর্যন্ত হয়নি।
যেখানে মিয়া পরিবার জনগণের জন্য সম্পত্তি দান করেছেন। সেখানে আমাকে জড়িয়ে সম্পত্তি দখলের সংবাদ হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।

পৌর সচিব নুর আজম বীন শরীফ এর সঞ্চালনায় এ সময় আরো বক্তব্যে রাখেন, হাজীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাহিদুর আযহার আলম বেপারী, ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ বিল্লাল হোসেন।

মতবিনিময় সভায় পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ ও কাউন্সিলর মো. আজাদ হোসেন মজুমদার, প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রোকেয়া বেগম, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মমতাজ বেগম মুক্তা, মিনু আক্তার মিনু ও নাজমুন নাহার আক্তার ঝুমু, কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী, আলাউদ্দিন মুন্সী, সুমন তপাদার, মো. শাহআলম, কাজী মনির হোসেন, হাজী কবির হোসেন কাজী, সাদেকুজ্জামান মুন্সী, মো. শাহআলমসহ কর্মকর্তা কর্মচারীসহ স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম জয়