Home / বিশেষ সংবাদ / নতুন ৭ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম ‘আল হাসা মরুদ্যান’
নতুন ৭ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম ‘আল হাসা মরুদ্যান’

নতুন ৭ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম ‘আল হাসা মরুদ্যান’

জাতিসংঘের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো নতুন সাতটি বিশ্ব ঐতিহ্যের নাম ঘোষণা করেছে। বাহরাইনে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির ৪২তম অধিবেশনে এসকল নতুন নাম ঘোষণা করা হয়। নতুন ঘোষিত সাত বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম হলো- সৌদি আরবের আল হাসা মরুদ্যান।

আল হাসা সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে অবস্থিত এক পুরনো শহরের নাম। আল আহসার অবস্থান রাজধানী রিয়াদ থেকে ৩শত ৩০ কিলোমিটার দূরে। এখানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মরুদ্যান অবস্থিত। এ এলাকার জনসংখ্যা প্রচুর। আল হাসায় প্রায়ই বৃষ্টি হয়, এমনকি মাঝে-মধ্যে বন্যাও দেখা দেয়। মরুভূমির মাঝে এমন বৈচিত্র্যময় আবহাওয়ার আচরণ বেশ বিরল ঘটনা।

ইউনেস্কো জানায়, আরব উপদ্বীপের পূর্বাঞ্চলীয় মরূদ্যান এলাকাটি স্থানীয় বাসিন্দাদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র ছিল এক সময়। এই প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বাগান, খাল, ঝর্ণা, কূপ ও হ্রদের পাশাপাশি মরূদ্যান কিছু পুরনো বাড়িঘরের স্থাপনাও রয়েছে। আরব উপদ্বীপের এ অংশে মানুষের বসবাস কবে থেকে শুরু হয়েছে তার একটি ধারণা দেয় এই মরূদ্যান। এখন সেখানে কিছু ঐতিহাসিক দুর্গ, মসজিদ, কূপ ও পানি ব্যবস্থাপনার কিছু উপকরণ রয়েছে।এ এলাকা হস্তশিল্প সামগ্রীর জন্যও বিখ্যাত।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি লাল চাল আল হাসায় চাষ করা হয়। ‘হেসাবি লাল চাল’ নামে খ্যাত প্রতি কেজি চাল ৫০ রিয়ালেরও বেশি দামে বিক্রি হয়।সৌদি আরবের মতো জায়গায় এমন সুবিধা আল হাসা ছাড়া অন্য কোথাও নেই।
নতুন ৭ বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম ‘আল হাসা মরুদ্যান’
মরুদ্যানটির ৩০ লাখ পাম গাছ, ৪ লাখ ফল গাছ থেকে বছরে ১ লাখ টন খেজুর ও ১৩ হাজার টন ফল পাওয়া যায় । এখানেই সৌদির সর্ববৃহত ৩ লাখ ৭৯ হাজার স্কয়ার কিলোমিটার তেলে খনি অবস্হিত । এখানে ১৮ লাখ মানুষের বসবাস ।

আল হাসা মরুদ্যানের আগে ‘আল ক্বাত আল আসিরি’ নামে সৌদি আরবের আসির অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী দেয়াল অলংকরণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা করে ইউনেস্কো। এই দেয়াল অলংকরণের বৈশিষ্ট্য হলো- এর সাজসজ্জার কাজ নারীরা ঘরের ভেতরে করেন।

এর আগে সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আল উলা এলাকায় বিস্ময়কর কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের খোঁজ পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে বৃত্তাকার ও বর্গাকার দেয়াল, ত্রিকোণাকৃতির কাঠামো ও প্রাচীন সমাধি। ২২ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকার এ প্রত্নতাত্ত্বিকসমৃদ্ধ এলাকাটি মাদায়েন সালেহ নামে প্রসিদ্ধ। এটিও বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছিল।

ইউনেস্কোর নতুন ৬ বিশ্ব ঐতিহ্যে রয়েছে, ওমানের প্রাচীন শহর কালাহাত, ইরানের সাসানীয় প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন, দক্ষিণ কোরিয়ার পাহাড়ি মঠ, থিমলিচ ওহিঙ্গা, মুম্বাইয়ের ভিক্টোরিয়ান ভবন এবং জাপানে খ্রিস্টানদের গোপন ধর্মীয় স্থান ।

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সভা বাহরাইনের রাজধানী মানামায় গত ২৪ জুন হয়ে শেষ হবে ৪ জুলাই । এই সভায় সভাপতিত্ব করছেন শেখ হাইয়া রাসেদ আল খলিফা ।

প্রতিবেদক : সাগর চৌধুরী, সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট

Leave a Reply