দুর্গা মন্দিরের সব পুরোহিতই যখন মুসলিম

সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব নিয়ে যখন ভারতের নানা প্রান্ত বিতর্কে তোলপাড়, তখন অসাধারণ উদাহরণ হয়ে রয়েছে বাগোরিয়া গ্রাম। এই গ্রামের দুর্গা মন্দিরের পুরোহিত একজন মুসলিম, যাঁর আদি বাড়ি পাকিস্তানে।

গত কয়েক শতক জুড়ে রাজস্থানের যোধপুরের কাছাকাছি পাহাড়ের উপর অবস্থিত এই প্রাচীন দুর্গা মন্দির হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির অসামান্য নজির তৈরি করে চলেছে। এই দেবস্থানে ধর্ম ঘিরে কোনও ভেদাভেদ কখনও সৃষ্টি হয়নি। শুধু মুসলিম পুরোহিতের দ্বারা পূজিতাই নন, এখানে দেবী আরাধনায় সামিল হন ধর্ম নির্বিশেষে অসংখ্য ভক্ত।

মন্দিরের পূজারী আদতে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা। বংশ পরম্পরা মেনে এঁরা দেবীর অর্চনায় নিয়োজিত। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি মাদ্রাসা। এখানকার কুয়োর পানি পবিত্র বলে স্থানীয়দের বিশ্বাস। কিন্তু হিন্দু ছেড়ে কী কারণে ইসলামপন্থী পুরোহিত নিয়োগ করা হয় এই মন্দিরে? এর মূলে রয়েছে জনপ্রিয় উপকথা।

প্রাচীন কালে বাণিজ্য করতে যাওয়ার পথে মালবাহী পশু ও সঙ্গীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন সিন্ধু প্রদেশ থেকে আসা এক বণিক। পথ হারিয়ে তীব্র খিদে ও তেষ্টায় তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দেয়। পথ ভুলে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় তিনি এসে পৌঁছান এই স্থানে। এখানেই ‘দেবী দুর্গার কৃপায়’ খাদ্য ও পানীয় জল পেয়ে রক্ষা পান তিনি। দেবীর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা বশে তিনি এখানে একটি দুর্গা মন্দির নির্মাণ করান।

প্রাণ ফিরে পাওয়ার পর কোনও দিন আর দেশে ফিরে যাননি এই বণিক। তবে নিজের মুলুক থেকে নিজ ধর্মাবলম্বী পুরোহিত আমদানি করে দেবীর আরাধনার চল করেন। সেই থেকে এই দুর্গা মন্দিরের বিগ্রহ অর্চনার দায়িত্ব বংশ পরম্পরায় সামলান ওই মুসলিম পূজারী পরিবার। পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের এক সদস্য মেহরাদিন জানিয়েছেন, ‘আমরা গত কয়েক যুগ ধরে এখানে বসবাস করছি। এখানে সব ধর্মের মানুষ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দেবীর পুজো দিতে আসেন। এইসময়

তবে ইসলামি শরীয়াতের গন্ডিতে এরুপ ব্যক্তিদেরকে মুসলিম হিসেবে গণ্য করতে সম্মত নন সে দেশের মুফতিগণ।

Share